বিসিবির অন্তর্বর্তী সভাপতি হতে যাচ্ছেন বুলবুল!
প্রকাশিত:
২৯ মে ২০২৫ ১৪:৫৯
আপডেট:
৩০ মে ২০২৫ ২০:৫৪

বিসিবি সভাপতি পদে ফারুক আহমেদের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে গেছে। গতকাল (বুধবার) রাতে ফারুককে ডেকে নিয়ে পরিবর্তনের কথা জানিয়ে দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। পদত্যাগ করা নিয়ে ফারুক কয়েক দিন সময় চেয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে, বিসিবির দায়িত্ব নিতে পারেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান আমিনুল ইসলাম বুলবুল। ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব পেয়ে বিসিবিতে আসতে রাজি হয়েছেন তিনি। সব কিছু ঠিক থাকলে এনএসসির কোটায় প্রথমে পরিচালক ও পরে বিসিবি সভাপতির চেয়ারে বসতে পারেন তিনি।
যদিও দীর্ঘ মেয়াদের জন্য বিসিবির দায়িত্ব নেওয়ার ইচ্ছা নেই বলে জানিয়েছেন আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘১০-১৫ দিন আগে আমার সঙ্গে উপদেষ্টার (ক্রীড়া) পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল। তারা আমাকে কোনো একটা ভূমিকায় কিছু সময়ের জন্য বাংলাদেশের ক্রিকেটে চাচ্ছেন। আমি তাতে রাজি হয়েছি।’
গত কিছু দিন ধরেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষ পদে পরিবর্তনের গুঞ্জন চলছে। গত বছরের আগস্টে দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর নাজমুল হাসান পাপনের জায়গায় নতুন করে সভাপতির চেয়ারে বসেন ফারুক আহমেদ। যদিও এরই মধ্যে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। এর মধ্যেই গতকাল (বুধবার) রাতে ফারুককে ডেকে নিয়ে নিজেদের ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক নিয়ে বিসিবি সভাপতি বলছেন, ‘উপদেষ্টা আমাকে পদত্যাগ করতে বলেননি। শুধু বলেছেন, আমাকে আর তারা ‘কন্টিনিউ’ করাতে চান না।’ এই অবস্থায় তিনি (পদত্যাগ) ভাবছেন বলেও জানালেন। বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘এখনই এ বিষয়ে কিছু বলতে চাচ্ছি না। দেখা যাক, কী হয়।’
বর্তমানে আইসিসির এশিয়া অঞ্চলের ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আমিনুল। এ ছাড়া আইসিসির হাইপারফরম্যান্স কার্যক্রম এবং ট্রেনিং এডুকেশনেরও প্রধান তিনি। এই মুহূর্তে দেশে আছেন বলেও জানা গেছে। যদিও গতকালকের বৈঠকে তিনি ছিলেন না বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া বিসিবি সভাপতি হওয়ার প্রস্তাবও পাননি বলে জানালেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে বিসিবি সভাপতির দায়িত্ব নিতে এখনো বলা হয়নি। ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে বোর্ড সভাপতির সঙ্গে গতকালের সভায়ও আমি ছিলাম না।
বুলবুল বলেন, ‘আমার বিসিবিতে লম্বা সময় ধরে থাকার ইচ্ছা নেই। আমাকে হয়তো আবেগ প্রবণ ভাবতে পারেন, তবে একটা দেশের যখন সৈনিক দরকার হয়, ওই সৈনিক কিন্তু তার পারিশ্রমিক বা নিজের স্বার্থ দেখে না। কাজটাই তার কাছে আগে। আমার চিন্তাও সেরকম। বিসিবির যে কোনো দায়িত্ব নিতে আমি প্রস্তুত। দেখা যাক কি হয়।’
প্রসঙ্গত, আমিনুল ইসলাম বুলবুল আইসিসিতে চাকরি করায় তিনি বিসিবির নির্বাচনে কখনোই সম্পৃক্ত ছিলেন না। ফলে তাকে বিসিবিতে আনতে হলে কাউন্সিলর পরিচালক সবই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে করতে হবে। ফারুক জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক হিসেবে কাউন্সিলর থাকলেও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ তাকে পরিচালক মনোনীত করেছে। এরপর পরিচালকরা সভাপতি নির্বাচিত করেছে।
এটা সরকারের হস্তক্ষেপ হলেও বিসিবির গঠনতন্ত্রে অনুমোদিত এবং সেটা আইসিসি থেকেও স্বীকৃত এটা নিয়ে প্রশ্ন তোলার সেই অর্থে তেমন সুযোগ নেই। তবে নতুন একটি আলোচনা হতে পারে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এক মেয়াদে কতবার পরিচালক পরিবর্তন করতে পারে। ফারুকের পরিবর্তে বুলবুল আসলে সেক্ষেত্রে হবে তৃতীয় প্রয়োগ।
প্রথমে সাজ্জাদুল আলম ববি ও জালাল ইউনূস ছিলেন এনএসসি পরিচালক এরপর হলেন ফারুক ও ফাহিম। এখন ফারুকের বদলে বুলবুল আসলে তৃতীয় রদবদল এই কোটায়। গঠনতন্ত্রে অবশ্য এ নিয়ে সুস্পষ্ট কিছু নেই। আগামী ৩১ মে শনিবার বিসিবির বোর্ড মিটিং রয়েছে। সেখানে সভাপতি ইস্যুতে বিস্তারিত আভাস মিলতে পারে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: