বুধবার, ১৮ই জুন ২০২৫, ৪ঠা আষাঢ় ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


মহানবী (সা.) এর জীবদ্দশায় যে পরাশক্তির সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়েছিল ‘ইরান’


প্রকাশিত:
১৮ জুন ২০২৫ ১৫:২২

আপডেট:
১৮ জুন ২০২৫ ২১:২৩

ছবি সংগৃহীত

বর্তমান ইরানের প্রাচীন নাম পারস্য। ১৯৩৫ সাল পর্যন্তও বহির্বিশ্বে ইরান ‘পারস্য’ নামে পরিচিত ছিল। প্রাচীন পারস্য সাম্রাজ্য আধুনিক পারস্য বা বর্তমানের ইরান এর থেকেও অনেক বিস্তৃত ছিল।

এক সময় পারসিকরা মধ্যপ্রাচ্যর বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করত— তারা খ্রিস্টপূর্ব কয়েক শতাব্দী ধরে প্রাচীন গ্রীসের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল এবং পরে রোমান সাম্রাজ্যের প্রতিপক্ষ ছিল।

পারসিকরা মিশর শাসন করেছে একসময়— পাশাপাশি ককেশাস এবং মধ্য এশিয়ার বড় অংশ এবং বর্তমানে পাকিস্তান এবং ভারতের অংশও শাসন করেছিল। তাদের সাম্রাজ্যের শীর্ষ সময়ে, বিশ্বের ৪০ শতাংশেরও বেশি মানুষ পারসিক শাসনের অধীনে ছিল, যা অন্য যেকোনো সাম্রাজ্যের চেয়ে বেশি।

মহানবী (সা.) এর জীবদ্দশায় তৎকালীন চিরপ্রতিদ্বন্দী দুই পরাশক্তি ছিল পারস্য (বর্তমানের ইরান) ও রোম। উভয় পক্ষই ছিল কাফির। পারসিকরা শিরক ও প্রতিমা পূজা করতো। রোমকরা ছিল খ্রিস্টান আহলে কিতাব। এরা ছিল মুসলমানদের অপেক্ষাকৃত নিকটবর্তী। কারণ, ধর্মের অনেক মূলনীতি-যথা পরকালে বিশ্বাস, রিসালাত ও ওহীতে বিশ্বাস ইত্যাদিতে তারা মুসলমানদের সাথে অভিন্ন মত পোষণ করত।

মহানবী (সা.) এর জীবদ্দশায় ইসলাম আত্মপ্রকাশের প্রাথমিক দিকে রোম ও পারস্যের মধ্যে একটি যুদ্ধ সংঘটিত হয়। শামদেশের আফরুআত ও বুসরার মধ্যস্থলে যুদ্ধটি হয়েছিল।

এই যুদ্ধের সময় মক্কার মুশরিকরা পারসিকদের বিজয় কামনা করেছিল। কারণ, তাদের মতো পারসিকরাও শিরক ও প্রতিমা পূজা করতো। অপরপক্ষে মুসলমানদের আন্তরিক বাসনা ছিল রোমকরা বিজয়ী হোক। কারণ, ধর্ম ও মাযহাবের দিক দিয়ে তারা ইসলামের নিকটবর্তী ছিল। মুসলমানরা আল্লাহকে বিশ্বাস করতো, তারাও আল্লাহকে বিশ্বাস করতো।

কিন্তু সেই যুদ্ধে পারসিকরা জয়লাভ করে। এমনকি তারা কনস্টান্টিনোপলও অধিকার করে নেয় এবং সেখানে উপাসনার জন্য একটি অগ্নিকুণ্ড নির্মাণ করে। এটা ছিল পারস্য সম্রাট পারভেজের সর্বশেষ বিজয়। এরপর তার পতন শুরু হয় এবং অবশেষে মুসলমানদের হাতে সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।

এই ঘটনায় মক্কার মুশরিকরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল এবং মুসলমানদেরকে লজ্জা দিতে লাগল যে, তোমরা যাদের সমর্থন করতে তারা হেরে গেছে। তারা আরও বলে বেড়াতে লাগলো যে, আহলে-কিতাব রোমকরা যেমন পারসিকদের মুকাবিলায় পরাজয় বরণ করেছে, তেমনি আমাদের মুকাবিলায় তোমরাও একদিন পরাজিত হবে। এতে মুসলমানরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত হয়।

আল্লাহ তায়ালা সূরা রূমের প্রাথমিক আয়াতগুলোতে ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেন যে, কয়েক বছর পরেই রোমকরা পারসিকদের বিরুদ্ধে বিজয়ী হবে।

হজরত আবূ বকর সিদ্দীক (রা.) এই আয়াত শুনার পর মক্কার চতুষ্পার্শ্বে এবং মুশরিকদের সমাবেশ ও বাজারে উপস্থিত হয়ে ঘোষণা করলেন, তোমাদের এতো আনন্দিত হওয়ার কোন কারণ নেই। কয়েক বছরের মধ্যে রোমকরা পারসিকদের বিরুদ্ধে জয়লাভ করবে।

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে এরশাদ করেন, ‘আলিফ-লাম-মীম,রোমানরা পরাজিত হয়েছে, নিকটবর্তী এলাকায় এবং তারা তাদের পরাজয়ের পর অতিসত্বর বিজয়ী হবে, কয়েক বছরের মধ্যে। অগ্র-পশ্চাতের কাজ আল্লাহর হাতেই। সেদিন মুমিনগণ আনন্দিত হবে। আল্লাহর সাহায্যে। তিনি যাকে ইচ্ছা সাহায্য করেন এবং তিনি পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু।’ (সুরা রুম, আয়াত : ১-৫)


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top