সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়িয়েছে ইরান, দাবি আইএইএর
প্রকাশিত:
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:২৮
আপডেট:
৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:৪৩

ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে নতুন দাবি করেছে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা তথা আইএইএ। সংস্থাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের কাছে ৪৪০.৯ কেজি উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে। এর মধ্যে গত কয়েক মাসে ৩২ কেজির বেশি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদ করেছে তেহরান।
এদিকে পরমাণু কেন্দ্র পরিদর্শনের বিষয়ে দ্রুত সমঝোতায় আসতে তেহরানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আইএইএর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি। এ বিষয়ে ভিয়েনায় ইরানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালে পশ্চিমা কয়েকটি দেশের তোড়জোড় নিয়ে তেহরান ও লন্ডনের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।
ইরান গোপনে পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করছে বলে দাবি তুলে গত জুন মাসে দেশটির কয়েকটি পরমাণু স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল। হামলার পর মার্কিন নেতারা জানান, পরমাণু স্থাপনাগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। তবে দেশটির মজুদ থাকা ইউরেনিয়ামের বিষয়ে দেখা দেয় ধোঁয়াশা।
ইসরাইল ও মার্কিন হামলার প্রায় তিন মাস পর এখন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা আইএইএর এক গোপন প্রতিবেদন বলছে, ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার আগেই ইরান সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়িয়েছে। জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থাটি গত বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) শুধুমাত্র সদস্য দেশগুলোরর কাছে নতুন এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
আইএইএর এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইল-মার্কিন হামলার আগের দিন পর্যন্ত অর্থাৎ ১৩ জুন পর্যন্ত ইরানের কাছে ৪৪০.৯ কেজি উচ্চমাত্রায় (৬০ শতাংশ) সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম ছিল। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মে থেকে জুন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত ইরান নতুন করে ৩২.৩ কেজি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করেছে।
আইএইএর মতে, ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ এই পরিমাণ ইউরেনিয়াম ৯০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ করা গেলেই তা থেকে ইউরেনিয়াম দিয়ে অন্তত ১০টি পরমাণু অস্ত্র বানানো সম্ভব। গত ১৩ জুনের পর থেকে ইরান তাদের কোনো পরমাণু স্থাপনায় সরাসরি প্রবেশাধিকার দেয়নি আইএইএকে। দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে দেশটির ইউরেনিয়ামের মজুত সরাসরি যাচাই করা সম্ভব হয়নি জানিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে সংস্থাটি।
আইএইএর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেছেন, এ বিষয়ে দ্রুত সমঝোতার ভিত্তিতে পদক্ষেপ না দিলে জল্পনা–কল্পনার জন্ম দেবে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, ভিয়েনায় আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরেক দফা বৈঠক হতে পারে।
এদিকে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালে কয়েকটি পশ্চিমা দেশের তোড়জোড়ের মধ্যেই পরমাণু ইস্যুতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে তেহরান। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্য ও ইরানের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ফোনালাপ করেছেন। আলোচনায় স্ন্যাপব্যাক ম্যাকানিজম নিয়ে কথা হয় তাদের। ইরানের স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, দুই পক্ষই আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খোঁজার বিষয়ে একমত হয়েছে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: