গুপ্তধনের লোভ দেখিয়ে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় বড় জ্বীনের কবিরাজ
প্রকাশিত:
২৫ মে ২০২৩ ১৬:৪৩
আপডেট:
৮ জুন ২০২৩ ০৮:৩৩

গুপ্তধনের লোভ দেখিয়ে ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নজরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ বাহাদুর মিয়া নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল বিভাগ।
বুধবার (২৪ মে) বিকেলে কদমতলী থানার গিরিধারা আবাসিক এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে পিতলের থালা, গামলা, ঘটি, আগরদানী, তাবিজ লেখার বই ও ২৯টি তাবিজের খোল জব্দ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৪ মে) ডিবি মতিঝিল বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) এস এম হাসান সিদ্দিকী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এস এম হাসান সিদ্দিকী বলেন, গত সোমবার ভিকটিম নুরুল আমিন পলাশ গোয়েন্দা পুলিশের কাছে প্রতারণা সংক্রান্তে একটি অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ছায়া তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশ। তদন্তকালে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তদের অবস্থান শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়। ভিকটিম নুরুল আমিন পলাশ গত বছর আগস্ট মাসে তার ছোট বোনের ছেলেকে জ্বীনের আছর ছাড়াতে কবিরাজ আ. জলিলের দারস্থ হন। জলিল বলেন, তাকে বড় জ্বিনে আছর করেছে, এরপর তাদের বড় জ্বীনের কবিরাজ নজরুলের মোবাইল ফোন নম্বর দেয়। জলিল বলেন, এ কবিরাজ মাটির নিচের গুপ্তধনের সন্ধানও দিতে পারে। এরপর একদিন নজরুল ও তার সহযোগী বাহাদুর পলাশের বোনের বাসা দিয়াবাড়িতে যায়। সেখানে পলাশের ভাগিনাকে ঝাড়-ফুঁকের এক পর্যায়ে বাহাদুর নাক-মুখ দিয়ে কৌশলে রক্ত বের করে ভয়ানক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। যা ভিকটিমের মনে বিশ্বাস জন্মায়।
তিনি বলেন, কবিরাজ নজরুল ভিকটিম পলাশকে বলে তার সঙ্গে একজন জ্বীনপরী আছে। যার মাধ্যমে সে পলাশের বাড়িতে থাকা মাটির নিচের পুরোনো গুপ্তধন উঠিয়ে দিতে পারবে। তাদের কথামতো পলাশ বরিশালের কাঁঠালিয়া থানায় তার গ্রামের বাড়ির ঠিকানা দেন। কিছুক্ষণ পর নজরুল জানায়, পলাশের বাড়ির উত্তর পাশে মাটির নিচে একটি গুপ্তধনের ঘটি আছে। ঘটিটি জ্বীনেরা পাহারা দিয়ে রেখেছে। গুপ্তধন ওঠাতে হলে পাহারারত ৩০/৪০ জন জ্বীন মারা যাবে। মারা যাওয়া প্রতি জ্বীনের সাদকা হিসেবে গরু দিতে হবে। ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর রাত ১১টায় নজরুল ও বাহাদুর ভিকটিম পলাশের ঘরের পাশে হতে মাটি খুঁড়ে কথিত গুপ্তধনের ঘটি এনে আলমারীতে রাখে। এরপর জ্বীনদের গরু সাদকা বাবদ ও গুপ্তধন ভর্তি ঘটির লোভ দেখিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে পলাশের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, গ্রেপ্তাররা সহজ সরল মানুষকে জ্বীন-পরীর বাদশা পরিচয় দিয়ে কৌশলে অলৌকিক ক্ষমতার কারিশমা দেখিয়ে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নিতো।
অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ডিএমপির ওয়ারী থানায় মামলা রুজু হয়েছে। পলাতক আ. জলিল ও মিজানুর রহমানকে গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: