বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ১৮ই বৈশাখ ১৪৩১


দুদকের নজরদারিতে স্বাস্থ্যখাতের অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী


প্রকাশিত:
৪ অক্টোবর ২০২০ ০০:১৯

আপডেট:
৪ অক্টোবর ২০২০ ০৩:৪২

ফাইল ছবি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য শিক্ষা শাখার বরখাস্তকৃত হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেনের বেতন ছিল মাসে ৩০ হাজার টাকা। সেই আবজালের ঢাকা শহরে নিজের ও স্ত্রীর নামে পাঁচটি বাড়ির পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতেও ছিল আরেক বাড়ি।

দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সম্পদের পরিমাণ হাজার কোটি টাকার ওপরে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়ি চালক আবদুল মালেকের দুইটি বাড়িসহ সম্পদের পরিমাণ শত কোটি টাকার ওপরে।

স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে এই দুই কর্মচারীর সম্পদের হিসাবে। যার কারণে এবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের অর্ধশতাধিক দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর ওপর নজর রাখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ইতোমধ্যেই তাদের সম্পদের হিসাব চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে সংস্থাটি।

দুদক ইতোমধ্যেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের ৪৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছে সম্পদের হিসাব চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। শুধুমাত্র কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নয়, তাদের পরিবারের সদস্যদের সম্পদের হিসাবও জানতে চেয়েছে দুদক।

দুদক সূত্র জানায়, যারা নজরদারিতে রয়েছেন প্রাথমিক অনুসন্ধানে তাদের প্রত্যেকেরই জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে। নিজেদের নামের পাশাপাশি স্ত্রী, সন্তান, ভাই-বোনদের নামেও অবৈধ সম্পদ গড়ে তুলেছেন তারা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর অবৈধ সম্পদের খোঁজে রয়েছে দুদক তাদের মধ্যে রয়েছেন- স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মহাখালী অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (প্রশাসন-২) কবির আহমেদ চৌধুরী ও মো. হুমায়ুন কবীর, পরিচালক কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ফারুক হাসান, প্রধান সহকারী মো. আশরাফুল ইসলাম, মো. সাজেদুল করিম, উচ্চমান সহকারী মো. তৈয়বুর রহমান, উচ্চমান সহকারী মো. সাইফুল ইসলাম, গাড়িচালক মো. শাহজাহান, স্টোর ম্যানেজার ইপিআই হেলাল তরফদার, চিকিত্সা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন শাখার উচ্চমান সহকারী রেজাউল ইসলাম, মহাপরিচালক দপ্তরের সহকারী প্রধান মো. জোবায়ের হোসেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা শাখার অফিস সহকারী খাইরুল আলম, চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উচ্চমান সহকারী মো. ফয়জুর রহমান এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের সহকারী প্রধান পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মীর রায়হান আলীম।

সরকারি হাসপাতালের যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী দুদকের নজরদারিতে, তাদের মধ্যে রয়েছেন- জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুন্সী সাজ্জাদ হোসেন, কুয়েত মৈত্রী সরকারি হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের হিসাবরক্ষক মো. মজিবুর রহমান, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট শহীদ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান, সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের প্রধান সহকারী এম কে আশেক নওয়াজ, কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, মুগদা মেডিক্যাল কলেজের হিসাব রক্ষক আবদুল্লাহ হেল কাফি, রংপুর মেডিক্যাল কলেজের হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা আলিমুল ইসলাম, সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজের ল্যাব সহকারী আব্দুল হালিম ও সুব্রত কুমার দাস, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সচিব মো. আনায়ার হোসেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের স্টোর কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হাসেন, কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের হিসাবরক্ষক আব্দুল মজিদ, ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতারের স্টোর কিপার সাফায়েত হোসেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র স্টোর কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজের স্টেনোগ্রাফার-কাম-কম্পিউটার অপারেটর মো. সাইফুল ইসলাম এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিসাব রক্ষক আনোয়ার হোসেন।

আরো নজরে রয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক আব্দুল মালেক ও তার স্ত্রী নার্গিস বেগম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মজিবুল হক মুন্সি ও তার স্ত্রী রিফাত আক্তার, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর তোফায়েল আহমেদ ভূইয়া ও তার স্ত্রী খাদিজা আক্তার এবং হাসপাতাল ও ক্লিনিক সমূহ বিভাগের অফিস সহকারী কামরুল হাসান ও তার স্ত্রী উম্মে হাবিবা।

এর বাইরে গোপালগঞ্জের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালর প্রশাসনিক কর্মকর্তা ওবাইদুর রহমান এবং তার দুই স্ত্রী বিলকিচ রহমান ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজের স্টাফ নার্স রেহেনা আক্তার, রংপুর মেডিকের কলেজ হাসপাতালের হিসাব রক্ষক মোঃ ইমদাদুল হক ও তার স্ত্রী উম্মে রুমান ফেন্সী, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মোঃ মাহমুদুজ্জামান ও তার স্ত্রী সাবিনা ইয়াছমিন এবং শহীদ তাজ উদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ষ্টোর অফিসার মোঃ নাজিম উদ্দিন ও তার স্ত্রী ফিরোজা বেগম রয়েছেন দুদকের নজরদারিতে।

এ বিষয়ে দুদক সচিব মুহাম্মদ দিলোয়ার বখত বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুর্নীতির অনুসন্ধানে দুদকের নিজস্ব গোয়েন্দা ইউনিট কাজ করছে। ইতোমধ্যেই আমরা দুর্নীতি, টেন্ডারবাজি, বদলি ও বিভিন্ন উপায়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন এমন ৪৫ জনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছি। অনুসন্ধান শেষে আরো অনেকের নাম আসতে পারে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top