বঙ্গবন্ধু কর্নার
বই ‘জালিয়াতি’ তদন্তে হাই কোর্টের কমিটি
 প্রকাশিত: 
                                                ২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২৩:৫২
 আপডেট:
 ৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:১৪
                                                
 
                                        জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে রচিত দুটি বইয়ের স্বত্ব জালিয়াতির অভিযোগ তদন্তে কমিটি গঠন করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলেছে হাই কোর্ট।
এবিষয়ে রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার রুলসহ এ আদেশ দেয়।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিবের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ওই তদন্ত কমিটিতে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হককে রাখা হয়েছে।
এই আদেশের পাশাপাশি বই দুটির গ্রন্থ ও মেধাস্বত্ব সংরক্ষণে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।
মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ‘জার্নি মাল্টিমিডিয়া লিমিটেড’ ও ‘স্বাধীকা পাবলিশার্স’ এবং সাংবাদিক নাজমুল হোসেনের স্ত্রী শারমীন সুলতানাকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আবেদনকারী আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জেসমিন সুলতানা সামসাদ।
আইনজীবী সায়েদুল হক সুমন পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে নতুন প্রজন্মের কাছে নিয়ে যাওয়ার উদ্যোগটি একটি প্রেস্টিজিয়াস বিষয়। এটি বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের ভাবমূর্তির বিষয়। এরকম একটি জায়গায় যদি দুর্নীতি-জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে তাহলে সেটি জনসমক্ষে আসা উচিত।
“ফলে রিট আবেদনে একটি স্বাধীন বিচারিক অনুসন্ধান কমিটির নির্দেশনা চেয়েছিলাম। আদালত কমিটি করে দিয়েছেন। বিষয়টি এক মাসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেবে।“
গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ৬৫ হাজার ৭০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু কর্নারে’ দেওয়ার জন্য মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ৩৯টি বই কেনার অনুমতি দেওয়া হয়। এজন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ১৩০ কোটি টাকা। সেখান থেকে আপাতত ২৭ কোটি টাকায় আটটি বই কেনা হয়েছে।
এর মধ্যে যমুনা টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার নাজমুলের জার্নি মাল্টিমিডিয়া থেকে প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ ও বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন নিয়ে ‘৩০৫৩ দিন’ নামে দুটি বই ১৭ কোটি ৫৭ লাখ ৫৬ হাজার ৫০০ টাকায় এবং তার স্ত্রী শারমীনের স্বাধীকা পাবলিশার্স থেকে ‘অমর শেখ রাসেল’ নামে একটি বই ৩ কোটি ১৩ লাখ ৩৮ হাজার ৯০০ টাকায় কেনা হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, ‘অমর শেখ রাসেল’ বইটি প্রকাশে লেখকের অনুমতি নেওয়া হয়নি। আর বাকি দুটি বইয়ের স্বত্ব ব্যবহারের যথাযথ প্রক্রিয়ায় অনুসরণ করা হয়নি।
এর মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু মানেই স্বাধীনতা’ বইটি প্রথম প্রকাশ করেছিল মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং ‘৩০৫৩ দিন’ প্রকাশ করেছিল কারা অধিদপ্তর।
‘অমর শেখ রাসেল’ বইটি স্বাধীকা পাবলিশার্স প্রথম প্রকাশ করলেও এর সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য নাসরীন আহমেদকে না জানিয়েই তা প্রকাশ এবং বঙ্গবন্ধু কর্নারে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার এই অভিযোগের স্বাধীন অথবা বিচারিক অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে রিট আবেদন করেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
তবে আবেদনে তিনি ‘অমর শেখ রাসেল’ বইটির প্রকাশনায় অনিয়মের তদন্ত চাননি। আদালতও তদন্তের মধ্যে বইটিকে রাখেনি। কিন্তু বইটির প্রকাশক শারমীনকে বিবাদী করেছে।
এর কারণ জানতে চাইলে সরাসরি জবাব না দিয়ে সুমন বলেন, “আদালত কমিটিকে দুটি বইয়ের গ্রন্থ ও মেধাস্বত্ত্ব জালিয়াতির বিষয়ে তদন্ত করতে বলেছেন।
“তবে আমি আশা করব, তদন্তে সামগ্রিক বিষয়টিই উঠে আসবে। আরও কোনও বইয়ের গ্রন্থ ও মেধাস্বত্ত্ব নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ থাকলে সেটিও উঠে আসবে বলে আশা করি।”



 
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                            
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: