শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০

Rupali Bank


শিক্ষক সংকট নিরসনে অবিলম্বে পদক্ষেপ নিন


প্রকাশিত:
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৩:৩২

আপডেট:
২৯ মার্চ ২০২৪ ১৪:৫৪

 ছবি : সংগৃহীত

শিক্ষার বিভিন্ন স্তরে শিক্ষক সংকটের বিষয়টি বহুল আলোচিত। এ কারণে শিক্ষা কার্যক্রম খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানা যায়, সারা দেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৯০ হাজার পদে কোনো শিক্ষক নেই।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের এসব স্কুল, মাদ্রাসা, কারিগরি প্রতিষ্ঠান ও কলেজের প্রতিটিতে গড়ে তিনজন শিক্ষকের পদ শূন্য। শিক্ষকের ঘাটতি থাকায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান ভীষণভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। জানা গেছে, ২০১৬ সালের পর এনটিআরসিএ কর্তৃক বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৮০ হাজার ৬৬৮ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরও বিপুলসংখ্যক শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

নানা কারণে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ধীরগতি লক্ষ করা যাচ্ছে। ইতোমধ্যে এ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কিছু জটিলতাও দেখা দিয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এ নিয়োগ প্রক্রিয়াকে গতিশীল করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষক নিয়োগের প্রসঙ্গ এলেই অনেকে বলে থাকেন, দেশে হাজার হাজার চাকরিপ্রত্যাশীর বিপরীতে শিক্ষক সংকটের বিষয়টি মেনে নেওয়া যায় না। আমরা মনে করি, চাকরিপ্রত্যাশী প্রত্যেকেরই যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থান হওয়া উচিত। তবে অযোগ্য কেউ যাতে কোনো পর্যায়েই শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ না পান, সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে।

এক সময় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হতো। কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ উঠলে ওই পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগদান প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হয়। বর্তমানে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যে প্রক্রিয়ায় শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়, তাতে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। এ পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও যাতে মেধাবীরা যোগদান করতে আগ্রহী হন, সেজন্য আকর্ষণীয় বেতন-ভাতা প্রদান করা উচিত।

ভিত্তি দুর্বল হলে পুরো ইমারতটি দুর্বল হবে, এটাই স্বাভাবিক। দেশে শিক্ষার ভিত্তি যে দুর্বল তা বহুল আলোচিত। দুঃখজনক হলো, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষায় বিদ্যমান সমস্যা নিরসনে বড় ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। আমরা যদি শিক্ষা খাতে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পেতে চাই, তাহলে জরুরি ভিত্তিতে সব স্তরের শিক্ষক সংকট দূর করতে হবে এবং মাধ্যমিক স্তরের, বিশেষত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকদের দুর্বলতা কাটাতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। শহরাঞ্চলের তুলনায় গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে। দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে প্রযুক্তি শিক্ষায় বিশেষভাবে জোর দিতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা যাতে তাত্ত্বিক শিক্ষার পাশাপাশি ব্যবহারিক শিক্ষার পর্যাপ্ত সুযোগ পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। এসব বিষয় মাথায় রেখে সব পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের সংকট দূর করতে হবে।

বস্তুত শিক্ষার ক্ষেত্রে দেশের সার্বিক অবস্থা যে ভালো নয়, তা বৈশ্বিক জ্ঞান সূচকের ফল থেকেই স্পষ্ট। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত বৈশ্বিক জ্ঞান সূচকে শীর্ষ পর্যায়ে থাকা। কিন্তু দেশে বিভিন্ন স্তরে শিক্ষার যে পরিবেশ বিরাজমান, তাতে শীর্ষ পর্যায়ে থাকা সম্ভব নয়। মোট কথা, খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চললে শিক্ষার ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top