বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের ভোট সম্পন্ন, জরিপে এগিয়ে বিজেপির জোট
প্রকাশিত:
১১ নভেম্বর ২০২৫ ২১:১১
আপডেট:
১২ নভেম্বর ২০২৫ ০০:২৭
দ্বিতীয় ধাপের ভোট গ্রহণের মাধ্যমে শেষ হলো ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহারের বিধানসভা নির্বাচন। মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকেই শুরু হয়ে চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। এ দফায় রাজ্যের ২০টি জেলার ১২২টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়। এতে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন ১ হাজার ৩০২ জন প্রার্থী।
বিহারের নির্বাচন কমিশন প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, প্রথম দফার পর দ্বিতীয় দফাতেও রেকর্ড ভোট পড়েছে। প্রাথমিক হিসাবেই ৬৭ শতাংশ পেরিয়ে গেছে। প্রথম দফায় ১৮টি জেলায় মোট ১২১টি আসনে ভোটের হার ছিল ৬৫ শতাংশের বেশি। অর্থাৎ দুই পর্ব মিলিয়ে ৬৬-৬৮ শতাংশ ভোট পড়তে পারে, যা সর্বকালের রেকর্ড। এর আগে ২০০০ সালে সর্বোচ্চ ভোট পড়েছিল ৬২ শতাংশ। এবার সেই হারকেও ছাপিয়ে গিয়েছে বিহার।
এদিকে আগামী শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) ফলাফল ঘোষণার কথা থাকলেও দ্বিতীয় তথা শেষ দফার ভোটগ্রহণের পরে অধিকাংশ বুথফেরত জরিপে সামগ্রিক ভাবে আরজেডি-কংগ্রেস-বামেদের ‘মহাগঠবন্ধন’-এর তুলনায় বেশ কিছুটা এগিয়ে বিজেপির নেতৃত্বধীন জোট— এনডিএ। এতে বিহারে আরও একবার প্রত্যাবর্তন হতে পারে এনডিএর। সব ঠিক থাকলে ফের মুখ্যমন্ত্রীর আসনে আবারো বসতে যাচ্ছেন নীতীশ কুমার।
চাণক্য স্ট্র্যাটেজিসের এক্সিট পোল বলছে, বিহারে এনডিএ জিততে পারে ১৩০-১৩৫ আসন। মহাজোটের দখলে যেতে পারে ১০০-১০৮ আসন। অন্যান্যদের দখলে যেতে পারে ৩-৫ আসন।
দৈনিক ভাস্করের এক্সিট পোল বলছে, এনডিএ জিততে পারে ১৪৫-১৬০ আসন। মহাজোট জিতবে ৭৩-৯১ আসন। প্রশান্ত কিশোরের জন সুরাজ পার্টির খাতা খোলা নিয়েই সংশয় রয়েছে। তারা সর্বোচ্চ ৩ আসন জিততে পারে। অন্যান্যরা জিততে পারে ৫-৭ আসন।
জেভিসি পোল বলছে, বিহারে নীতীশ কুমারের নেতৃত্বে এনডিএ ১৩৫-১৫০ আসন জিততে পারে। মহাজোট ৮৮-১৩৩ আসন জিততে পারে। জন সুরাজ ১টি আসন জিততে পারে। অন্যান্যরা জিততে পারে ৩-৬ আসন।
পিপলস পালসের এক্সিট পোল বলছে, এনডিএর ঝুলিতে যেতে পারে ১৩৩-১৫৯ আসন। মহাজোট ৭৫-১০১ আসন জিততে পারে। জন সুরাজ ০-৫ আসন জিততে পারে। অন্যান্যদের দখলে যেতে পারে ২-৮ আসন।
প্রসঙ্গত, এক্সিট পোলই নির্বাচনের সঠিক ফলাফল নয়, এটি বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে করা অনুমান মাত্র। অনেক ক্ষেত্রেই এ ধরনের বুথফেরত বা প্রাক নির্বাচনী জনমত সমীক্ষা মেলে না। তবে মিলে যাওয়ার কিছু উদাহরণও রয়েছে। এবারের নিবার্চনের আনুষ্ঠানিত ফলাফলে জন্য অপেক্ষা করতে হবে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত।
যদিও ইতিহাস বলছে এর আগে যতবার ৫ শতাংশের বেশি ভোট বেড়েছে, প্রতিবারই সরকার বদল হয়েছে বিহারে। ১৯৬৭ সালে ভোট বেড়েছিল ৭ শতাংশ। ৪৪.৫ শতাংশ থেকে সেবার ভোট বেড়ে হয় ৫১.৫ শতাংশ। সেবার প্রথমবার কংগ্রেস হেরে প্রথম জোট সরকার গঠন হয়। ১৯৮০ সালে ভোটের হার ৫০.৫ শতাংশ থেকে বেড়ে হয় ৫৭.৩ শতাংশ। সেবারও ভোট বৃদ্ধি প্রায় ৭ শতাংশ। ক্ষমতা ফিরে পায় কংগ্রেস। ১৯৯০ সালে ৫৬.৩ শতাংশ থেকে ভোট বেড়ে হয় ৬২ শতাংশ। সেবার কংগ্রেসকে বিদায় দিয়ে প্রথমবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হন লালুপ্রসাদ যাদব।
এবার ভোটের হার বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, ভোটের এই বাড়তি হার বদলের ইঙ্গিত কি? ভোট বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, কোনও রাজ্যে ভোটের হার বাড়ার অর্থ সেই রাজ্যের সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া বইছে।
বিহারের ভোট বিশেষজ্ঞরাও বলেন, ভোটের হার যত বেশি, পরিবর্তনের হাওয়া তত জোরাল।
এনডিএ শিবির অবশ্য বলছে, বিহারের মানুষের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ এই ভোটের হার। মানুষের আস্থা এখনো এনডিএর ওপর অটুট আছে।
সূত্র: এনডিটিভি, আনন্দবাজার
সম্পর্কিত বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: