শনিবার, ১৬ই আগস্ট ২০২৫, ৩১শে শ্রাবণ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


বিয়ের দাবিতে স্কুলশিক্ষকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন প্রবাসীর স্ত্রী


প্রকাশিত:
৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২২:৫৬

আপডেট:
১৬ আগস্ট ২০২৫ ০৩:৩৩

ছবি সংগৃহিত

শরীয়তপুরের ডামুড্যায় বিয়ের দাবিতে স্কুলশিক্ষকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন দুই সন্তানের জননী এক প্রবাসীর স্ত্রী। প্রায় আট মাস ধরে স্কুলশিক্ষক আক্তার হোসেনের সঙ্গে ওই নারীর পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করে বিয়ে না করায় স্কুলশিক্ষকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ওই নারী।

রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের চরপাতালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। আক্তার হোসেন ৫৫ নং বাহের চর হাওলাদার কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও চরপাতালিয়া গ্রামের হাসান আলী মাস্টারের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, আক্তার হোসেনের সঙ্গে ওই নারীর দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্ক ছিল। গত রমজানে যখন সবাই তারাবির নামাজ পড়তেন, তখন আক্তার হোসেনের ঘরে বসে তারা গল্প করতেন।

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল হালেম খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, কয়েকদিন আগে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বিষয়টি নিয়ে বসেছিলাম। কিন্তু আক্তার হোসেন না আসার কারণে আমরা কোনো সমাধানে পৌঁছাতে পারিনি। গত রমজানে তাকে সাবধান করে বলেছিলাম ওই নারীর সঙ্গে সম্পর্ক না রাখতে। কিন্তু সে আমাদের কথা শোনেনি।

আক্তার হোসেনের বাড়িতে অবস্থান নেওয়া ওই নারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আক্তার হোসেন সম্পর্কে আমার দেবর হয়। এই সম্পর্ক ধরে সে আমার বাবার বাড়িতেও গিয়েছিল। আমার স্বামী প্রবাসী। গত জানুয়ারি মাসে স্বামী বিদেশে চলে যাওয়ার পর আক্তার হোসেন আমার স্বামীকে পরামর্শ দেয় আমার ছেলেকে তার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করতে। তার কথা মতো ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করা হয়। স্কুল থেকে সে আমার সাথে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করে। প্রথমে আমি রাজি না হলেও সে জোড়াজুড়ি করলে একপর্যায়ে রাজি হই। এরপর বাড়ির জন্য নতুন টিভি কেনে আক্তার হোসেন। আমাকে টিভিটা দেখতে যেতে বলে। আমি আক্তারের বাড়িতে গেলে সে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে ভিডিও ধারণ করে রাখে। ওই ভিডিও দেখিয়ে জোড় করে আমাকে তার বাড়িতে নিয়মিত আসতে বলতো। বাড়িতে আসলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করতো। এরপর আমার ছেলেমেয়েকে পড়াশোনা করানোর নাম করে আমার বাড়িতে এসেও শারীরিক সম্পর্ক করত।

তিনি আরও বলেন, বিয়ে করবে বলে কিছুদিন আগে আমাকে ঢাকায় নিয়ে গিয়েছিল আক্তার হোসেন। সেখানে আক্তার আমাকে তার ভাই জব্বার হোসেনের বাড়িতে রেখে চলে আসে। পরে জব্বার হোসেন আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এ ঘটনা আমার স্বামীর বাড়ির লোকজন জেনে গেছে। স্বামী আমাকে ফোন করে বলেছে ডিভোর্স পেপার পাঠিয়ে দিয়েছে। আমি এখন স্বামীর বাড়ি, বাবার বাড়ি কোথাও যেতে পারি না। তাই আক্তার হোসেনের বাড়িতে এসেছি বিয়ের দাবিতে। হয় আমি আক্তারকে বিয়ে করব, নয়ত আক্তারের বাড়িতেই মরব। এই বাড়ি ছাড়া আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই আমার।

আক্তার হোসেনের মা ফাতেমা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি কিছুই জানি না। ওই মেয়ে আমার ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক আছে দাবি করে বাড়িতে এসে উঠেছে। আমি ওই মেয়েকে বুঝিয়ে বলেছিলাম যে ঢাকায় যাও, গার্মেন্টসে কাজ করে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করো। কিন্তু আমার কথা সে শুনল না, আমার মানইজ্জত সব নষ্ট করে দিলো। আমার ছেলে আক্তার হোসেন এখন কোথায় আছে, তা আমি জানি না।

বাহের চর হাওলাদার কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বশির আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সে তিন দিনের ছুটি নিয়ে স্কুলে আসেনি। শিক্ষা অফিস থেকে শুনতে পেলাম আক্তার হোসেন ১৫ দিনের ছুটি নিয়েছে। যে ঘটনার কথা লোক মারফত জানতে পেরেছি, এমন কিছু ঘটে থাকলে তা অবশ্যই নিন্দনীয়। একজন শিক্ষক এই কাজ করতে পারেন না।

ধানকাঠি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মাওলা রতন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আক্তার হোসেন ও ওই নারীর বিষয়টি নিয়ে আমরা বসেছিলাম। মেয়ে ছেলেকে বিয়ে করবে কিন্তু ছেলে বিয়েতে রাজি না হওয়াতে আমরা সমাধান করতে পারিনি। এখন ওই নারী আক্তার হোসেনের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান করছেন।

ডামুড্যা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার জালাল উদ্দীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, অসুস্থতা দেখিয়ে আক্তার হোসেন ১৫ দিনের ছুটি নিয়েছেন। তার নামে নৈতিক স্খলনের একটি বিষয় জানতে পেরেছি। কেউ অভিযোগ দিলে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর, প্রকৃত শিক্ষক এই ধরনের কাজ করতে পারেন না।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top