চরম দুর্ভোগে গ্রামবাসী
ভেঙে যাওয়া সেতুর উপর বাঁশের ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো
 প্রকাশিত: 
                                                ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:০৯
 আপডেট:
 ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ২১:৫৩
                                                
 
                                        উজান থেকে নেমে আসা পানির তীব্র স্রোতে ভেঙে যাওয়া সেতুর উপর পাঁচ বছর ধরে বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে চলাচল করছেন বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষ। এই ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোই বর্তমানে তাদের একমাত্র ভরসা।
রোয়াংছড়ির নোয়াপতং ঝিরির ওপর নির্মিত ছিল একটি আরসিসি সেতু। এটি সোনাই মারমা পাড়া, সোনাই সেপ্রু পাড়া, ছাপুসে পাড়া, সোনাই আগা পাড়া এবং নগুখং পাড়ার প্রায় ৩০০ পরিবারের হাজারো মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম ছিল। কিন্তু নির্মাণের তিন বছরের মাথায় উজানের প্রবল স্রোতে সেতুটি ধসে পড়ে।
২০১৬-১৭ অর্থবছরে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছিল সেতুটি। ভেঙে যাওয়ার পর স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেরা বাঁশ দিয়ে তৈরি করেছেন একটি সাঁকো, যেটি দিয়ে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন স্কুলশিক্ষার্থী, কৃষক, বৃদ্ধসহ সাধারণ মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ার পর জরুরি প্রয়োজনে যানবাহন চলাচল করতে না পারায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কৃষকরা শাকসবজি ও ফসল কাঁধে নিয়ে পারাপার করছেন। বৃষ্টির সময় সাঁকো পানির নিচে তলিয়ে যায়, তখন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
উপজেলার জামছড়ি জুনিয়র হাইস্কুল ও বাঘমারা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন এই বাঁশের সাঁকো পার হয়ে বিদ্যালয়ে যান। নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলেন, ছোটরা একা সাঁকো পার হতে পারে না, অন্যের সহায়তা নিতে হয়। বৃষ্টি হলে পানি বাড়ে, তখন অপেক্ষা করতে হয়। অনেক সময় সাঁকো থেকে পড়ে কেউ কেউ আহত হয়।
গ্রামবাসী করুণারানী দাশ বলেন, বর্ষার সময় প্রবল স্রোতে সাঁকো ডুবে যায়। তখন ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠানো অসম্ভব হয়ে পড়ে।
মাহিন্দ্রা চালক সুজন তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, সেতুটি ভেঙে গেছে প্রায় চার-পাঁচ বছর আগে। এখন সবাই পায়ে হেঁটে পার হচ্ছেন। কোনো গাড়ি চলাচল করতে পারে না।
নোয়াপতং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চনুমং মার্মা বলেন, বছরের পর বছর যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় হাট-বাজার, হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসায় যাতায়াতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন অন্তত ৫-৬ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। একাধিকবার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বান্দরবান কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তাসাউর বলেন, ১০ বছর আগে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে বাঘমারা-বিলাইছড়ি সড়কে ওই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। পরে এলজিইডির আওতায় এলে আমরা জানতে পারি সেতুটি ধসে গেছে। ইতিমধ্যে ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি নতুন সেতু নির্মাণের প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।
সম্পর্কিত বিষয়:



 
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                            
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: