সদিচ্ছা না থাকলে উপদেষ্টার চেয়ার ছেড়ে দিন: রিফাত রশীদ
প্রকাশিত:
৬ জুলাই ২০২৫ ১০:৪১
আপডেট:
৬ জুলাই ২০২৫ ১৯:৫২

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা নিয়ে সরকারি হাসপাতাল ব্যবস্থাপনার গড়িমসি এবং উপদেষ্টা পরিষদের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশীদ। তিনি বলেন, ‘আহতদের চিকিৎসায় গাফিলতি রয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের কারও যদি সদিচ্ছার ঘাটতি থাকে, তাদের বলব—উপদেষ্টার চেয়ার ছেড়ে দিন। যারা আহত-নিহতদের জন্য দরদ দেখাতে পারেন না, তাদের সেখানে থাকার প্রয়োজন নেই।’
শনিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) পরিদর্শন শেষে এসব কথা বলেন তিনি। পরে কেন্দ্রীয় নেতারা মিরপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গুরুতর আহত কয়েকটি পরিবারের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
রিফাত রশীদ বলেন, ‘যাদের রক্তের ম্যান্ডেটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে, আজ তারাই সবচেয়ে বেশি অবহেলার শিকার। দীর্ঘদিন ধরে আহতরা পরিপূর্ণ চিকিৎসার দাবিতে আন্দোলন করছে। অথচ চিকিৎসা হচ্ছে সংবিধানস্বীকৃত মৌলিক অধিকার।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে অভিযোগ করছেন, আহতদের মধ্যে সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। অথচ জুলাইয়ের সময় তাদের মধ্যে কোনো বিভাজন ছিল না। এই বিভক্তির সুযোগ তৈরি করেছে ইন্টারিম সরকার। আহতদের যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হলে তারা নিজেদের মধ্যে বিভক্ত হতো না।’
তার অভিযোগ, ‘আহতদের চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে একটি রাজনৈতিক দলের চিকিৎসক গোষ্ঠীর কারণে। তারা আহতদের হাসপাতালে রাখতে চাইছে না, কারণ এই তরুণরা তাদের ব্যক্তিস্বার্থের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থার সমালোচনা করে রিফাত বলেন, ‘যারা আহতদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তারা কয়জন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে? এখানে চিকিৎসা নিতে এসে মানসিকভাবে সুস্থ থাকা কঠিন। আহতরা তো এখনো সেই সময়ের ট্রমা কাটিয়ে উঠতে পারেনি, বরং নিত্যদিন লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছে।’
উপদেষ্টা পরিষদের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, ‘এত মানবাধিকারকর্মী থাকার পরও আহতদের কাউন্সেলিংয়ের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। বারবার আশ্বাস দিয়ে সময়ক্ষেপণ করা হয়েছে। যখন তারা দেখেছে আশ্বাসের বাস্তবায়ন নেই, তখনই তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে। এর দায় সরকার, গণমাধ্যম, এমনকি আমরা কেউ এড়াতে পারি না।’
সভায় উপস্থিত সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হাসান ইমাম বলেন, ‘আহতদের দেখতে এসে আমরা কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছি। একজন বাবা ঈদের আগে বাড়ি গিয়ে আজ আবার হাসপাতালে এসেছেন, কিন্তু তাঁকে ভর্তি না করে চার মাস পর আসতে বলা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আহতদের চিকিৎসা নিয়ে সিন্ডিকেট ও কোরামবাজি চলছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তা মেনে নেবে না। যাদের উন্নত চিকিৎসা দরকার, তাদের বিদেশে পাঠাতে হবে। যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি আছেন, তাঁদের ভালো সেবা ও উন্নতমানের খাবার নিশ্চিত করতে হবে।’
প্রোগ্রাম শেষে সংগঠনের নেতাকর্মীরা ‘চিকিৎসা নিয়ে গড়িমসি চলবে না, চলবে না’, ‘চিকিৎসা নিয়ে সিন্ডিকেট চলবে না, চলবে না’—এমন স্লোগান দেন।
এসএন /সীমা
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: