সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১

Rupali Bank

ইউটিউব তারকা ৬০ বছরের বৃদ্ধা


প্রকাশিত:
১৬ মার্চ ২০২২ ০০:০৮

আপডেট:
১৬ মার্চ ২০২২ ০০:১১

 ছবি : সংগৃহীত

কোনো কাজেই বয়স বাধা হতে পারে না। তার প্রমাণ আবারও দিলেন ৬০ বছর বয়সী এই বৃদ্ধা। জীবনে শুধু যে সাফল্য পেয়েছেন তাই ই নয়। রীতিমতো তারকা বনে গেছেন তিন। মিলকুরি গঙ্গাভা ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবের এখন জনপ্রিয় মুখ।

ইউটিউব চ্যানেল মাই ভিলেজ শো (MVS) এ সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ২৪ লাখ ছাড়িয়েছে। আঞ্চলিক ভাষায় নানা রকম ভিডিও দিয়ে মন জয় করেছেন লাখ লাখ মানুষের। এমনকি দক্ষিণী তারকা কাজল আগরওয়াল ও বিজয় দেভারকোন্ডারেরও বেশ পছন্দ গঙ্গাভাকে।

দক্ষিণ ভারতের তেলঙ্গানার রাজ্যের লাম্বাদিপলির ছোট্ট গ্রামে তিনি বাস করেন। গঙ্গাভা মিলকুরির মেয়ে জামাই চলচ্চিত্র নির্মাতা শ্রীকান্ত শ্রীরাম ২০১২ সালে চ্যানেলটি খোলেন। নয় জনের একটি দল ওই চ্যানেলের জন্য গ্রামীণ সংস্কৃতি, গ্রামীণ পারিবারিক জীবন নিয়ে ভিডিও তৈরি শুরু করেন।

 ছবি : সংগৃহীত

শ্রীরামের শো শুরুর আগে ইউটিউব কী সে সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই ছিল না। শ্রীরাম যখন গ্রামের গাছপালা, প্রকৃতির ভিডিও করতো তখন তিনি ভাবতেন ছেলেটি এসব করে সময় নষ্ট করছে কেন? গঙ্গাভা জীবনে কখনো ভাবতেই পারেননি যে একদিন তিনিও তার ভিডিওতে থাকবে।

গাঙ্গাভা ২০১৭ সালে জামাইয়ের ভিডিও চিত্রে প্রথম অতিথি শিল্পী হিসেবে উপস্থিত হন। গঙ্গাভা ক্যামেরার সামনে খুবই সাবলীল ছিলেন যা দর্শকের মন ছুঁয়েছে। তবে লেখাপড়া না জানায় তাকে স্ক্রিপ্ট বুঝিয়ে দিতে হয়।

চ্যানেলটির ভিডিওগুলো তেলেগু ভাষায় তৈরি করা হয়, যা গাঙ্গাভার মাতৃভাষা ও তেলেঙ্গানার দাপ্তরিক ভাষা। এ কারণে চ্যানেলটি সফলতা পেয়েছে মনে করেন তু এঙ্গুইন। তার মতে, হিন্দি ও ইংরেজির পরিবর্তে আঞ্চলিক ভাষায় ভিডিও দেয়ায় অনেকের চ্যানেলটি নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে।

ইউটিউব তারকা হওয়ার আগে গঙ্গাভার জীবন বেশ কষ্টের ছিল। প্রাথমিকের গণ্ডি পেরেনোর আগেই তিনি স্কুল ছাড়েন। পরিবার চালাতে খামারে কাজ করতেন। কখনোবা সিগারেট বানিয়ে পরিবারকে সাহায্য করতেন। স্বামী ছিলেন মাদকাসক্ত। এ কারণে দুই মেয়ে আর এক ছেলেকে বড় করতে কঠোর পরিশ্রম করতে হয় গঙ্গাভাকে। গঙ্গাভা মিলকুরির নাতি-নাতনির সংখ্যা ৮।

তবে ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হওয়ার পর তার জীবনে পরিবর্তন আসে। তার ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবারও বাড়ছে। ইউটিউবের এশিয়া অঞ্চলের মুখপাত্র তু এঙ্গুইন জানান, মাসে অন্তত ২৬কোটি ৫০ লাখ মানুষ গাঙ্গাভার চ্যানেলের ভিডিও দেখেন। তার চ্যানেলে অনেক ভাষার সংমিশ্রণ পাওয়া যায়। এ কারণে অনেকে চ্যানেলটি পছন্দ করছেন।

গঙ্গাভার জনপ্রিয়তা এখন ইউটিউব ছাড়িয়ে ইনস্ট্রাগ্রামেও। সেখানে তার ফলোয়ারে ৪১ হাজার। ২০১৯ সালে আইস্মার্ট শঙ্কর ও মল্লেশাম নামের তেলেগুর দুটি সিনোমাতেও তাকে অভিনয় করতে দেখা গেছে।

গাঙ্গাভা নিজের এই খ্যাতি দারুণ উপভোগ করেন। গ্রামে ঘুরতে আসা পর্যটক ও ভক্তদের সঙ্গে ছবি তুলে তিনি বেশ আনন্দ পান। তিনি বলেন, 'ক্যামেরার সামনে অভিনয় করতে আমার ভালো লাগে। বিভিন্ন জায়গার মানুষ আমার অভিনয় দেখছে জেনেও ভালো লাগে।'

বিজ্ঞাপন থেকে চ্যানেলেটির যে আয় হয় তার কিছু অংশ গাঙ্গাভা পান। তিনি আশা করছেন এই টাকা দিয়ে তার সব ঋণ শোধ হবে। একদিন এই আয় দিয়ে একটি নতুন বাড়ি করবেন।

তার মতে, ইউটিউব অনেকের জীবন বদলে দিচ্ছে। কেউ যদি ভালোভাবে এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করতে পারে তাহলে একদিন তারাও তারকা কিংবা সাবলম্বী হয়ে উঠতে পারবেন।

এসএন/তাজা/২০২২

সূত্র: দ্য বেটার ইন্ডিয়া


সম্পর্কিত বিষয়:

ইউটিউব ভারত

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top