বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১


নামাজে আল্লাহ যেভাবে বান্দার সঙ্গে কথা বলেন


প্রকাশিত:
৩০ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:৩৭

আপডেট:
২ মে ২০২৪ ১৮:১৬

ফাইল ছবি

একজন ঈমানদারের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো নামাজ। ‘যার মধ্যে নামাজ নেই, তার ভেতর দ্বীনের কোনো হিস্যা নেই।’ (মুসনাদে বাজ্জার: ৮৫৩৯) নামাজে বান্দা আল্লাহ তাআলার পাশে থাকেন, চুপিসারে প্রভুর সঙ্গে কথা বলেন। আল্লাহর রাসুলের (স.) ভাষায়- ‘মুমিন যখন নামাজে থাকে সে তার প্রতিপালকের সঙ্গে নিভৃতে কথা বলে।’ (সহিহ বুখারি: ৪১৩)

বান্দা যখন নামাজ শুরু করে, নামাজে মনোযোগী হয়, তখন আল্লাহ তার প্রতিটি কথা শোনেন, প্রতিটি কথার প্রতিউত্তর করেন। বান্দা যা চান, তিনি কবুল করেন। সে কথা আল্লাহ তাআলা তাঁর রাসুলের মাধ্যমে হাদিসে কুদসিতে আমাদের জানিয়েছেন।

রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি নামাজকে (সুরা ফাতেহা) আমার ও আমার বান্দার মাঝে আধাআধি ভাগ করে নিয়েছি; অর্ধেক আমার জন্য এবং অর্ধেক আমার বান্দার জন্য। আর আমার বান্দা তা-ই পায়, যা সে প্রার্থনা করে।’ সুতরাং বান্দা যখন বলে, ‘আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আ-লামিন।’ তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমার বান্দা আমার প্রশংসা করল।’ অতঃপর বান্দা যখন বলে, ‘আররাহমা-নির রাহীম।’ তখন আল্লাহ বলেন, ‘বান্দা আমার স্তুতি বর্ণনা করল।’ আবার বান্দা যখন বলে, ‘মা-লিকি ইয়াউমিদ্দ্বীন।’ তখন আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘বান্দা আমার গৌরব বর্ণনা করল।’ বান্দা যখন বলে, ‘ইয়্যা-কা না’বুদু অইয়্যা-কা নাসতাঈন।’ তখন আল্লাহ বলেন, ‘এটা আমার ও আমার বান্দার মাঝে। আর আমার বান্দা তা-ই পায়, যা সে প্রার্থনা করে।’

অতঃপর বান্দা যখন বলে, ‘ইহদিনাস সিরা-ত্বাল মুস্তাকীম, সিরা-ত্বাল্লাযীনা আনআমতা আলাইহিম, গাইরিল মাগদূবি আলাইহিম অলাদ দ-ল্লীন।’ তখন আল্লাহ বলেন, ‘এসব কিছু আমার বান্দার জন্য। আর আমার বান্দা যা চায়, তাই পাবে।’ (মুসলিম: ৩৯৫, আবু দাউদ, তিরমিজি, মুসনাদ আহমদ, মেশকাত: ৮২৩)

সুরা ফাতেহা যখন শেষ হয় তখন মুসল্লি আমিন বলে। ফেরেশতারাও তখন আমিন বলেন। বান্দার আমিন ও ফেরেশতার আমিন মিলে গেলে আল্লাহ বান্দার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (স.) বলেছেন- যখন ইমাম غَيْرِ الْمَغْضُوبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّالِّينَ বলেন তখন তোমরাও আমিন বলো। কেননা তখন ফেরেশতারাও আমিন বলে। ইমামও আমিন বলে। আর যার আমিন বলা ফেরেশতাদের আমিন বলার সাথে মিলবে তার পূর্বের সব পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (মুসনাদে আহমদ: ৭১৮৭; সহিহ বুখারি: ৭৮০)

সুবহানাল্লাহ! আল্লাহর সঙ্গে বান্দার কথোপকোথন কতইনা সুন্দর! আল্লাহ তাআলা কতইনা ক্ষমাশীল! যে কথা ভাবলেই হৃদয় আন্দোলিত হয়। আমরা কীভাবে পারি মহান আল্লাহর নাফরমানি করতে! যিনি সবসময় আমাদের সঙ্গে থাকেন, আমাদের সঙ্গে কথা বলেন, বিভিন্ন উপায়ে আমাদের ক্ষমা করেন, সেই প্রভুর নাফরমানি কতইনা বেমানান, কতইনা বাজে কাজ। অথচ এরপরও তিনি বারংবার একই কথাই বলছেন, তোমরা চাও, আমি দেব। পবিত্র কোরআনের ভাষায়—‘তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। কিন্তু যারা আমার ইবাদত সম্বন্ধে অহংকার করে, তারা নিশ্চয় লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (সুরা মুমিন: ৬০)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাঁর নাফরমানি থেকে দূরে থাকার তাওফিক দান করুন। নামাজ যথাযথভাবে নিয়মিত পড়ার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ক্ষমা করুন। আমিন।


সম্পর্কিত বিষয়:

ইবাদত নামাজ

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top