ট্রাম্প-মেদভেদেভ বাকযুদ্ধে উত্তপ্ত যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া সম্পর্ক
প্রকাশিত:
২ আগস্ট ২০২৫ ২০:৩২
আপডেট:
৩ আগস্ট ২০২৫ ০১:৫১

রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের সাম্প্রতিক হুমকির জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুইটি পারমাণবিক সাবমেরিন কৌশলগত এলাকায় মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন। শুক্রবার নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ এক পোস্টে এ ঘোষণা দেন ট্রাম্প।
শনিবার (২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে সামা টিভি।
পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, ‘আমি দুইটি পারমাণবিক সাবমেরিন নির্দিষ্ট অঞ্চলে মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছি, যদি মেদভেদেভের এই বেপরোয়া ও উসকানিমূলক বক্তব্যগুলো শুধু কথার মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘শব্দের গুরুত্ব অপরিসীম—তা অনিচ্ছাকৃত বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। আমি আশা করি এবার তেমন কিছু ঘটবে না।’
‘ডেড হ্যান্ড’ ইঙ্গিত এবং তীব্র প্রতিক্রিয়া
এই পদক্ষেপ আসে এমন এক সময়ে, যখন রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের উপ-চেয়ারম্যান মেদভেদেভ ‘ডেড হ্যান্ড’ নামে পরিচিত সোভিয়েত যুগের স্বয়ংক্রিয় পারমাণবিক প্রতিশোধ ব্যবস্থা উল্লেখ করে যুক্তরাষ্ট্রকে ঘুরে-ঘুরে হুমকি দেন।
মেদভেদেভ তার এক্স (পূর্বের টুইটার) পোস্টে ট্রাম্পকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘রাশিয়া ইসরাইল বা ইরান নয়। প্রতিটি আল্টিমেটাম যুদ্ধের পথে একটি পদক্ষেপ।’
উত্তেজনা ক্রমবর্ধমান
এই দ্বন্দ্ব শুরু হয় চলতি মাসের শুরুতে, যখন ট্রাম্প মেদভেদেভের পারমাণবিক হুমকি সংক্রান্ত মন্তব্যকে ‘তলোয়ার ঝনঝনানি’ বলে সমালোচনা করেন। পরে মেদভেদেভ ট্রাম্পের বক্তব্যকে ‘নাটকীয়’ আখ্যা দেন।
সম্প্রতি এক বক্তব্যে ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘রাশিয়ার হাতে ১০ থেকে ১২ দিন সময় আছে ইউক্রেনে অভিযান বন্ধ করার জন্য, নাহলে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আসবে।’ তবে রাশিয়ার পক্ষ থেকে এসব হুমকিকে গুরুত্ব না দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়।
মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক শীতল হচ্ছে
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প নিজেকে একজন ‘শান্তির দূত’ হিসেবে উপস্থাপন করেছিলেন এবং রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে ইতিবাচক সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সেই অবস্থান পরিবর্তিত হয়েছে।
ইউক্রেনে রুশ সেনাদের বর্বর হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প বলেন, রাশিয়ার কর্মকাণ্ড জঘন্য, এটা মেনে নেওয়া যায় না।
পারমাণবিক উত্তেজনায় উদ্বেগ বাড়ছে
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ট্রাম্প ও মেদভেদেভের প্রকাশ্য বাকযুদ্ধ বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক। মেদভেদেভের ‘ডেড হ্যান্ড’ প্রসঙ্গ বহু পর্যবেক্ষকের কাছে পারমাণবিক প্রতিশোধের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
তবে এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষই সরাসরি সামরিক সংঘাতের প্রস্তুতির ইঙ্গিত দেয়নি। ট্রাম্পের সাবমেরিন মোতায়েনের সিদ্ধান্তকে অনেকেই প্রতীকী পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন, যা মূলত রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রতিরোধ শক্তির বার্তা।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: