স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে প্রেমিকসহ ছয়জনের যাবজ্জীবন
 প্রকাশিত: 
                                                ২৮ মে ২০২৫ ১৯:১১
 আপডেট:
 ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ০০:৩০
                                                
 
                                        পঞ্চগড়ে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (২৮ মে) দুপুরে পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মাসুদ পারভেজ এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে প্রত্যেককে আরও এক বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, আটোয়ারী উপজেলার মালগোবা এলাকার আমিনুর রহমানের ছেলে হাসান আলী (২৫), পুরাতন আটোয়ারী এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৫১), একই এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে আমিনুল ইসলাম (৩০), কৈলাশ চন্দ্রের ছেলে শ্রী অমর চন্দ্র (৩৮), খাজিম উদ্দিনের ছেলে নজরুল ইসলাম (৪৩) ও একই উপজেলার ফতেহপুর এলাকার খামির উদ্দিনের ছেলে সবুজ আলী (৩৩)।
পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জাকির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন। আসামি হাসানের সঙ্গে ওই স্কুলছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ২০২২ সালের ৬ আগস্ট ওই স্কুলছাত্রী পঞ্চগড় শহরে হাসানের সঙ্গে দেখা করতে আসে। এসময় হাসান বেড়ানোর কথা বলে তার বন্ধু রাজুসহ ওই স্কুলছাত্রীকে মোটরসাইকেল করে আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের পুরাতন আটোয়ারী বন্দরপাড়া গ্রামের পশ্চিম পার্শ্বে কাজী অ্যান্ড কাজীর একটি জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে যায়। জঙ্গলের পাশে বেড়ার তৈরি কম্পোষ্ট সারের ঘরে রাত আটটার সময় জোরপূর্বক পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় আসামি সাইফুল, সবুজ, আমিনুল, শ্রী অমর ও নজরুল ঘটনাস্থলে এলে হাসান ও রাজু ওই স্কুলছাত্রীকে রেখে পালিয়ে যায়। এ সময় ওই স্কুলছাত্রী তাদের কাছে সাহায্য চাইলে তারা তাকে সেখান থেকে বের করে পাশের জঙ্গলে নিয়ে যায় এবং তারাও পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে। পরে আসামি শ্রী অমর ওই স্কুলছাত্রীকে জঙ্গল থেকে রাস্তায় নিয়ে এসে পালিয়ে যায়।
পরে স্থানীয়রা ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরদিন আটোয়ারী থানায় ওই ৭ জনকে আসামি করে মামলা করে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা। দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া ও সাক্ষিদের সাক্ষ গ্রহণের পর বুধবার ৬ আসামির উপস্থিতিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে বাদীপক্ষ।
পঞ্চগড় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জাকির হোসেন বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা সন্দেহাতিতভাবে আমরা আদালতে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আদালত ৬ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১ লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করেছেন। তবে মামলার আরেক আসামি রাজু কিশোর হওয়ায় পৃথক আদালতে তার বিচারক কার্য চলমান রয়েছে। আমরা এই রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করছি।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসান হাবিব বলেন, আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।
সম্পর্কিত বিষয়:



 
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                            
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: