সোমবার, ২৮শে জুলাই ২০২৫, ১৩ই শ্রাবণ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


প্রতিদিন অ্যাপেল সিডার ভিনেগার খাচ্ছেন? জানুন শরীরে কী ঘটছে


প্রকাশিত:
২৮ জুলাই ২০২৫ ১১:৫২

আপডেট:
২৮ জুলাই ২০২৫ ১৭:৫৮

ছবি সংগৃহীত

আপেল সিরকা বা আপেল সিডার ভিনেগার। যাবে অনেকেই সংক্ষেপে এ.সি.ভি. নামে চেনেন। এটি ঘরোয়া চিকিৎসার জনপ্রিয় একটি উপাদান। রান্নার পাশাপাশি শরীরের নানা সমস্যার প্রাকৃতিক সমাধান হিসেবেও এটি বহুদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গরম পানিতে আপেল সিরকা মিশিয়ে খেলে শরীরে নানা ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

নিচে এক মাস ধরে নিয়মিত আপেল সিরকা খেলে শরীরে যে পরিবর্তনগুলো দেখা দিতে পারে, তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা তুলে ধরা হলো—

১. রক্তে চিনি কমাতে সাহায্য করে

আপেল সিরকা শরীরের ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতে সাহায্য করে। ফলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নন, তাদের ক্ষেত্রেও এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, যা বার্ধক্য ও দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি কমায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, এটি রক্তে অক্সিডেটিভ চাপ কমাতে সহায়ক, বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিস বা চর্বিজনিত রক্তের সমস্যাতে ভুগছেন।

২. ওজন কমাতে সহায়ক

প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানিতে আপেল সিরকা খেলে পেট ভরা ভাব বেশি সময় থাকে, ফলে খাওয়ার পরিমাণ কমে। গবেষণায় বলা হয়েছে, এটি খাওয়ার পর অন্তত ২ ঘণ্টা পর্যন্ত ক্ষুধা কমায় এবং ৩ থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অতিরিক্ত নাশতা খাওয়ার প্রবণতা হ্রাস করে।

৩. হৃদযন্ত্রের সুস্থতা রক্ষা করে

বিশ্বজুড়ে হৃদরোগ মৃত্যুর অন্যতম বড় কারণ। নিয়মিত আপেল সিরকা খেলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল (এল.ডি.এল), ট্রাইগ্লিসারাইড এবং মোট কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যেতে পারে এবং ভালো কোলেস্টেরল (এইচ.ডি.এল)-এর মাত্রা বাড়তে পারে। যা হৃদযন্ত্রের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

৪. ত্বকের গুণগত মান বাড়ায়

প্রাকৃতিক অ্যাসিড হিসেবে আপেল সিরকা শুষ্ক ত্বক ও একজিমার মতো সমস্যায় উপকারী হতে পারে। প্রতিদিন পানিতে মিশিয়ে খেলে শরীরের ভেতর থেকে ত্বকের পিএইচ স্তর স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে এবং ত্বকের প্রতিরক্ষা স্তরকে মজবুত করে।

তবে যাদের ত্বকে কোনো ক্ষত বা সমস্যা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এটি ব্যবহার করা ঠিক নয়।

৫. জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে

আপেল সিরকা বহু বছর ধরে প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি ই. কোলাই এর মতো ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর।

অনেকেই এটি ব্যবহার করেন নখের ছত্রাক, উকুন, কানের সংক্রমণ এবং আঁচিল নিরাময়ে। এমনকি খাবার সংরক্ষণের ক্ষেত্রেও এটি ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে কার্যকর।

কীভাবে খাবেন এবং কতটা খাবেন?

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ডায়েটে আপেল সিরকা অন্তর্ভুক্ত করার সবচেয়ে নিরাপদ উপায় হলো রান্নার মধ্যে ব্যবহার করা। যেমন—সালাদের উপরে ছিটিয়ে দেওয়া বা ঘরোয়া মায়োনেজে মেশানো।

সরাসরি খাওয়ার ক্ষেত্রে, ১ থেকে ২ চা চামচ আপেল সিরকা এক গ্লাস (২০০–২৫০ মিলি) জলে মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে।

সতর্কতা জরুরি

অতিরিক্ত পরিমাণে আপেল সিরকা খেলে দাঁতের এনামেল ক্ষয়, পাকস্থলীর জ্বালা বা ওষুধের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তাই শুরুতে অল্প পরিমাণে খাওয়া এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিয়মিত গ্রহণ করাই বুদ্ধিমানের কাজ।

আপেল সিরকা কোনো জাদুকরি উপাদান নয়। তবে এটি নিয়মিত গ্রহণ করলে স্বাস্থ্যের উপর বহুমুখী ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। যেহেতু প্রতিটি মানুষের শারীরিক গঠন ও প্রয়োজন আলাদা, তাই এটি খাওয়ার আগে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ।

এসএন /সীমা

 


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top