আধিপত্য বিস্তারে দুই গ্রুপের ককটেল বোমা বিস্ফোরণ, আহত ১৫
 প্রকাশিত: 
                                                ৫ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৪৪
 আপডেট:
 ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:০২
                                                
 
                                        শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের কাজিয়ারচর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সালাউদ্দিন মাস্টার ও জলিল মাদবর গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে শতাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ১৫ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজনের হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এছাড়াও বোমার আঘাতে একজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
শনিবার (৫ এপ্রিল) সকালে জাজিরা উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নের কাজিয়ারচরে এ সংঘর্ষ শুরু হয়।
এ ঘটনায় আহতরা হলেন, কাজিয়ারচর দাইমদ্দিন খলিফা কান্দির বাসিন্দা কালাম খানের ছেলে মারুফ(২৫), জামাল মাদবর কান্দি এলাকার বাসিন্দা হযরত আলীর মেয়ে জোৎস্না (২৫), মুন্সি কান্দি এলাকার বাসিন্দা আলী হোসেনের স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৫৫), মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার বেজগাঁও এলাকার বাসিন্দা রাজ্জাক মাদবরের স্ত্রী বিনা (৪৫), বিলাসপুরের আহসান উল্লাহ মুন্সীর কান্দির বাসিন্দা সেকান্দার মুন্সীর ছেলে হাসান মুন্সী (৫০), দাইমদ্দিন খলিফা কান্দি গ্রামের বাসিন্দা হারুন খলিফার ছেলে সজিব (২২), বুধাইরহাট মুলাই বেপারীর কান্দি এলাকার বাসিন্দা রহমান খানের ছেলে নাইম (১৯), একই এলাকার বাসিন্দা মজিবর মাদবরের ছেলে সাকিব (১৯), মামুন খার ছেলে কামাল (১৯), পেকান সরদারের ছেলে বিজয় (১৯), জহুরদ্দিন বেপারীর ছেলে রেজাউল বেপারী (১৯), কাজিয়ারচর আলীমউদ্দিন মাদবর কান্দি এলাকার বাসিন্দা সামসুদ্দিন মাদবরের ছেলে শহরআলী (৫০), আহসানউল্লাহ মুন্সী কান্দি এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী খানের ছেলে রিফাত (১৯), নাওডোবা ইউনিয়নের হাজী জৈনদ্দিন মাদবর কান্দির বাসিন্দা মহিজদ্দিন করালের ছেলে আবু আলেম (৪২) ও বিলাসপুরের মুলাই বেপারী কান্দির বাসিন্দা দিনইসলাম বোপরীর ছেলে শুভ বেপারী (১৯)।
আহতদের মধ্যে গুরতর অবস্থায় মারুফ ও হাসান মুন্সীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে এবং শহর আলী নামে একজন জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছেন। বাকি আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল থেকে চলে গেছে।
বিষয়টি নিয়ে জাজিরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দুলাল আকন্দ বলেন, বিলাসপুরের কাজিয়ারচরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিলাসপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস বেপারী ও যুবলীগ নেতা আব্দুল জলিল মাদবরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে এলাকায় একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত বছরের ৫ আগস্টের পর পুলিশ জাজিরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও বিলাসপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. কুদ্দুস বেপারী ও বিলাসপুর ইউনিয়নের যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও পরাজিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী জলিল মাদবরকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠায়। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরেছিল। তবে কুদ্দুস বেপারীর সমর্থক ও মৎসজীবী লীগ নেতা সালাউদ্দিন মাস্টার ও জলিল মাদবরের গ্রুপ এ সংঘর্ষের এমন ঘটনা ঘটনোয় জনমনে আবার অস্বস্তি সৃষ্টি হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনার খবর পেয়ে জাজিরা থানা পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
হাসপাতালে ভর্তি শহর আলী মাদবর বলেন, আমি ঢাকায় থাকি। কাজিয়ারচর এলাকায় মারামারি দেখতে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে আমাকে ধরে এনে বেদম মারধর করেছে। এছাড়া আমি কিছুই জানি না।
বিষয়টি জানতে সালাউদ্দিন মাস্টার ও জলিল মাদবরের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বিলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদ্দুস বেপারী বলেন, কাজিয়ারচর এলাকায় সালাউদ্দিন মাস্টার ও জলিল মাদবর গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে পেরে আগেই পুলিশকে জানিয়েছিলাম। এ ঘটনায় আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
সম্পর্কিত বিষয়:



 
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                            
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: