না ফেরার দেশে চলে গেলেন সাবেক কিংবদন্তি ক্রিকেটার
প্রকাশিত:
১৬ আগস্ট ২০২৫ ১১:২৩
আপডেট:
১৬ আগস্ট ২০২৫ ১৭:২৩
অবসরপ্রাপ্ত কিংবদন্তি অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার ও কোচ বব সিম্পসন আর নেই। সিডনিতে শনিবার (১৬ আগস্ট) ৮৯ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে এবং তাকে আধুনিক অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের সোনালী যুগের অন্যতম স্থপতি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ইতিহাসে বব সিম্পসন ছিলেন এক অনন্য প্রতিভা। একইসঙ্গে সফল অধিনায়ক ও প্রভাবশালী কোচ। ১৯৫৭ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত টেস্ট ক্যারিয়ারে তিনি ৬২ ম্যাচে ৪৬.৮১ গড়ে ৪৬৮১ রান করেছেন। অধিনায়ক হিসেবে করা তার ১০টি সেঞ্চুরি আজও স্মরণীয়। এছাড়া ব্যাট হাতে ২৭টি হাফসেঞ্চুরি এবং বল হাতে ৭১টি উইকেটও রয়েছে তার নামের পাশে।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে ১৯৫২-৫৩ মৌসুমে নিউ সাউথ ওয়েলসের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক হয় সিম্পসনের। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ২৫৭ ম্যাচে ৬০টি সেঞ্চুরি ও ১০০টি ফিফটিতে ২১ হাজারের বেশি রান করেন তিনি। পাশাপাশি লেগ স্পিনে শিকার করেন ৩৪৯ উইকেট।
১৯৬৮ সালে প্রথমবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও ১৯৭৭ সালে দলের প্রয়োজনেই আবার ফিরে আসেন। তখন ৪১ বছর বয়সে ভারত ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১০টি টেস্টে নেতৃত্ব দেন তিনি।
ম্যানচেস্টারে ১৯৬৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩১১ রানের ইনিংস তার ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ। এছাড়া ১৯৬৫ সালে বার্বাডোজে বিল লরির সঙ্গে গড়া ৩৮২ রানের উদ্বোধনী জুটি এখনও অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ ওপেনিং পার্টনারশিপ হিসেবে রেকর্ড গড়েই আছে।
খেলা ছাড়ার পর কোচ হিসেবেও দারুণ সফল ছিলেন সিম্পসন। ১৯৮৬ সালে অস্ট্রেলিয়া তাকে প্রথম পূর্ণাঙ্গ মেয়াদের কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়। তার অধীনেই অ্যালান বোর্ডার, স্টিভ ওয়াহ, ডেভিড বুন, ডিন জোন্স, শেন ওয়ার্নদের মতো খেলোয়াড়রা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নিজেদের উজ্জ্বল করে তোলেন।
সিম্পসনের কোচিংয়েই ১৯৮৭ সালে প্রথমবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতে অস্ট্রেলিয়া। শেন ওয়ার্ন তাকে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসের ‘সর্বকালের সেরা কোচ’ বলেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার বাইরেও কোচিং করিয়েছেন তিনি। ল্যাঙ্কাশায়ার, নেদারল্যান্ডস, এমনকি ভারতের পরামর্শক হিসেবেও কাজ করেছেন নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে।
বব সিম্পসনের সাফল্যময় ক্যারিয়ারের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৮ সালে তাকে 'অর্ডার অব অস্ট্রেলিয়ার' সদস্য করা হয় এবং ২০০৭ সালে অফিসার পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। ১৯৬৫ সালে ‘উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটার’ নির্বাচিত হন তিনি। এছাড়া আইসিসি হল অব ফেমেও জায়গা পেয়েছেন এই কিংবদন্তি। বব সিম্পসনের মৃত্যুতে অস্ট্রেলিয়া হারাল তাদের ক্রিকেট ইতিহাসের এক মহান পথপ্রদর্শককে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: