শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১


নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে উত্তেজনা

২৪০ পরিবারকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ, সজাগ থাকার পরামর্শ


প্রকাশিত:
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:৫২

আপডেট:
৩ মে ২০২৪ ২২:২৬

মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া মর্টারশেল এসে পড়ে বাংলাদেশে।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ২৪০ পরিবারকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। এজন্য দুটি আশ্রয়কেন্দ্রও খোলা হয়েছে।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘাত ঘিরে ঘুমধুম-তুমব্রু সীমান্তের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে এমন আশঙ্কায় এসব পরিবারকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঘুমধুম সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এই নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক শাহ্ মুজাহিদ উদ্দিন।

জেলা প্রশাসক বলেন, বান্দরবান-মিয়ানমার সীমান্তে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান পরিস্থিতির কারণে ছাত্রছাত্রী ও সীমান্তে অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসকারী ২৪০ পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সীমান্তবর্তী স্কুলগুলো বন্ধ ও সবাইকে আতঙ্কিত না হয়ে সজাগ থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তার ঝুঁকি মাথায় রেখে দুটি স্কুলে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার অনুরোধ করছি। সার্বিক বিষয়ে প্রশাসন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সমন্বয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

সীমান্তের ওপার থেকে ছুটে আসা বুলেট ও বোমার অংশে তাৎক্ষণিকভাবে হাত না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, কারণ অবিস্ফোরিত বুলেট ও বোমা বিস্ফোরণ হয়ে আহত বা নিহত হতে পারেন। সার্বিক পরিস্থিতি মাথায় রেখে সতর্ক থাকার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

এ সময় গতকাল মিয়ানমার থেকে আসা মর্টারশেলে নিহত হোসনে আরা বেগমের বাড়িতে যান জেলা প্রশাসক। শোকসন্তুপ্ত পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেওয়ার পাশাপাশি পরিবারটিকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দেন।

মুজাহিদ উদ্দিন আরও বলেন, বান্দরবান জেলা প্রশাসক এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজের নির্দেশে স্থানীয় লোকজনকে সরে যেতে বলা হয়েছে। ঘুমধুম ইউনিয়নের সাত নাম্বার ওয়ার্ডের ১নম্বর উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জনগণের জন্য আশ্রয় শিবির হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।

যারা অর্থাভাবে আশ্রয় শিবিরে যেতে পারছেন না তাদের গাড়িভাড়ার জন্য ইউপি চেয়ারম্যান টাকা দিচ্ছেন বলে ৫ নাম্বার ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- পুলিশ সুপার সৈকত শাহিন, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার রাজিব কুমার বিশ্বাস, ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (আইসি) মাহাফুজ ইমতিয়াজ ভুঁইয়া, ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ প্রমুখ।

এরপর মাইকিং করে তুমব্রু কোনাপাড়া, তুমব্রু মাঝের পাড়া, ভাজাবনিয়া পাড়া, তুমব্রু বাজার পাড়া, তুমব্রু চাকমা হেডম্যান পাড়া, তুমব্রু পশ্চিমকুল পাড়া, ঘুমধুম নয়া পাড়া, ঘুমধুম পূর্ব পাড়া, ঘুম ধুম মাধ্যম পাড়া এলাকার লোকজনকে নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের সাত নাম্বার ওয়ার্ডের ১ নম্বর উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ দুটি কেন্দ্রকে আশ্রয় শিবির ঘোষণা করা হয়েছে।

ঘুমধুম ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে এই আশঙ্কায় ঘুমধুম ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নাম্বার ওয়ার্ড এলাকার বাইশ পারি তঞ্চঙ্গ্যা পাড়া থেকে ২০ পরিবার, ভাজাবনিয়া তঞ্চঙ্গ্যা পাড়া থেকে ৩০ পরিবার, তুমব্রু কোনার পাড়া থেকে ৩০ পরিবার, ঘুমধুম পূর্বপাড়া থেকে ২০ পরিবার, তুমব্রু হিন্দুপাড়া থেকে ১০ পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য পার্শ্ববর্তী কক্সবাজার উখিয়া, মরিচ্যা, কোট বাড়িসহ বিভিন্ন এলাকার আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে গত সোমবার বিকেল থেকেই আশ্রয় নিয়েছে।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, সীমান্তে ওপারে মিয়ানমারের ভেতরে গোলাগুলির কারণে কয়েকদিন ধরেই আতঙ্কে আছে এলাকাবাসী। গতকাল রাতভর সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির আওয়াজ শোনা গেছে। সীমান্ত পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে এই আশঙ্কায় ঘুমধুম ইউনিয়নের সাত নাম্বার ওয়ার্ডের ১ নম্বর উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ দুটি বিদ্যালয়কে সীমান্তঘেঁষা লোকজনের জন্য আশ্রয় শিবির হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। ওইসহ এলাকার লোকজনকে সেখানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top