সোমবার, ১১ই আগস্ট ২০২৫, ২৭শে শ্রাবণ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


চোর সন্দেহে জামাই-শ্বশুর হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ৪


প্রকাশিত:
১১ আগস্ট ২০২৫ ১২:৩০

আপডেট:
১১ আগস্ট ২০২৫ ১৫:৪৭

ছবি সংগৃহীত

রংপুরের তারাগঞ্জে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে জামাই-শ্বশুর হত্যার ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারদের প্রত্যেকের বাড়ি ঘটনাস্থলের আশে পাশে। রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

সোমবার (১১ আগস্ট) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক।

গ্রেফতাররা হলেন— রফিকুল ইসলাম, আক্তারুল, এবাদত ও মিজানুর রহমান। তাদের বাড়ি সয়ার এলাকায়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, রূপলাল রবিদাস পেশায় জুতা সেলাই করতেন তারাগঞ্জ বাজারে। তিনি গিয়েছিলেন মেয়ের বিয়ের দিন-তারিখ ঠিক করতে মিঠাপুকুরের ছড়ান বালুয়া এলাকায়। সেখান থেকে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভাগ্নি জামাই প্রদীপ লালকে নিয়ে ভ্যানে করে বাড়ি ফেরার পথে সয়ার ইউনিয়নের বুড়িরহাট বটতলা মোড়ে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি তাদের পথরোধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সন্দেহভাজনেরা প্রদীপ লালের কালো ব্যাগ তল্লাশি করে ‘স্পিড ক্যানের’ বোতলে দুর্গন্ধযুক্ত পানীয় এবং কিছু ওষুধ পান। বোতলের ঢাকনা খুলে গন্ধ শুকতে গিয়ে বুড়িরহাট এলাকার মেহেদী হাসানসহ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়ে। এতে উত্তেজিত হয়ে রূপলাল ও প্রদীপ লালকে বুড়িরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে নিয়ে পাঁচ-সাতশ মানুষ লাঠিসোঁটা ও লোহার রড দিয়ে মারধর করে। মারধরের এক পর্যায়ে তাদের মাঠেই ফেলে রাখে। পরে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে তাদের তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক রূপলালকে মৃত ঘোষণা করেন এবং প্রদীপ লালকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির জন্য পাঠান। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রদীপ লাল ভোর ৪টায় মারা যান।

এ ঘটনায় রোববার দুপুরে নিহত রূপলালের স্ত্রী ভারতী রানী বাদী হয়ে তারাগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মামলায় ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

এদিকে, রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রূপলালের লাশ বাড়িতে আনার পর তা মহাসড়কের বেলতলী এলাকায় রেখে বিক্ষোভ শুরু করেন এলাকাবাসী। এতে মহাসড়কের দুই ধারে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। এসময় বিক্ষোভকারীরা দ্রুত আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের দাবি জানান। পরে দোষিদের যথাযথ বিচারের আওতার আনার আশ্বাসে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ইউএনওর অনুরোধে সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে এলাকাবাসী।

বিক্ষোভকারীরা বলেন, রূপলাল একজন নিরপরাধ ব্যক্তি। তাকে মিথ্যে অপবাদ দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। মারধরের সময় বাঁচার জন্য সে অনেক আকুতি মিনুতি করেছে। সে পুলিশকে, সেনাবাহিনীকে দেওয়ার অনুরোধ করেছিল। কিন্তু কেউ তার কথা শোনেনি। তাকে পিটিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এই হত্যার বিচার চাই।

তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, দুইজন নিহতের ঘটনায় নিহত রূপলালের স্ত্রী ভারতী রানী বাদী হয়ে ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। ইতোমধ্যে অভিযান পরিচালনা করে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তাছাড়া এই ঘটনায় যাতে কোনো নিরীহ কেউ হয়রানির শিকার না হয় এজন্য তদন্ত কার্যক্রম চলছে।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top