শিশু ধর্ষণ: চাচার আমৃত্যু কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড আদায়ে সম্পদ বিক্রির নির্দেশ
প্রকাশিত:
২৬ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:১২
আপডেট:
২৬ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:৩৯
ফরিদপুরে ১০ বছর বয়সী ভাতিজাকে ধর্ষণের দায়ে ওই শিশুর চাচাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) দুপুর ৩টার দিকে ফরিদপুরের শিশু ধর্ষণ অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এ আদেশ দেন।
একই সঙ্গে আদালত আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তিকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন। অর্থদণ্ড আদায়ের জন্য মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তির জমি-জমা বিক্রি করে দুই লাখ টাকা ধর্ষণের শিকার শিশুর পরিবারকে দেওয়ার জন্য জেলা কালেক্টরকে আদালত নির্দেশ দেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২০২৫ সালের ১৭ মার্চ এই ট্রাইব্যুনাল গঠন করার পর ফরিদপুরে এটিই ট্রাইব্যুনালের প্রথম রায়।
আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তির নাম মুরাদ খন্দকার। তিনি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার নুরুলাহগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ আকনবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। মুরাদ খন্দকার এই মামলার বাদীর চাচাতো ভাই ও ধর্ষণের শিকার শিশুটির কাকা। রায় প্রদানের সময় মুরাদ আদালতে হাজির ছিলেন না। এজন্য আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৫ মে বিকেল ৫টার দিকে শিশু (৩) নিজের বাড়িতে ছিল। এ সময় শিশুটির চাচা তাকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে শিশুটি বাড়িতে এসে সব ঘটনা খুলে বলে মা-বাবার কাছে। এরপর তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় ওই শিশুটির বাবা বাদী হয়ে পরদিন ২০১৯ সালের ১৬ মে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় মুরাদ খন্দকারকে একমাত্র আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ মামলাটি তদন্ত করেন ভাঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনিচুর রহমান। তিনি ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর মুরাদ খন্দকারকে একমাত্র আসামি করে ওই শিশুকে ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এরপর সাক্ষী যুক্তি তর্ক শেষে ঘটনার ছয় বছরেরও বেশি সময় পর আজ রায় প্রদান করা হল।
পিপি গোলাম রব্বানী বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। মাগুরার আলোচিত একটি শিশু ধর্ষণের ঘটনার পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শিশু ধর্ষণ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেন। এই ট্রাইব্যুনালের অধীনে ফরিদপুরে এটিই প্রথম রায়।
তিনি আরও বলেন, শিশু ধর্ষণের মত জঘন্যতম অপরাধে আজকের যে রায়টি হয়েছে এটি একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। আমি মনে করি এ রায়ের ফলে ভবিষ্যতে এ জাতীয় অপরাধ কিছুটা হলেও কমে আসবে।
সম্পর্কিত বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: