শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১


বঙ্গবন্ধুকে অবমাননা

ঢাবি শিক্ষক মোর্শেদকে বহিষ্কার ও গ্রেপ্তার দাবি


প্রকাশিত:
১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২৩:৫৬

আপডেট:
২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:৫৬

ছবি-সংগৃহীত

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার এবং গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি সংগঠন।

মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে এই দাবি জানান তারা।

টিএসসির এই কর্মসূচি শেষে ওই শিক্ষককে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

মানববন্ধনে মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, “মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ সব সময় মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রশ্নে আপসহীন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলঙ্ক মোর্শেদ হাসান খান স্বাধীনতাবিরোধীদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য মুক্তিযুদ্ধের ভুল ইতিহাস উপস্থাপন করেছেন, যা ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত সংবিধানের সুস্পষ্ট লংঘন।”

গত বছর দৈনিক নয়া দিগন্ত ও যায় যায় দিন পত্রিকায় প্রকাশিত তার লেখায় সংবিধান লংঘনের অভিযোগ করে মামুন বলেন, “উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সংবিধান লংঘন করে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে কটূক্তি করার অপরাধে এই শিক্ষক কখনোই মহান মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে পারেন না।

“সংবিধান লংঘন ও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলের সুপারিশের পরেও পার পেয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে এই শিক্ষক। বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য ও ইতিহাস বিকৃতির দায়ে অভিযুক্ত এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আজ পর্যন্ত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলের সুপারিশের বাইরে গিয়ে নামকাওয়াস্তে ‘লঘু’ দণ্ড দিয়ে ওই শিক্ষককে বহাল রাখার প্রক্রিয়া চলছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী এ ধরনের কোনো ষড়যন্ত্র করলে তা প্রতিহত করবে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।”

তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য ও ভয়াবহ ইতিহাস বিকৃতির মাধ্যমে ওই শিক্ষক চরমভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করেছেন। তার অপরাধের জন্য দুইভাবেই শাস্তি হতে পারে। এক সংবিধান লংঘনের অপরাধে। অন্যদিকে পত্রিকায় ভয়াবহ ইতিহাস বিকৃতির জন্য তার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনেও মামলা হওয়ার কথা। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ নেই। অ্যাটর্নি জেনারেলের সুপারিশও বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বাস্তবায়ন না হওয়ার অর্থ হচ্ছে ঢাবি প্রশাসন তাকে চাকুরিতে বহাল রাখতে চায়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ কখনোই এই ষড়যন্ত্র বরদাশত করবে না।”

আগামী সাত দিনের মধ্যে তাদের দাবি পূরণ না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়ে আল মামুন বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধের সূতিকাগার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বাধীনতাবিরোধী কোনো অপশক্তির জায়গা হবে না। আমরা অবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলঙ্ক ড. মোর্শেদ হাসান খানের স্থায়ী বহিষ্কার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। আগামী সাত দিনের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে।”

কর্মসূচিতে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত তূর্যসহ অর্ধ শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সালের ২৬ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকের স্বাধীনতা দিবস সংখ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি-জামায়াতপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মোর্শেদ হাসান খান ‘জ্যোতির্ময় জিয়া’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লেখেন।

সেখানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবমাননা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগে গত বছর অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক সব কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি ও ট্রাইব্যুনালের পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশের ভিত্তিতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।


সম্পর্কিত বিষয়:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top