বিশ্ব রাজনীতিতে একক আধিপত্য আর চলবে না: পুতিন
প্রকাশিত:
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:০৪
আপডেট:
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:২৪

যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে বিশ্ব রাজনীতিতে আর একক আধিপত্য চলবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। চীনের বেইজিংয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে এই সতর্কবার্তা দেন তিনি।
পুতিন বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সবার সমান অধিকার থাকতে হবে এবং সবাইকে সমান অবস্থানে থাকতে হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি।
তার মতে, ভারত ও চীনের মতো বড় দেশগুলোর নিজস্ব রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও আইন রয়েছে। এসব দেশের নেতৃত্বকে ‘শাস্তি’ দেওয়ার চেষ্টা করলে তারা রাজনৈতিক সংকটে পড়বে।
ইতিহাসের প্রসঙ্গ টেনে পুতিন পশ্চিমা বিশ্বকে উপনিবেশিক অতীত স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, একসময় দেশগুলোকে উপনিবেশবাদ ও সার্বভৌমত্ব খর্ব করার মতো কঠিন সময় পার করতে হয়েছে। এখন উপনিবেশ যুগ শেষ, তাই পশ্চিমা দেশগুলোকে বুঝতে হবে, অংশীদারদের সঙ্গে সেই সুরে আর কথা বলা যাবে না।
পুতিনের এ মন্তব্য আসে এমন এক সময়, যখন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ভারতীয় পণ্যের ওপর দ্বিগুণ শুল্ক আরোপ করেছে। ২৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হওয়া এ শুল্কের অর্ধেক ভারতের রাশিয়া থেকে তেল আমদানির জন্য শাস্তি হিসেবে এবং বাকি অর্ধেক ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির অংশ হিসেবে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে চাপ প্রয়োগের উদ্দেশ্যে।
এদিকে ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো ভারতের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনের বৈঠককে ‘লজ্জাজনক’ বলেছেন।
নাভারোর অভিযোগ, ভারত রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কিনে যে অর্থ দিচ্ছে, তা ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিনকে সহায়তা করছে। তিনি বলেন, মোদিকে শি জিনপিং ও পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে দেখা দুঃখজনক। আমরা আশা করি তিনি বুঝবেন, তার জায়গা আমাদের সঙ্গে, রাশিয়ার সঙ্গে নয়।
বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘ সময় ধরে তৈরি হওয়া যুক্তরাষ্ট্র–ভারত সম্পর্কের ওপর হঠাৎ কঠোর শুল্ক চাপানো বড় ধাক্কা। ভারত অবশ্য রাশিয়া থেকে তেল কেনাকে বৈধ প্রতিরক্ষা হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপকে ‘অন্যায্য’ বলেছে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ট্রাম্পের আরোপিত এই ‘দ্বিতীয় শুল’ কেবল ভারতের ওপরই পড়েছে। অথচ চীনও রাশিয়ার অন্যতম বড় তেল ক্রেতা।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: