সোমবার, ৬ই মে ২০২৪, ২৩শে বৈশাখ ১৪৩১


নিজের অজান্তেই যেভাবে চোখের ক্ষতি হচ্ছে


প্রকাশিত:
৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:০৪

আপডেট:
৬ মে ২০২৪ ১০:০০

ফাইল ছবি

নানান অভ্যাস প্রতিনিয়ত আমাদের চোখের ক্ষতির করে যাচ্ছে। লম্বা সময় টেলিভিশন, কম্পিউটার, মোবাইল ইত্যাদির বৈদ্যুতিক পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকার কারণে চোখের যে ক্ষতি হয় তা আমরা সবাই জানি। তবে আরও নানান কারণে আমাদের চোখের ক্ষতির করে যাচ্ছে, অথচ আমরা বুঝতেই পারছিনা।

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে জানান হল তেমন কিছু অভ্যাস সম্পর্কে যা চোখের ক্ষতি করছে প্রতিনিয়ত।

রোদচশমা না পরা: প্রচণ্ড রোদে যখন চোখ পুরোপুরি খোলা যায়না তখন কিংবা নিজেকে ‘ফ্যাশনেবল’ করার জন্য আমরা রোদচশমা পরি। তবে শুধু চোখের যত্নের জন্য হয়ত রোদচশমাকে আমরা সেভাবে ব্যবহারের কথা ভাবিনা।

আবহাওয়া যেমনই হোক না কেনো সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি দিনের বেলার সবসময়ই আছে। অতিবেগুনি রশ্মির সংস্পর্শে আসার কারণে চোখে ছানি পড়া, ‘ম্যাকুলার ডিজেনারেশন’, ‘আই গ্রোথ’ এবং অন্যান্য চোখের রোগ দেখা দেয়।

ভালোমানের রোদচশমা প্রায় ৯৯ থেকে ১০০ শতাংশ অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চোখকে রক্ষা করে। রোদচশমা একটু বড় আকারের ব্যবহার করা ভালো, তাতে বেশি অংশ ঢাকা থাকবে।

চোখের পাতায় সানস্ক্রিন না দেওয়া: সানস্ক্রিন ব্যবহারের অভ্যাস সবাই রপ্ত করতে পারেন না। আর যারা পারেন তাদের মধ্যে অনেকেই মুখে ও হাতে মাখলেও ভুলে যান চোখের পাতার কথা।

চোখের পাতায় সানস্ক্রিন থাকলে চোখ ও চোখের পাতা অতিবেগুনি রশ্মি থেকে সুরক্ষা পাবে আরেকটু বেশি। তবে খেয়াল রাখতে হবে সানস্ক্রিন যেন চোখে না চলে যায়।

আর চোখের পাতার ত্বক যেহেতু সংবেদনশীল, এখানে দস্তা ও ‘টাইটেনিয়াম ডাই-অক্সাইড’ সমৃদ্ধ সানস্ক্রিন ব্যবহার করা নিরাপদ হবে।

ঘন ঘন চোখ কচলানো: মাঝে মধ্যে এই কাজ করলে ক্ষতি নেই, তবে একে অভ্যাসে পরিণত করলে চলবে না। কারণ তাতে ‘কর্নিয়া’ ও ‘কেরাটোকনাস’য়ের ক্ষতি হবে।

পাশাপাশি অতিরিক্ত চোখ ডলার অভ্যাস থেকে চোখের পাতার ত্বক স্থিতিস্থাপকতা হারায়, ছিঁড়ে যেতে পারে সেখানকার বিভিন্ন সুক্ষ কোষ।

বৈদ্যুতিক পর্দা: স্বাভাবিক জীবনযাত্রার দিনগুলোতেই মোবাইল, টেলিভিশন, কম্পিউটারের পর্দার সামনে অতিরিক্ত সময় কাটানো হত। আর বর্তমান পরিস্থিতিতে সারাদিনই কাটছে কোনো না কোনো বৈদ্যুতিক পর্দার সামনে, যা চোখের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকার সময় পলক ফেলার হার কমে যায়, যা চোখকে শুষ্ক করে তোলে। ফলে চোখের ওপর প্রচণ্ড ধকল যায়, জ্বলুনি দেখা দেয়, দৃষ্টিশক্তি লোপ পায়।

এজন্য যেকোনো বৈদ্যুতিক পর্দা থেকে কমপক্ষে ২৫ ইঞ্চি দূরে বসতে হবে এবং তার উচ্চতা চোখ বরাবর হতে হবে যাতে চোখের ওপর ধকল কমে।

প্রতি ২০ মিনিট পর পর ২০ ফিট দূরত্বে তাকাতে হবে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে।


কন্ট্যাক্ট লেন্স পরে ঘুমানো: যারা নিয়মিত কন্ট্যাক্ট লেন্স পরেন তারা রাতে ঘুমানোর সময় অবশ্যই তা খুলে রাখবেন। এমনকি দুপুর বেলা কিংবা যখনই সামান্য ঘুমাবেন লেন্স খুলে নিতে হবে।

লেন্স পরে ঘুমালে চোখের ‘কর্নিয়া’তে অক্সিজেন পৌঁছাতে পারেনা, যা ডেকে আনতে পারে ‘নিওভাস্কুলারাইজেশন’ নামক চোখের রোগ। পাশাপাশি দেখা দিতে পারে প্রদাহ, যার কারণে ভবিষ্যতে লেন্স পরা নিষিদ্ধ হয়ে যেতে পারে।

এমনকি লেন্স থেকে চোখের ভেতরটা সুক্ষভাবে কেটে যেতে পারে, যেখানে সংক্রমণ বা প্রদাহ দেখা দিলে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

চোখ দেখানো: চোখে কোনো সমস্যা না থাকলেও প্রতি পাঁচ বছরে একবার চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যাতে কোনো সমস্যা তৈরি হলে তা প্রাথমিক অবস্থাতেই শনাক্ত করা যায়।

বয়স ৪০ পার হলে এবং চোখ সুস্থ থাকলে প্রতি তিন বছরে একবার ডাক্তার দেখানো উচিত।

৬৫ বছর বয়সে প্রতিবছর একবার চোখ দেখানো উচিত। আর যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের প্রতিবছর ‘ডায়াবেটিক আই এক্সাম’ করানো আবশ্যক।

সাঁতারের সময় চোখ খালি রাখা: সুইমিং পুলে থাকে ‘ক্লোরিন’ ও অন্যান্য রাসায়নিক উপাদান যা চোখের জন্য ক্ষতিকর। আর যেকোনো জলাশয়েই থাকতে নানায় জীবাণু।

তাই নিয়মিত যারা সাঁতার কাটেন তাদের সবসময় চোখে সুইমিং গগলস পরে নেওয়া উচিত।

মূলত খালি চোখে নিয়মিত সাঁতার কাটলে চোখের ‘টিয়ার ফিল্ম’ ধুয়ে যায়। চোখের ওপর পানির পাতলা স্তরকে বলা হয় ‘টিয়ার ফিল্ম’।

আর সাঁতার কাটা শেষে চোখে পরিষ্কার পানির ঝাপটা দিতে হবে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ‘লুব্রিকেটিং আই ড্রপ’ ব্যবহার করতে পারেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top