শাহজালালে যাত্রীর সোনা চুরি করে চাকরি হারালেন কাস্টমস কর্মকর্তা
প্রকাশিত:
২৯ জুলাই ২০২৫ ১৮:০১
আপডেট:
৩০ জুলাই ২০২৫ ০৫:১৮

প্রবাসী এক যাত্রীর সোনার বার চুরি করে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন কাস্টমস বিভাগের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা পিংকু রায়।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সই করা আদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
পিংকু রায় ঢাকা কাস্টম হাউসের আওতাধীন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সি-শিফট ট্রানজিট ও মূল্যবান গুদামে ‘গুদাম কর্মকর্তা’ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কর্মরত থাকাবস্থায় ২০২৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি তিনি প্রবাসী এক যাত্রীর একটি স্বর্ণবার গুদামে জমা না দিয়ে চুরি করে নিয়ে যান।
আদেশে বলা হয়েছে, যাত্রীর স্বর্ণবার আত্মসাতের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পিংকু রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালার বিধি ৩(খ) অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়। তাকে অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী পাঠিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হলে তিনি লিখিত জবাব দাখিল করেন এবং ব্যক্তিগত শুনানীতে অংশগ্রহণের আগ্রহ জানান।
এরপর বিধি ৭(২)(ঘ) অনুযায়ী তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা কর্তৃক দাখিলকৃত প্রতিবেদনে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয় এবং বিধি ৭(৯) অনুসারে চাকরি থেকে বরখাস্ত বা অনুরূপ গুরুদণ্ড দেওয়ার বিষয়ে দ্বিতীয় দফায় কারণ দর্শানো হয়। পিংকু রায় পুনরায় জবাব দেন ও ব্যক্তিগত শুনানীর আবেদন করেন।
পরে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্ম কমিশন (পরামর্শ) প্রবিধানমালার আলোকে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শ গ্রহণ করা হয়। কমিশন তার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিধি ৪(৩)(ঘ) অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি, অর্থাৎ চাকরিচ্যুতির পরামর্শ দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় পিংকু রায়কে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার আদেশ জারি করা হয়েছে।
ঘটনা সম্পর্কে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) সকাল ৬টা ২০ মিনিটে ফ্লাইটযোগে দুবাই থেকে মহিবুর রহমান নামে এক যাত্রী শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছান। এরপর বিমানবন্দর থেকে সব মালামাল নিয়ে গোল্ডবারের শুল্ক পরিশোধ করে (১১৬ গ্রাম সোনার বার) ক্যানোপি ২ নম্বর দিয়ে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে যান যাত্রী। পরে তিনি বুঝতে পারেন— তার সঙ্গে প্যান্টের মধ্যে থাকা সোনার বারটি নেই।
পরবর্তী সময়ে যাত্রী মহিবুর এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে একটি অভিযোগপত্র দেন। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এপিবিএন বিমানবন্দরের সব সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে। এতে দেখা যায়, যাত্রীর সোনার বারটি কাস্টমসের গ্রিন চ্যানেলের স্ক্যানিং মেশিনের সামনে ফ্লোরে পড়েছিল। পরে কাস্টম কর্মকর্তা পিংকু রায় সোনার বারটিতে ইচ্ছাকৃতভাবে পা দিয়ে লাথি মেরে একপাশে সরিয়ে রাখেন। এরপর সুকৌশলে পকেটে তুলে নেন।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: