মঙ্গলবার, ৫ই আগস্ট ২০২৫, ২১শে শ্রাবণ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


কোলেস্টেরল কেন বাড়ে, কিভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখবেন?


প্রকাশিত:
৬ আগস্ট ২০২০ ০০:৩৫

আপডেট:
৭ আগস্ট ২০২০ ০১:১৮

ছবি: সংগৃহীত

রক্তে অতিমাত্রায় কোলেস্টেরল হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই এটি নিয়ে কমবেশি সবাই খুব চিন্তিত থাকেন।

আমার কোন সমস্যা নাই তো? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলেই সবাই চেক করে দেখেন কোলেস্টেরল কতটা আছে। আমার হার্ট ভালো আছে তো? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েও সবাই চেক করে দেখে তাদের কোলেস্টেরল কতটা আছে। কিছু খেতে গেলেই চিন্তা হয় কোলেস্টেরল বাড়বে কিনা এ খাবারে।

কোলেস্টেরল শরীরের জন্য যতটুকু প্রয়োজন তার চেয়ে বেশি বেড়ে গেলে তা রক্তনালীর ভেতরে জমে রক্ত নালীতে ব্লক তৈরী করে রক্ত চলাচল ব্যাহত করে। এর ফলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, কিডনি ফেইলিউর, পংগুত্ব ইত্যাদি জীবন সংহারী রোগ হতে পারে।

কোলেস্টেরল কী?
কোলেস্টেরল হলো রক্তের চর্বি। রক্তের চর্বির রয়েছে নানান রকমভেদ। যেমন এইচডিএল, এলডিএল, ট্রাই গ্লিসারাইড, টোটাল কোলেস্টেরল ইত্যাদি। এইচডিএল কোলেস্টেরল শরীরের জন্য ভালো। সামুদ্রিক মাছ ও উদ্ভিজ্জ তেলে এইচডিএল কোলেস্টেরল থাকে। আর এলডিএল কোলেস্টেরল শরীরের জন্য খারাপ। এটি অনেক বেড়ে গেলে রক্তনালীতে ব্লক তৈরি করে। ট্রাইগ্লিসারাইডও খারাপ যদি অনেক বেড়ে যায়। এটি রক্ত নালীর ব্লক ছাড়াও প্যানক্রিয়াটাইটিস সহ বেশ কিছু সমস্যা তৈরী করতে পারে।

কোলেস্টেরল কেন বাড়ে?
বংশগত কারণে কোলেস্টেরল বাড়তে পারে। অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের ফলে কোলেস্টেরল বাড়তে পারে। এছাড়া হাইপোথাইরয়েডিজম নামক একটি হরমোনের রোগেও কোলেস্টেরল বাড়তে পারে। কিডনি ও লিভারের সমস্যায়ও কোলেস্টেরল বেড়ে যেতে পারে। চর্বিযুক্ত খাবার বেশি খেলে বাড়তে পারে। কিছু খাবার আছে যেগুলো রক্তের কোলেস্টেরল কমায় সেসব খাবার না খেলে কিংবা কম খেলেও কোলেস্টেরল বেড়ে যায়।

আপনার কোলেস্টেরল বেশি না কম?
আপনার রক্তের কোলেস্টেরল বেশি না স্বাভাবিক তা রক্ত পরীক্ষা করে দেখে নিতে পারেন। আমেরিকার ন্যাশনাল কোলেস্টেরল এডুকেশন প্রোগ্রাম এর এডাল্ট ট্রিটমেন্ট প্যানেলের সাম্প্রতিক গাইডলাইন অনুসারে আপনার এলডিএল ১০০ এর বেশি থাকলে তা ঝুঁকিপূর্ণ। যারা খুব বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অর্থাৎ যাদের হার্টের সমস্যা, প্রেসার ও ডায়াবেটিস আছে তাদের এলডিএল ৭০ এর কম রাখতে হবে। ট্রাই গ্লিসারাইড ১৫০ এর কম রাখার জন্য বলা হয়েছে উক্ত গাইডলাইনে। এইচডিএল ৪০ এর বেশি থাকলে ভালো। এটি ৩০ এর কম থাকা খারাপ। এটি যতো বেশি থাকবে ততো ভালো।

কোলেস্টেরল কমাতে কী খাবেন, কী খাবেন না:
শাক সবজি ফলমূল খাবেন। এতে কোলেস্টেরল থাকে না। রান্নায় রসুন ব্যবহার বাড়িয়ে দিন। রসুন এলডিএল কোলেস্টেরল কমায়। গরুর মাংস, খাসির মাংস, শুকরের মাংস, গলদা চিংড়ি, বাগদা চিংড়ি, কাঁকড়া, গিলা, কলিজা একদম খাবেন না। এতে রয়েছে প্রচুর এলডিএল কোলেস্টেরল৷ ডিম খাবেন। ডিমের কুসুমে যে কোলেস্টেরল রয়েছে তা শরীরের জন্য খারাপ নয়। মাখন তোলা দুধ খেতে পারেন। ছানা মিষ্টি এসব সম্ভব হলে না খাওয়াই ভালো। রান্নায় তেল কম দিবেন। তেলেভাজা পরাটা, পিয়াজ, বেগুনি, নানারকম তেলেভাজা খাবার সীমিত খাবেন। তবে খাটি সয়াবিন, সূর্যমুখী, বাদাম, ভুট্টা, জলপাই ও তিলের তেল স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এগুলো খেতে পারেন। তবে বেশি খেলে সেটা আবার খারাপ হবে। মোটকথা যে তেলই খান পরিমানে কম খেতে হবে। নারিকেল তেল ও পাম অয়েল পরিহার করাই শ্রেয়। এদুটো খারাপ কোলেস্টেরল এলডিএল বাড়াতে পারে।

ময়দার রুটি ও পাউরুটির চেয়ে আটার রুটি ভালো। আটার রুটিতে আঁশ আছে। তাছাড়া শাকসবজি ফলমূল ও যেকোন আঁশযুক্ত খাবার শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় এবং এগুলো এলডিএল কোলেস্টেরল হ্রাস করে। চিনি খাবেন না। চিনি কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায়। চিনিযুক্ত অন্যান্য খাবারও না খাওয়াই ভালো। চিনিযুক্ত কোমলপানীয়গুলোও পরিহার করুন। এ ধরনের পানীয় এলডিএল কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে।

ব্যায়াম করলেও কোলেস্টেরল কমে। দৈনিক ৩০ মিনিট হাঁটুন। বা অন্য যেকোন ব্যায়াম করতে পারেন।

কোলেস্টেরল কমাতে যে সকল খাবার খাওয়া একদম নিষেধ:
কলিজা, মগজ, মাছের ডিম। দুধের সর, ক্রীম, ঘি, মাখন, পনির। মার্জারিন, বনস্পতি ও নারিকেল তেল। মাংসের চর্বি ও হাঁস মুরগির চামড়া। চিংড়ি মাছ, কবুতর, গরু ও খাসির মাংস। চিনি, মিষ্টি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার ইত্যাদি একদম নিষেধ।

খাবার দাবার ও ব্যায়ামের পরও যাদের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে না থাকে তাদেরকে ঔষধ খেতে হবে। এক একজনের জন্য এক এক ধরনের ঔষধ উপযোগী। সেটা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে।

লেখক:


সম্পর্কিত বিষয়:

হার্ট অ্যাটাক কোলেস্টেরল

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top