উত্তেজনার মাঝেই পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট
প্রকাশিত:
২২ জুলাই ২০২৫ ১৭:৫৩
আপডেট:
২৩ জুলাই ২০২৫ ০০:৪৪

যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে পরমাণু প্রকল্প ইস্যুতে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান। ২৬ জুলাই ইসলামাবাদে তার বিমান অবতরণ করবে বলে জানিয়েছে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বুধবার তেহরানভিত্তিক আধাসরকারি সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ–কে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ইরানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকায়েই। তিনি বলেন, `এশিয়ার দুই প্রতিবেশী ইরান ও পাকিস্তানের সম্পর্ক বহু পুরোনো ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বন্ধনের ওপর গড়ে উঠেছে। এই সম্পর্ক আরও জোরালো হচ্ছে। বিশেষ করে সাম্প্রতিক ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের পর দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক যোগাযোগ বেড়েছে।'
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সাম্প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতির শুরু হয় গত ১২ জুন, যখন ইসরায়েল মধ্যরাতে ইরানে বিমান হামলা চালায়। জবাবে ইরানও ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। উত্তেজনা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছালে ২৫ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
এর আগে মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আহ্বানে সাড়া দিয়ে পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসে তেহরান। সেই আলোচনার লক্ষ্য ছিল একটি নতুন সমঝোতা চুক্তি—যার মাধ্যমে জাতিসংঘ ও পশ্চিমা জোটের সঙ্গে উত্তেজনা প্রশমিত করা।
পাকিস্তান-ইরান সীমান্ত ও সাম্প্রতিক কূটনীতি
ইরান-পাকিস্তান সীমান্তবর্তী অঞ্চলে রয়েছে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিং, যার মধ্যে গাব্দ-রিমদান (গাওদার জেলা) এবং তাফতান (চাঘি জেলা) অন্যতম। ইরান-ইসরায়েল সংঘাত শুরুর পর পাকিস্তান এই সীমান্তগুলো কিছুদিনের জন্য সাময়িক বন্ধ রেখেছিল।
তবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, সেনাপ্রধান আসিম মুনিরসহ দেশটির একাধিক রাজনীতিবিদ ও বিশিষ্ট নাগরিক ইরানের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বিবৃতি দেন, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দৃঢ় করতে সহায়তা করে।
সম্প্রতি ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসকান্দার মোমেনি ও পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভির মধ্যে একটি ফোনালাপ হয়। সেখানে ইরান, পাকিস্তানের বর্ষা দুর্যোগে প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করে।
মাসউদ পেজেশকিয়ানের এ সফর দুই দেশের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক ভারসাম্য, নিরাপত্তা সহযোগিতা ও আঞ্চলিক সংলাপকে আরও জোরদার করতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তেহরানের সম্পর্ক যখন অনিশ্চয়তার মধ্যে, তখন ইসলামাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানো ইরানের জন্য কৌশলগত অগ্রাধিকার হয়ে উঠছে।
সূত্র : জিও নিউজ
এসএন /সীমা
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: