মৃত্যুর তিনদিন পর মরদেহ উদ্ধার, মাদক কেড়ে নেয় অভিনেত্রীর প্রাণ
প্রকাশিত:
২৪ আগস্ট ২০২৫ ১২:৩২
আপডেট:
২৪ আগস্ট ২০২৫ ১৮:১৪

দেড় দশক আগে বিধাতার ডাকে সাড়া দিয়ে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন একসময়ের আলোচিত বলিউড অভিনেত্রী নলিনী জয়ওয়ন্ত। ৫০ ও ৬০-এর দশকের দিলীপ কুমার, অশোক কুমার, দেব আনন্দের মতো তারকাদের সঙ্গে একের পর এক হিট ছবিতে পর্দা কাঁপিয়েছেন। ক্যারিয়ারে যখন বলিউডের স্পটলাইট বাইরে চলে যান তখন অভিনেত্রীর জীবনও ডুবে যায় নিঃসঙ্গ অন্ধকারে।
২০১০ সালে মৃত্যুর তিন দিন পর প্রতিবেশীরা তাঁর মরদেহ উদ্ধার করেন। জানা যায় বহু বছর পরিবার ও সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন তিনি। আত্মীয়স্বজন বা শোবিজ অঙ্গনের কেউই কখনও তাঁর খোঁজ নেননি। অভিনেত্রীর মৃত্যুর পর দূর সম্পর্কের এক আত্মীয় তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন।
১৯২৬ সালে মুম্বাই শহরে জন্মগ্রহণ করেন নলিনী জয়ওয়ন্ত। খুব অল্প বয়সে অভিনয় জগতে পা রাখেন। ১৪ বছর বয়সে অভিনেত্রী নতুন-এর জন্মদিনে এক প্রযোজকের নজরে আসেন। এরপর তিনি ১৯৪১ সালে ‘রাধিকা’ ছবিতে অভিনয় করেন। মেহবুব খানের ‘বহেন’ ছবিতেও দেখা যায় তাঁকে। আশোক কুমারের সঙ্গে ‘সমাধি’ ছবিতে অভিনয় করে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে যান। ১৯৫৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘কালা পানি’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পান।
কিশোরী বয়সে পরিচালক বিরেন্দ্র দেসাইকে বিয়ে করেছিলেন নলিনী। বিরেন্দ্র অভিনেত্রীর থেকে বয়সে বড় ছিলেন এবং তাঁর সন্তানও ছিল। যার ফলে নলিনীর সঙ্গে তাঁর পরিবার সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল। পরিবার সম্পর্ক ছিন্ন করার পর পরিচালকের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। পরবর্তীতে অশোক কুমারের সঙ্গে নলিনীর সম্পর্ক নিয়ে চর্চা শুরু হয়। শোনা যায়, তাঁরা নেপালে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনাও করেছিলেন।
১৯৬৫ সালে ‘বম্বে রেস কোর্স’ ছবির পর অভিনয় থেকে অবসর নেন নলিনী। তবে প্রায় ১৮ বছর পর অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে ‘নাস্তিক’ ছবিতে তাঁর কামব্যাক মোটেই সুখকর ছিল না। সে কথা এক সাক্ষাৎকারে নিজেই বলেছিলেন। অভিনেত্রীর ভাষ্য, ‘এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ছিল। এরপর আর কখনও অভিনয়ের কথা ভাবিনি।’
সাংবাদিক ও আত্মীয় প্রণয় গুপ্ত নলিনী জয়ওয়ন্তের জীবনের কাহিনি বর্ণনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘একাকিত্ব, নিঃসন্তান জীবন আর মদ তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল। দ্বিতীয় স্বামী প্রভু দয়ালের মৃত্যুর পর তিনি সম্পূর্ণ একা হয়ে যান। চেম্বুরের ছোট্ট বাংলোয় পোষ্যদের সঙ্গেই দিন কাটাতেন।’ প্রণয় ওই সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেলেন, অভিনেত্রীর মৃত্যুর তিনদিন পর পোষ্যরা রাস্তায় চলে আসে। তখন প্রতিবেশীরা গিয়ে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: