রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২২শে বৈশাখ ১৪৩১


মুক্তির বার্তা নিয়ে রমজানের আগমন


প্রকাশিত:
২৪ এপ্রিল ২০২০ ০২:১৪

আপডেট:
২৫ এপ্রিল ২০২০ ১০:০০

ফাইল ছবি

আমরা খুব ভয়াবহ একটি সময় পার করছি। আর কঠিন এই সময়ে আমাদের সামনে কড়া নাড়ছে রহমত, মাগফেরাত এবং নাজাতের মাস মাহে রমজান। এবারই মুসলিম উম্মাহ এক অন্যরকম রমজান পালন করবে। মসজিদে নামাজ বন্ধ, জামাতে তারাবিহ বন্ধ, জুমাও ব্যাপকভাবে বন্ধ থাকতে পারে। মহান আল্লাহ আমাদেরকে কেন মসজিদে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না? প্রতিটি  মুসলমানের জন্য জন্য খুব উদ্বেগের বিষয়। নিশ্চয়ই আমরা রাতে বাসায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েছি, একা একা তারবিহ নামাজ পড়ব, তাহাজ্জুদ পড়ছি, সেহরি করবো, সারাদিন রোজা রেখেছি। আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করে ক্ষমা চাওয়ার এখনি সময়। রমজানে ইফতারে দোয়া কবুল হয়। তাই ভয়ংকর এই মহামারি থেকে বাঁচার জন্য, পাঁচওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে পড়ার জন্য, বাকি সময়ের তারাবিহ জামাতে পড়ার জন্য আল্লাহর কাছে বেশি বেশি করে তাওবা চাওয়া।

রোজা মানুষকে পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মুক্তি দেয়, মানুষের কুপ্রবৃত্তি ধুয়ে-মুছে দেয় এবং আত্মাকে দহন করে ঈমানের শাখা-প্রশাখাকে সঞ্জীবিত করে। সর্বোপরি আল্লাহর নৈকট্য ও সন্তুষ্টি লাভ করা যায়। রমজানের প্রথম রাত্রি থেকে শয়তানগুলোকে বন্দী করা হয় এবং অবাধ্য জিনগুলোকে আবদ্ধ রাখা হয়। জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ রাখা হয়, সারা রমজান মাসে তা খোলা হয় না। আর জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়, সারা রমজান মাসে তা বন্ধ করা হয় না। নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘ যে ব্যক্তি এ মাসে একজন রোজাদারকে ইফতার করাবে, তার গুনাহসমূহ মাফ হয়ে যাবে এবং দোজখের আগুন থেকে সে মুক্তি পাবে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে, যেমনি ফরয করা হয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর; যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার।’ (সূরা বাকারা: ১৮৩)। ‘রমজান মাস, যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের হিদায়াতের জন্য।’ (সূরা বাকারা- ১৮৫)।

নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘রোজাদারের জন্য দুটি খুশি। এর একটি হলো তার ইফতারের সময় আর অপরটি আল্লাহর সঙ্গে তার সাক্ষাতের সময়।’ (বুখারি ও মুসলিম)। নবী করিম (সা.) আরও বলেছেন, ‘রোজাদারের মুখের ঘ্রাণ আল্লাহর কাছে মিশকে আম্বরের ঘ্রাণ অপেক্ষা অধিকতর পছন্দনীয়।’ (বুখারি)। বস্তুত রোজা উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য বরকত ও রহমতস্বরূপ। এর মধ্যে আল্লাহ তাআলার নিয়ামত, বরকত তথা মানুষের জন্য মুক্তি, শান্তি ও মঙ্গল নিহিত রয়েছে। তাই পবিত্র কোরআনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ঘোষণা করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে কেউ রমজান মাসে উপস্থিত (জীবিত) থাকে, তারই রোজা পালন করা কর্তব্য।’ (সূরা আল-বাকারা, আয়াত ১৮৫)। মহানবী (সা) বলেছেন, ‘তোমাদের নিকট বরকতময় মাস রমজান এসেছে, যার সিয়াম আল্লাহ তোমাদের উপর ফরয করেছেন।’ (নাসায়ি, হাদিস : ২০৭৯)।

এ মাসে প্রতিটি নেক আমলের জন্য ১০ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত নেকি দেওয়া হয়। তবে রোজার সওয়াব আরও বেশি। কারণ রোজা আল্লাহর জন্য। তাই এর প্রতিফল আল্লাহ তাআলা প্রদান করবেন। তবে শর্ত হলো নিজ অন্তরকে সব ধরনের পাপ-পঙ্কিলতা ও কুটিলতামুক্ত করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যখন রোজা রাখে সে যেন অশ্লীল কথা না বলে এবং অনর্থক শোরগোল না করে। যদি কেউ গালি দেয় অথবা তার সঙ্গে ঝগড়া করে তবে সে যেন বলে, ‘আমি রোজাদার’। (বুখারি ও মুসলিম)

এ মাসের প্রতিটি মুহূর্তের হিফাজত করা একজন বুদ্ধিমান মুমিন বান্দার অবশ্যকর্তব্য। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করে বেশি বেশি নেক আমল করার তাওফিক দান করুন, সেই সঙ্গে এই মাসেরর উছিলায় আমাদেরকে ভয়ংকর মহামারি থেকে মুক্তি দান করুন। আমিন।

 


সম্পর্কিত বিষয়:

রমজান

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top