শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১

Rupali Bank


জঙ্গলে পাওয়া হারানো ফোনে দেখা গেল বানরের সেলফি


প্রকাশিত:
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:০০

আপডেট:
১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:১২

ছবি-সংগৃহীত

মালয়েশিয়ান এক ব্যক্তি বলছেন তার হারানো ফোন জঙ্গল থেকে খুঁজে পাবার পর সেখানে তিনি এক বানরের সেলফি এবং বানরের ভিডিও ছবি দেখে রীতিমত বিস্মিত। এই ফুটেজ সামাজিক মাধ্যমে এখন ভাইরাল।

তার মোবাইল ফোনটি হারানোর একদিন পর সেটি বাসার পেছনের জ্ঙ্গল থেকে তিনি খুঁজে পান এবং তার ফোনে তোলা ভিডিও ফুটেজে দেখেন একটি বানর - দেখে মনে হচ্ছে -তার ফোনটি খাবার চেষ্টা করছে।

ফোনের মালিক জাকরিজ রদজি এই ছবি টু্‌ইটারে পোস্ট করলে সামাজিক মাধ্যমে তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

ছাত্র মি. জাকরিজ ভেবেছিলেন তিনি যখন ঘুমিয়েছিলেন তখন তার ফোন কেউ চুরি করে নিয়ে গেছে। কিন্তু কীভাবে তার ফোন চুরি হয়েছিল তা তিনি সঠিকভাবে জানেন না।

তার ফোনে বানরের ছবি এবং ভিডিও ঠিক কীভাবে তোলা হয়েছিল তা যাচাই করে দেখাও সম্ভব হয়নি।

বিশ বছর বয়সী মি. জাকরিজ বিবিসিকে বলেছেন শনিবার সকালে ১১টা নাগাদ ঘুম থেকে উঠে তিনি দেখেন তার স্মার্টফোনটা নেই।

"কোন চোর-ডাকাত ঢোকার কোন চিহ্ণ ছিল না। আমার খালি মনে হয়েছিল কেউ যাদুটাদু করল কিনা,'' মালয়েশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় জোহর রাজ্যের বাতু পাহাত-এ কম্প্যুটার সায়েন্সের ফাইনাল বর্ষের ছাত্র মি. জাকরিজ জানান।

এর কয়েক ঘন্টা পর, বিবিসির সাথে শেয়ার করা একটি ভিডিওতে দেখা যায় ঐ একই দিনে স্থানীয় সময় দুপুর দুটো এক মিনিটে তোলা একটি বানরের ছবি। বানর ফোনটি খাবার চেষ্টা করছে। বানরটিকে দেখা যায় জঙ্গলে গাছপাতার মধ্যে থেকে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছে। পেছনে শোনা যায় পাখির ডাক।

তার ফোনে দেখা যায় বানরের আরও কিছু ছবি, সেইসাথে গাছপালা এবং পাতার ছবি।

মি. জাকরিজ বলেন রোববার দুপুর পর্যন্ত তিনি তার ফোনের কোন হদিশ পাননি। রোববার দুপুরে তার বাবা তাদের বাসার বাইরে একটি বানর দেখতে পান।

তিনি মাঝে মাঝেই তার ফোন বাজাচ্ছিলেন। এসময় তিনি আবার তার ফোনে রিং করলে সেটি পেছনের জঙ্গল এলাকায় বাজছে বলে মনে হয়। তাদের বাসার পেছনের বাগান থেকে কয়েক পা দূরেই জঙ্গল। তিনি বলেন একটা পাম গাছের নিচে পাতার ভেতর তার ফোন কাদামাখা অবস্থায় পড়ে আছে।

তার চাচা নাকি তাকে মজা করে বলেছিলেন দেখো ফোনে চোরের কোন ছবিটবি আছে কিনা।

ফোন থেকে কাদা পরিষ্কার করার পর তিনি কৌতূহলবশতই ছবির গ্যালারি খুলে দেখেন ''সেখানে ভর্তি বানরের ছবি''।

বিশ্বের কোথাও কোথাও শোনা যায় শহরে বা শহরের আশেপাশে যেসব বানর থাকে, তারা মানুষের জিনিসপত্র নিয়ে যায়। কিন্তু মি. জাকরিজ বলেছেন তিনি যেখানে থাকেন সেখানে তাদের পাড়া থেকে কখনও বানরের কোন কিছু চুরির করার ইতিহাস নেই।

তিনি সন্দেহ করছেন তার ভাইয়ের শোবার ঘরের খোলা জানালা দিয়ে বানরটা সম্ভবত তাদের বাসায় ঢুকে থাকতে পারে।

''শতাব্দীতে হয়ত এমন ঘটনা একবারই ঘটে,'' রোববার এক টুইট বার্তায় লেখেন মি. জাকরিজ। তার ওই টুইট ব্যাপকভাবে শেয়ার হয়েছে এবং তা কয়েক হাজার লাইক পেয়েছে। এই টুইট থেকে স্থানীয় গণমাধ্যম বানরের ছবি তোলার ভিডিও নিয়ে খবরও করেছে।

বানরের সেলফি তোলার খবর যে এই প্রথম শিরোনাম হয়েছে তা নয়। ২০১৭ সালে একটি ম্যাকাও প্রজাতির বানরের একটি ছবি নিয়ে ব্রিটিশ একজন আলোকচিত্রী পশু অধিকার আন্দোলনকারীদের সাথে দুই বছরের আইনি লড়াইয়ে জড়িয়েছিলেন।

২০১১ সালে ইন্দোনেশিয়ার জঙ্গলে নারুতু নামে ম্যাকাও প্রজাতির এক বানর ওই আলোকচিত্রী ডেভিড স্ল্যাটারের ব্যক্তিগত ক্যামেরা তুলে নিয়ে যায় এবং ওই ক্যামেরায় পরপর বেশ কয়েকটি ''সেলফি'' তোলে।

মি. স্ল্যাটার যুক্তি দেন যে যেহেতু ক্যামেরা তার, তাই ওই ছবিগুলোর স্বত্বও তার। ওই ছবিগুলো ব্যাপকভাবে শেয়ার করা হয়েছিল। কিন্তু পশু অধিকার সংস্থা পেটা বলে যে, ক্যামেরায় ছবি তোলার কৃতিত্ব যেহেতু বানরটির, তাই ওই ছবিগুলো থেকে অর্জিত কপিরাইটের অর্থ পশুদের কল্যাণে ব্যবহার করা উচিত।

আমেরিকারএকটি আদালত রায় দেয় যে স্বত্বাধিকারের বিষয়টি একজন বানরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না এবং পেটার করা মামলা খারিজ হয়ে যায়। কিন্তু মি. স্ল্যাটার ওই ছবিগুলো থেকে ভবিষ্যতে অর্জিত অর্থের ২৫% তিনি ইন্দোনেশিয়ার ম্যাকাও এবং অন্যান্য প্রজাতির বানরের কল্যাণে দান করতে রাজি হয়েছিলেন।

সূত্র: বিবিসি


সম্পর্কিত বিষয়:

মালয়েশিয়া

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top