শুক্রবার, ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৪ঠা আশ্বিন ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


‘মগজখেকো’ অ্যামিবা সংক্রমণ সামলাতে কেরালায় বিশেষ পদক্ষেপ


প্রকাশিত:
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:৩৭

আপডেট:
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:৩৬

ছবি সংগৃহীত

দক্ষিণ ভারতের কেরালায় মস্তিষ্কখেকো জীবাণুর প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। ওনাম উৎসবের ঠিক আগে ৪৫ বছর বয়সী শোভনা নামের এক নারী এই রোগে মারা যান। এ বছর রাজ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ জন আক্রান্ত হয়েছেন, এর মধ্যে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে শিশু থেকে শুরু করে প্রবীণও রয়েছেন।

ঘাতক রোগটি হলো ন্যাগ্লেরিয়া ফাওলেরি, সাধারণভাবে যাকে মগজখেকো অ্যামিবা বলা হয়।

মিষ্টি পানিতে থাকা এই আ্যামিবা নাক দিয়ে মানবদেহে প্রবেশ করে। এটি এমনই এক অতি বিরল রোগ, যার চিকিৎসা হয়ত অনেক ডাক্তারকে তার পুরো পেশাগত জীবনে একবারের জন্যও করার প্রয়োজনই হয় না।

নায়েগ্লেরিয়া ফাউলেরি নামের একটি এককোষী প্রাণী বা অ্যামিবা এই রোগটির জন্য দায়ী। পুকুর, নদী, অপরিষ্কার কুয়া এবং ক্লোরিন কম— এমন সুইমিংপুলে বাস এবং বংশবিস্তার কারী এই অ্যামিবা নিঃশ্বাসের সময় নাক দিয়ে মানুষের মস্তিষ্কে প্রবেশ করে। তারপর মস্তিষ্কের কোষ-টিস্যুগুলো খাওয়া এবং বংশবিস্তার শুরু করে।

কেরালায় ২০১৬ সাল থেকে এই রোগ চিহ্নিত হচ্ছে। কিছুদিন আগে পর্যন্তও বছরে একটি বা দুটি সংক্রমণের ঘটনা সামনে আসত। প্রায় সব ক্ষেত্রেই রোগীর মৃত্যু হতো।

সম্প্রতি প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে সারা পৃথিবীতে ১৯৬২ সাল থেকে এই রোগী চিহ্নিত হয়েছে মাত্র ৪৮৮ জন। বেশিরভাগই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান আর অস্ট্রেলিয়ার ঘটনা। রোগীদের মধ্যে ৯৫ শতাংশেরই মৃত্যু হয়েছে।

কেরালায় প্রায় ৫৫ লাখ কুয়া ও ৫৫ হাজার পুকুর রয়েছে। রাজ্যের অধিকাংশ মানুষ এসব উৎস থেকে দৈনন্দিন পানি সংগ্রহ করেন। অনেক জলাশয় দূষিত থাকায় সংক্রমণের ঝুঁকিও বেশি।

বিশ্বে ১৯৬২ থেকে এখন পর্যন্ত এই রোগের রোগী শনাক্ত হয়েছেন মাত্র ৪৮৮ জন, যাদের ৯৫ শতাংশই মারা গেছেন। তবে কেরালায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেঁচে যাওয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, আধুনিক পরীক্ষাগারে দ্রুত শনাক্তকরণ এবং অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল ওষুধ ও স্টেরয়েডের মিশ্রণ প্রয়োগের কারণে এ অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে।

মগজখেকো’ অ্যামিবা সংক্রমণ সামলাতে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে কেরালা। পদক্ষেপগুলো হলো—

প্রায় ২৭ লাখ কুয়া ক্লোরিন দিয়ে দূষণমুক্ত করার অভিযান

পুকুরে সাঁতার ও গোসল নিষিদ্ধ করে সতর্কতামূলক বোর্ড স্থাপন

সুইমিং পুল ও ট্যাংক নিয়মিত ক্লোরিনেশনের নির্দেশ

এছাড়াও জনগণকে সচেতন করতে প্রচারণা: নাকে প্লাগ ব্যবহার, অপরিশোধিত পানি এড়িয়ে চলা, শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ পানি থেকে দূরে রাখা।

জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকি

বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন—উষ্ণতা বৃদ্ধি, দীর্ঘায়িত গ্রীষ্ম আর পানি দূষণ অ্যামিবার বিস্তারকে বাড়িয়ে দিচ্ছে। কেরালায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বাড়লেও এটি ভবিষ্যতে অন্যান্য অঞ্চল ও দেশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। বিরলতম এই সংক্রমণ হয়ত আর বিরল থাকবে না।

সূত্র : বিবিসি বাংলা


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top