শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১


বিএনপি আমলেও রোহিঙ্গাদের ফেরাতে পারেনি: তথ্যমন্ত্রী


প্রকাশিত:
৩ অক্টোবর ২০২০ ০৫:০৫

আপডেট:
৩ অক্টোবর ২০২০ ১৭:৫১

ছবি-সংগৃহীত

তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি দুই দফায় ক্ষমতায় থাকলেও সে সময় আসা রোহিঙ্গাদের তারা ফেরত পাঠাতে পারেনি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরীর সিআরবি এলাকায় ‘তিলোত্তমা চট্টগ্রাম’ নামের একটি সংগঠনের আয়োজনে মুজিববর্ষ উপলক্ষে বৃক্ষরোপন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ঠিক মতো হচ্ছে না বলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “১৯৯১- ৯২ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন বাংলাদেশে যে সব রোহিঙ্গা এসেছিল তাদের অনেকেই কিন্তু এখনও আছে। তাদের সবাই ফেরত যায়নি।

“বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে বলব, ১৯৯১ সালের পর বিএনপি দুই দফায় ১০ বছর ক্ষমতায় ছিল, তাদের সময়ে যে রোহিঙ্গারা এসেছিল তাদেরকে তারা ফেরত পাঠাতে পারেননি।”

হাছান মাহমুদ বলেন, “বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিক দিক বিবেচনা করে রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন। সেখানে যেই বর্বরতা চলছিল, সেই বর্বরতার হাত থেকে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা রক্ষা পেয়েছে। এতে সমগ্র পৃথিবী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছে।

“আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও গণমাধ্যম প্রধানমন্ত্রীকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ অভিহিত করেছে। যেখানে সমগ্র পৃথিবী প্রশংসা করছে সেখানে বিএনপি প্রশংসা করতে পারেনি।”

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশের কূটনৈতিক তৎপরতার কারণেই ওআইসি’র পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিচার হচ্ছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমাদের সরকার কোনো যুদ্ধ বিগ্রহের মাধ্যমে নয়, কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে এবং আন্তর্জাতিক মহল থেকে চাপের মাধ্যমে, কূটনীতি ও আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করতে চায়, আমরা সেই পথেই হাঁটছি।

“এতে ইতোমধ্যে অনেক সফলতা এসেছে। আন্তর্জাতিক আদালত থেকে মিয়ানমারকে সমন দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। অনেককে বিচারের আওতায় আনতে বলা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে মিয়ানমারকে আন্তর্জাতিক আদালত থেকে তিরষ্কারের মতোই করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশেরই কূটনৈতিক তৎপরতার সফলতা।”

এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, “দুঃখজনক হলেও সত্য চট্টগ্রাম নগর উন্নয়নের ক্ষেত্রে গাছ কাটা ও পাহাড় কাটার বিষয়টা খেয়াল রাখা হয় না। চট্টগ্রাম অপরূপ সৌন্দর্য্যের নগর, কিন্তু চট্টগ্রামে উন্নয়নের নামে নির্বিচারে গাছ কেটে, পাহাড় কেটে সৌন্দর্যহানি ঘটানো হয়েছে। চট্টগ্রামকে শ্রীহীন করা হয়েছে। নগর উন্নয়নের সাথে যুক্ত বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানও এ বিষয়টি অনেক সময় খেয়াল রাখেনি।

তিনি বলেন, “চট্টগ্রামের উন্নয়নে রাস্তা করতে গিয়ে পাহাড় কেটে সমান করে ফেলা হয়েছে। রাতের অন্ধকারেও পাহাড় কাটা হয়। পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে চেষ্টা করা হয়, কিন্তু অনেক সময় রক্ষা করা যায় না।

“আবার অনেক ক্ষেত্রে সর্ষের মধ্যে ভূত আছে। নগর উন্নয়ন করার ক্ষেত্রে বৃক্ষকর্তন ও পাহাড় না কাটার ওপর যদি গুরুত্ব দেওয়া না হয় চট্টগ্রাম নগরের সৌন্দর্য গত পঞ্চাশ-ষাট বছরে যেটুকু কমেছে আগামী পঞ্চাশ বছর পর চট্টগ্রাম শহর আর এ রকম থাকবে না।”

চট্টগ্রামের সন্তান হাছান মাহমুদ বলেন, “যেদিকে চট্টগ্রাম শহর বৃদ্ধি পাচ্ছে সেখানে নির্বিচারে পাহাড় কাটা হচ্ছে, এটি বন্ধ করতে হবে। অন্যদিকে কর্ণফুলি নদীর দুই পাড়ে অনেক ক্ষেত্রে দখল ও দূষণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন সংস্থার নামে সেখানেও দখল করা হচ্ছে। এগুলোর ব্যাপারে যদি সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে উঠে এটি করা সম্ভবপর হবে না।

“যখন দেখি মাঠের মধ্যে অট্টালিকা নির্মাণ করা হয়, সেটি মনে হয় আমার বুকের মধ্যে কেউ একটা পেরেক বিঁধে দিল। এভাবেই সবুজ ও প্রকৃতি নষ্ট করা হচ্ছে। আমাদের সরকার ল্যান্ড জোনিংয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে এবং এটি সম্পন্ন হলে গ্রামেও যার যেখানে ইচ্ছা বাড়ি করা যাবে না। কোন জায়গায় কী ধরনের বাড়ি করা যাবে তা সরকার নির্ধারণ করে দেবে।”

তিলোত্তমা চট্টগ্রামের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সাহেলা আবেদীন রীমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক, নগর পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার বিজয় বসাক, সাংবাদিক ওসমান গণি মনসুর, চট্টগ্রামের প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, শিল্পপতি এস এম আবু তৈয়ব, এলভিয়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান রইস উদ্দিন সৈকত, লায়ন শামসুদ্দিন সিদ্দিকী, দৈনিক আজাদীর সহযোগী সম্পাদক রাশেদ রউফ, সাবেক কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন খালেদ প্রমুখ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top