শিশুদের গ্যাস্ট্রিক-লিভার রোগ মোকাবিলায় গবেষণা ও আধুনিক চিকিৎসায় জোর
প্রকাশিত:
৮ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:৩৪
আপডেট:
৮ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:৫৭
শিশুদের খাদ্যাভ্যাসের দ্রুত পরিবর্তন, জাঙ্কফুড নির্ভরতা ও জীবনযাত্রার সংকট শিশুস্বাস্থ্যে নতুন ঝুঁকি তৈরি করছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই অবস্থায় এখনই প্রতিরোধে গবেষণা, চিকিৎসা ও জনসচেতনতায় সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি বলেও সতর্ক করেছেন তারা।
শনিবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর শহীদ আবু সাঈদ কনভেনশন সেন্টারে শিশুদের গ্যাস্ট্রিক, লিভার রোগ ও পুষ্টিজনিত সমস্যা প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় সর্বাধুনিক জ্ঞান বিনিময় এবং গবেষণার প্রসারে দুই দিনব্যাপী ৬ষ্ঠ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশ সোসাইটি অব পেডিয়াট্রিক গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি অ্যান্ড নিউট্রিশনের আয়োজনে এ সম্মেলনে অংশ নেন দেশ-বিদেশের ছয় শতাধিক শিক্ষক, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, চিকিৎসক ও শিক্ষার্থী।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতায় বিএমইউর ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, দেশে শিশুস্বাস্থ্যের বড় চ্যালেঞ্জ এখন দ্বিমুখী—একদিকে দীর্ঘস্থায়ী গ্যাস্ট্রিক ও লিভার রোগ, অন্যদিকে খাদ্যাভ্যাসের দ্রুত বদলে যাওয়া।
তিনি জানান, শিশুদের রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা ও গবেষণায় আমাদের যে সক্ষমতা তৈরি হচ্ছে, তা ধরে রাখতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জরুরি। স্থানীয় চিকিৎসকদের হাতে আধুনিক প্রযুক্তি ও বৈজ্ঞানিক জ্ঞান পৌঁছে দিতে এ ধরনের সম্মেলনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, বিএমইউ শিশু গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি গবেষণাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত গবেষণাগার ও বিশেষায়িত ইউনিট গড়ে তোলা হবে।
সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এএসএম বজলুল করিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ এবং প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার। স্বাগত বক্তব্য দেন মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মো. রোকনুজ্জামান এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কোষাধ্যক্ষ ডা. মো. আতিয়ার রহমান।
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ মনে করেন, অপুষ্টির পুরোনো সংকট কিছুটা কমলেও নতুন ঝুঁকি তৈরি হয়েছে শিশুদের অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আসক্তিতে। তিনি সতর্ক করেন—এ প্রবণতা এখনই নিয়ন্ত্রণে না আনলে ভবিষ্যতে তা দেশের শিশুস্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে চাপে ফেলবে।
বক্তারা জানান, সম্মেলনটি শিশুদের হেপাটাইটিস, ডায়রিয়া, ক্রনিক লিভার ডিজিজসহ নানা জটিল রোগ প্রতিরোধে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেবে। চিকিৎসকদের মধ্যে জ্ঞান বিনিময়, সর্বশেষ চিকিৎসা উন্নয়ন ছড়িয়ে দেওয়া এবং শিশুস্বাস্থ্য গবেষণার পরিসর বাড়ানো—সব দিক থেকেই এ আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ।
সেমিনারে বলা হয়, বিএমইউর শিশু গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগে এরইমধ্যে উন্নত চিকিৎসা, রোগ নির্ণয় এবং পুষ্টিসেবা চালু রয়েছে। উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমও নিয়মিত চলছে, যা ভবিষ্যতে শিশুস্বাস্থ্য নিরাপত্তাকে আরও শক্তিশালী করবে।
দুই দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলন বিশেষজ্ঞদের মতে, গবেষণা, আধুনিক চিকিৎসা, জনসচেতনতা এবং ভবিষ্যৎ নীতি প্রণয়নে একটি শক্ত ভিত্তি তৈরি করে গেল।
সম্পর্কিত বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: