শুক্রবার, ১৭ই মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


কোন মাস্ক পরে আপনি কতটা সুরক্ষিত?


প্রকাশিত:
২১ এপ্রিল ২০২১ ২১:৪৭

আপডেট:
১৭ মে ২০২৪ ১৫:৪৭

ছবি: সংগৃহীত

করোনার গ্রাস থেকে বাঁচতে মাস্ক পরা একেবারে বাধ্যতামূলক। কিন্তু, পরবেন কোনটা? কাপড়ের মাস্ক, সার্জিক্যাল মাস্ক থেকে এন-৯৫। বাজারে মাস্কের ছড়াছড়ি। কিন্তু কোন মাস্ক কতটা নিরাপদ? কত বারই বা ব্যবহার করা যাবে। করোনা-হানার এতদিনেও মাস্ক নিয়ে ধোঁয়াশা যেন কাটছেই না।

মাস্ক পরা নিয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে করা হয়েছে মাস্ক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা। এক নজর দেখে জেনে নিন।

ভাল্‌ভ-যুক্ত এন-৯৫ মাস্ক পরা পুরোপুরি নিরাপদ নয়। ভাল্‌ভের ফিল্টার বাইরে থেকে ভাইরাস প্রবেশ আটকে দেয়। এতে মাস্ক পরিহিতের সুবিধা হলেও তা অন্যদের বিপাকে ফেলতে পারে। কারণ, ভাল্‌ভ-যুক্ত এন-৯৫ মাস্ক পরা ব্যক্তিরা করোনাভাইরাসের বাহক হলে, তার নিঃশ্বাসের মধ্যে দিয়ে তা বেরিয়ে অন্যদের সংক্রমিত করতে পারে।

ভাল্‌ভ নেই, এমন এন-৯৫ মাস্ক পরা যেতেই পারে। এই ধরনের মাস্ক করোনাভাইরাসের পাশাপাশি বায়ুবাহিত ধূলিকণা ও সূক্ষ্ম জলকণা থেকে সুরক্ষা দেয়। ভাল্‌ভ নেই এমন এন-৯৫ মাস্কের ভাইরাস প্রতিরোধের কার্যকারিতা তাই অনেক বেশি, প্রায় ৯৫ শতাংশ।

ভাল্‌ভহীন এন-৯৫ মাস্ক ছাড়াও এফএফপি (ফিল্টারিং ফেস পিস)-২, এফএফপি-১ এবং এফএফপি-৩ মাস্কও তুলনামূলক ভাবে বেশ সুরক্ষিত। এফএফপি-২ মাস্কের কার্যকারিতা প্রায় ৯৪ শতাংশ। অন্য দিকে, প্রায় আশি শতাংশ ভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারে এফএফপি-১ মাস্ক। তবে এফএফপি-৩ মাস্কের কার্যকারিতা এ সবের মধ্যে সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৯৯ শতাংশ।

এন-৯৫ বা এফএফপি জাতীয় মাস্ক তো পরলেন। কিন্তু, তা ঠিক কত বার ব্যবহার করা যাবে? বিজ্ঞানীদের একাংশের দাবি, জলে ধোয়া হলে এ ধরনের মাস্কের কার্যকারিতা হ্রাস পেয়ে যায়। এবং পাঁচ বারের বেশি তা কখনই ব্যবহার করা উচিত নয়।

এন-৯৫ বা এফএফপি জাতীয় মাস্ক তুলনামূলক ভাবে দামি হওয়ায়, তার বদলে অনেকেই সার্জিক্যাল মাস্ক পরেন। সার্জিক্যাল মাস্কের কার্যকারিতা ৯৫ শতাংশের বেশি হলেও তা এক বারের বেশি ব্যবহার করা উচিত নয় বলে চিকিৎসকদের মত। এই ধরনের মাস্ক বড় জলকণা বা দেহ বর্জিত বিপজ্জনক তরলের ছিটে থেকে সুরক্ষা দেয়। সুরক্ষা দেয় করোনাভাইরাসের হাত থেকেও।

এন-৯৫ বা এফএফপি অথবা সার্জিক্যাল মাস্ক ছাড়াও কাপড়ের বিভিন্ন ধরনের মাস্কে বাজার ছেয়ে গিয়েছে। তবে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, কাপড়ের মাস্কে কতটা সুরক্ষিত থাকা যায়, তা শতাংশের হিসেবে বলা সম্ভব নয়। তবে একেবারে কোনো মাস্কের সুরক্ষা না থাকার থেকে বরং কাপড়ের মাস্ক পরা ভালো।

তবে মাস্কের বদলে গামছা, রুমাল বা ওড়না দিয়ে নাক-মুখ ঢাকা একেবারেই সুরক্ষিত নয়। কাপড়ের মাস্কে বায়ুবাহিত ধূলিকণা এবং সূক্ষ্ম জলকণা থেকে আংশিক সুরক্ষা প্রদান করে।

কাপড়ের মাস্ক এক বারের বেশি ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে প্রতি বার ব্যবহারের পর তা গরম পানিতে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে এবং কাপড়ের মাস্ক ছিঁড়ে গেলে তা ব্যবহার করা উচিত নয়।

নানা ধরনের মাস্ক নিয়ে কথা তো হলো। তবে মাস্ক ব্যবহার করলেই হলো না। তা ব্যবহার করার আগে-পরে কিছু নিয়মও মেনে চলতে হবে।

যেকোনো ধরনের মাস্ক পরার আগে সাবান বা অ্যালকোহলযুক্ত স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে। এর পর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হাতে মাস্ক পরতে হবে। সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করে মাস্ক পরলেই হবে না। ব্যবহার করার আগে অবশ্যই দেখে নিতে হবে, মাস্ক যেন ছেঁড়া বা ফাটা না হয়।

মাস্ক পরলেও অনেকেই তা নিয়ে সতর্ক নন। ভুলে যাবেন না, মুখ-নাক রক্ষা করার জন্যই মাস্ক পরেছেন। তাই তা দিয়ে যেন সব সময় নাক-মুখ ঢাকা থাকে, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। অনেকেই মাস্ক পরে তা নাক বা থুতনির নিচে তা ঝুলিয়ে রাখেন। এটা করা একেবারেই উচিত নয়।

বার বার মাস্কে হাত দেওয়া একেবারেই বাঞ্ছনীয় নয়। সেই সঙ্গে মনে রাখবেন, মাস্কের সামনের অংশ স্পর্শ করা যাবে না। নিতান্তই যদি মাস্কের সামনে হাত দেওয়ার প্রয়োজন হয়, তবে আগে সাবান দিয়ে হাত পরিষ্কার করে নিন। মাস্ক স্পর্শ করার পরে ফের হাত পরিষ্কার করুন।

নোংরা বা ভেজা মাস্ক যাতে কোনোভাবেই ব্যবহার করতে না হয়, সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। সেই সঙ্গে অন্যের ব্যবহৃত মাস্কে হাত দেবেন না।


সম্পর্কিত বিষয়:

মাস্ক

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top