বিশ্বে ১ কোটি ৩৩ লাখ শিশু শরণার্থী
প্রকাশিত:
২৮ জুন ২০২৫ ২২:০৭
আপডেট:
২৯ জুন ২০২৫ ০৩:৫৮

বিশ্বজুড়ে দিন দিন বেড়েই চলেছে শরণার্থীদের সংখ্যা। বর্তমানে মোট ৪ কোটি ১০ লাখ শরণার্থী রয়েছেন। যাদের মধ্যে ১ কোটি ৩ লাখ বা প্রায় এক তৃতীয়াংশই শিশু। অর্থাৎ, প্রতি ১০০ জন শরণার্থীর মধ্যে ৩৩ জন শিশু। যাদের প্রত্যেকেরই আন্তর্জাতিক সুরক্ষার প্রয়োজন।
শনিবার আলজাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে দুই-তৃতীয়াংশ শিশু শরণার্থী মাত্র চারটি দেশ থেকে এসেছে-আফগানিস্তান (২৮ লাখ), সিরিয়া (২৭ লাখ), ভেনিজুয়েলা (১৮ লাখ) এবং দক্ষিণ সুদান (১৩ লাখ)।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শরণার্থী শিশুদের মধ্যে ৬৮ লাখ (৫১ শতাংশ) ছেলে এবং ৬৫ লাখ (৪৯ শতাংশ মেয়ে)। যদিও লিঙ্গের বিচারে সংখ্যার পার্থক্য খুব বেশি নয়, তবে শরণার্থী শিশুরা তাদের লিঙ্গ অনুসারে আলাদা ধরনের ঝুঁকিতে থাকে। মেয়েরা প্রায়ই সহিংসতা ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়।
অন্যদিকে ছেলেরা শারীরিক সহিংসতা ও নিপীড়নের ভিন্ন রূপের মুখোমুখি হয়। বিশেষত যারা পরিবার থেকে একেবারেই বিচ্ছিন্ন। শরণার্থী শিশুদের বয়স বিবেচনায় দেখা গেছে, ২০২৪ সালে ২৪ শতাংশ শিশু ছিল ০-৪ বছর বয়সি, ৪৪ শতাংশ ৫-১১ বছর বয়সি এবং ৩২ শতাংশ ১২-১৭ বছর বয়সি। ১৯৫১ সালে বিশ্বে মাত্র ২১ লাখ শরণার্থী ছিল। আজকের সংখ্যাটি তার চেয়ে ২০ গুণ বেশি।
আফগানিস্তানের ১৭ বছর বয়সি এক তরুণ সমীর (ছদ্মনাম)। তালেবানের ভয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয় ছেলেটি। এই আফগান তরুণের ব্রিটেনে পৌঁছাতে সময় লেগেছে দেড় বছর। এই দীর্ঘ যাত্রা তাকে নিয়ে গেছে সেই ১২ শতাংশ শরণার্থী শিশুর তালিকায়। যারা নিজেদের দেশ থেকে ২,০০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্ব অতিক্রম করেছে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে।
জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৯০ শতাংশ শরণার্থী শিশু কমপক্ষে ৫০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছে। অর্ধেকের বেশি শিশুই ৫০০ থেকে ১,০০০ কিলোমিটার দূরত্বে ভ্রমণ করেছে। যে পথ গাড়িতে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা বা বিমানে ২ ঘণ্টায় অতিক্রম করা যায়, সে পথ এই শিশুরা পায়ে হেঁটে, ভেঙে ভেঙে ট্রাকে, কিংবা নৌকায় করে বিপদসংকুল যাত্রা সম্পন্ন করে।
২০২৪ সালের তথ্য অনুযায়ী, শরণার্থীদের জন্য সবচেয়ে বেশি আশ্রয়দাতা দেশ ইরান (১৮ লাখ), তুরস্ক (১৪ লাখ) ও উগান্ডা (৯ লাখ ৬৫ হাজার)। এসব শরণার্থী শিশুরা ভয়াবহ মানসিক সমস্যার শিকার হচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। তাদের সুরক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক আহ্বানও জানিয়েছে সংস্থাটি।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: