দক্ষিণ কোরিয়ায় স্কুলের ক্লাসরুমে মোবাইল ফোন নিষিদ্ধ করে আইন পাস
প্রকাশিত:
২৭ আগস্ট ২০২৫ ১৫:৫৭
আপডেট:
২৭ আগস্ট ২০২৫ ১৯:৪১

স্কুলে ক্লাস চলাকালীন মোবাইল ফোন এবং স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ করে একটি বিল পাস করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। পরবর্তী শিক্ষাবর্ষ থেকে, অর্থাৎ ২০২৬ সালের মার্চ মাসে কার্যকর হতে যাওয়া এই আইনটি স্মার্টফোন আসক্তি রোধের প্রচেষ্টার অংশ।
বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে বিলটি পাস হয়। পার্লামেন্টে উপস্থিত ১৬৩ জন সদস্যের মধ্যে ১১৫ জন পক্ষে ভোট দেন।
আইনপ্রণেতা, অভিভাবক এবং শিক্ষকরা যুক্তি দেন, স্মার্টফোনের ব্যবহার শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পারফরম্যান্সকে প্রভাবিত করছে এবং তাদের পড়াশোনার সময় নষ্ট করছে।
ফিনল্যান্ড এবং ফ্রান্সের মতো কিছু দেশ ছোট পরিসরে ফোন নিষিদ্ধ করেছে। শুধুমাত্র ছোট বাচ্চাদের স্কুলের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ করেছে। ইতালি, নেদারল্যান্ডস এবং চীনের মতো অন্যান্য দেশগুলো সমস্ত স্কুলে ফোন ব্যবহার সীমিত করেছে।
কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া এই নিষেধাজ্ঞাকে আইন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছে। খুব কম সংখ্যক দেশই এই আইন চালু করেছে।
যদিও দক্ষিণ কোরিয়ার বেশিরভাগ স্কুল ইতোমধ্যেই স্মার্টফোন নিষিদ্ধের কোনো না কোনো রূপ বাস্তবায়ন করেছে। তবে আইনের ফলে এটি আরও কঠোর হবে।
সিউলের ১৪ বছর বয়সী এক শিশুর মা চোই ইউন-ইয়ং বলেন, আজকালকার শিশুরা 'তাদের স্মার্টফোন নামিয়ে রাখতে পারে না।'
তবে এটি কেবল শিশুদের ক্ষেত্রেই নয়। ২০২৪ সালের একটি সরকারি জরিপ অনুসারে, দেশের ৫ কোটি ১০ লক্ষ মানুষের প্রায় এক-চতুর্থাংশ তাদের ফোনের ওপর অত্যধিক নির্ভরশীল। কিন্তু ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি - ৪৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। বছরের পর বছর ধরে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি কিশোর-কিশোরী বলে, তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও স্ক্রোল করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারানো নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। অভিভাবকরা আশঙ্কা করছেন, এটি তাদের সময়ের সঙ্গে অন্য যা কিছু করা যায়, সেগুলোর পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
চোই ইউন-ইয়ং বলেন, 'যখন তারা স্কুলে যায়, তখন তাদের পড়াশোনা করার কথা, পাশাপাশি বন্ধুত্ব গড়ে তোলার এবং বিভিন্ন কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করার কথা। তবে তারা এই বিষয়গুলোতে মনোযোগ দিতে অক্ষম হচ্ছে। এমনকি যখন তারা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেয়, তখনো তারা ঘন ঘন তাদের ফোনে ফিরে যায়। স্বাভাবিকভাবেই এটি শিক্ষার ক্ষেত্রেও ব্যাঘাত ঘটায়।'
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: