১৬ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া
জয়পুরহাটের আইএইচটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা
প্রকাশিত:
২৫ নভেম্বর ২০২৫ ১২:০১
আপডেট:
২৫ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:২৭
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে (আইএইচটি) এক বছর ধরে বন্ধ সরকারি বরাদ্দ। ফলে জমেছে প্রায় ১৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকার বিদ্যুৎ বিল। এই বকেয়া পরিশোধ না করায় বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে সংযোগ। এতে চরম ভোগান্তি ও নিরাপত্তাহীনতায় ক্যাম্পাস ছেড়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে সোমবার (২৪ নভেম্বর) থেকে প্রতিষ্ঠানটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এর আগে, রোববার সকালে ১৬ লাখ ৭৩ হাজার ৬৮৩ টাকা বকেয়ার দায়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গোপীনাথপুর আইএইচটির অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ২০২২ সালে শুরু হয়। তবে এখনো এর নিজস্ব ‘ইকোনমিক কোড’ বা অর্থনৈতিক কোড তৈরি হয়নি। শুরুতে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের বরাদ্দে খরচ চলতো। কিন্তু গত এক বছর ধরে সেই বরাদ্দও বন্ধ। পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি বারবার তাগাদা দিলেও অর্থাভাবে বিল শোধ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। যার ফলে রোববার সকালে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।
প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, আইএইচটিতে ফার্মেসি ও ল্যাব টেকনোলজি-এই দুই ট্রেডে ৪৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এর মধ্যে ছাত্র ও ছাত্রীদের দুটি আলাদা হোস্টেলে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী আবাসিক সুবিধা নিতেন। বিদ্যুৎ না থাকায় তারা চরম বিপাকে পড়েন। সোলার সিস্টেম থাকলেও সেটি শুরু থেকেই অচল। বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় রাতের বেলায় শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা—কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন। এ কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিষ্ঠানটি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে সোমবার থেকে পাঠদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
আবাসিক শিক্ষার্থীরা জানান, রোববার দিবাগত রাতে আইএইচটিতে বিদ্যুৎ ছিল না। বহিরাগত ও চোর ঢুকেছিল। তারা রাতে নিরাপত্তাহীনতায় ছিলেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুতের এই সমস্যা সমাধান হচ্ছে না—এমনটাই জানতে পেরেছেন তারা। এ কারণে তারা সোমবারে হোস্টেল ছেড়ে বাড়িতে চলে যান। আবার কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য আইএইচটি ছুটি ঘোষণা করেছেন।
ল্যাব টেকনোলজির তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা নির্ধারিত টাকা দিয়ে এখানে পড়াশোনা করছি। তারপরেও আমাদের এমন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এটা আমরা প্রত্যাশা করিনি। কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত এই সমস্যার সমাধানের দাবি জানাই।
আরেক শিক্ষার্থী এনামুল হক বলেন, রোববার রাতে বিদ্যুৎহীন অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ছিলাম। রাতে বহিরাগত ও চোরের আনাগোনা টের পেয়েছি। তাই বাধ্য হয়ে হোস্টেল ছাড়ছি। এদিকে আইএইচটি অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ডা. মো. আব্দুল কুদ্দুস মন্ডল বলেন, প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ইকোনোমিক কোড হয়নি। সেজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ না হয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের ব্যয়ভারের অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছিল। গত এক বছর ধরে সেটিও বন্ধ রয়েছে। ফলে প্রতিষ্ঠানের এক বছরের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে। পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি একাধিকবার বিল পরিশোধের তাগাদা দিলেও পরিশোধ করতে পারিনি। এ কারণে পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি রোববার সকাল ১০টার পর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করেছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও অসুবিধার কথা বিবেচনা করে আমরা অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিষ্ঠানটি ছুটি ঘোষণা করেছি।
সম্পর্কিত বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: