রবিবার, ১৯শে মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


ব্রেন টিউমারের লক্ষণ ও চিকিৎসা


প্রকাশিত:
৮ জুন ২০২১ ২৩:১৩

আপডেট:
১৯ মে ২০২৪ ০৯:০৮

ছবি: সংগৃহীত

সাধারণত মস্তিষ্কের টিউমারকেই ব্রেন টিউমার বলা হয়। যেকোনো বয়সেই ব্রেন টিউমার হতে পারে। কিছু টিউমারের সূত্রপাত মস্তিষ্কেই। এদের বলে প্রাইমারি ব্রেন টিউমার।

৮ জুন বিশ্বজুড়ে পালিত হয় ব্রেন টিউমার দিবস। ১৯৯৮ সালে জার্মান ব্রেন টিউমার অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি দাতব্য সংস্থা গঠিত হয়। ২০০০ সাল থেকে এই সংস্থার উদ্যোগে বিশ্বব্যাপী পালিত হয়ে আসছে ব্রেন টিউমার দিবস।

ব্রেন টিউমার একটি অত্যান্ত জটিল এবং সংযোজনশীল অঙ্গের টিউমার। তাই রোগটির চিকিৎসা পদ্ধতিও অনেক জটিল ও ক্ষেত্রবিশেষ অনেক ব্যয়বহুলও। কোন কোন ক্ষেত্রে ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা করেও কাঙ্ক্ষিত ফল লাভ করা যায় না। তাই মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতেই এ দিবষটি পালন করা হয়।

টিউমার কী?

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রবিউল করিম বলেন, টিউমার হচ্ছে শরীরের যেকোনো জায়গায় বা অঙ্গে কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। এই টিউমার মস্তিষ্কের ভেতরে হলে সেটাকে আমরা ব্রেন টিউমার বলি।

ব্রেন টিউমার দুই রকমের হতে পারে। বিনাইন বা শিষ্ট টিউমার ও ম্যালিগন্যান্ট বা দুষ্টু টিউমার। কিছু ব্রেন টিউমারের হয় শরীরের অন্য কোনো স্থানের টিউমার থেকে। এটাকে সেকেন্ডারি বা মেটাস্টাটিক ব্রেন টিউমার বলা হয়।

ব্রেন টিউমার রোগীর লক্ষণ:

ব্রেন টিউমারের লক্ষণ নানা ধরণের। প্রধান বা স্বাভাবিক লক্ষণ মাথাব্যথা। এই মাথাব্যথা রোগীর কর্মকাণ্ডের সাথে তীব্র হয়। অর্থাৎ রোগী বিশ্রামে থাকলে মাথাব্যথা কম থাকে। আর কোন কাজ করলে তীব্রতা বাড়ে। অনেক সময় ভোরে মাথাব্যথাটা বেশি হয়।

পাশাপাশি রোগীর বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া এবং দৃষ্টিশক্তি ক্রমশ কমে যাওয়াকে আমরা সব টিউমারের ক্ষেত্রে লক্ষণ হিসেবে ধরতে পারি।

এ ছাড়াও অনেক সময় রোগীর অন্য লক্ষণও দেখা দিতে পারে। রোগীর খিঁচুনি হতে পারে অথবা শরীরের যেকোনো একদিকের হাত বা পা দুর্বল বা অবশ হয়ে যেতে পারে। আবার তার মানসিক অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে অর্থাৎ তার আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা দেবে।

ব্রেন টিউমারের ঝুঁকিতে কারা আছেন? এ রকম করে কাউকে নির্দিষ্ট করা যায় না। যেকোন মানুষ ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হতে পারেন।

ব্রেন টিউমার নির্ণয়:

ওপরের লক্ষণগুলো দেখা দিলে যথাসম্ভব দ্রুত নিউরোমেডিসিন বা নিউরোসার্জারি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। রোগ নির্ণয়ে নিচের পরীক্ষাগুলো সহায়ক:

ব্রেনের সিটিস্ক্যান ও এমআরআই

স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা দেখার জন্য ইলেকট্রো এনকেফালোগ্রাফি বা ইইজি

স্নায়ুতন্ত্রের পরিবহন ক্ষমতা বা নার্ভ কন্ডাকশন টেস্ট বা ইলেকট্রোমায়োগ্রাফি

সিটি গাইডেড এফএনএসি

তবে এমআরআই পদ্ধতি সব থেকে আধুনিক এবং ব্রেন টিউমার নির্ণয়ের জন্য উন্নত পরীক্ষা।

ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা:

ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা অত্যান্ত জটিল। চিকিৎসা নির্ভর করে টিউমারের ধরন, তীব্রতা, আকার ও অবস্থানের ওপর। সার্জারি, কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি এর মূল চিকিৎসা। লক্ষণের ওপর ভিত্তি করে কিছু ওষুধ দেওয়া হয়। যেমন: খিঁচুনি বন্ধ করার ওষুধ, বমির ওষুধ ইত্যাদি।

ব্রেইন টিউমারের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। সাধারণভাবে প্রশ্ন আসে, বাংলাদেশে ব্রেন টিউমার চিকিৎসা ব্যবস্থাটা কেমন?

দেশের বড় শহরগুলোতে যেসব হাসপাতাল আছে, সেখানে সফলভাবে এর চিকিৎসা করা হচ্ছে। বর্তমানে দেশে যেকোন ধরনের ব্রেন টিউমারের অপারেশন করা সম্ভব। অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশে অনেক কম খরচে এ রোগের চিকিৎসা করা যায়। এমনকি আমাদের পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের থেকেও কম খরচে ব্রেন টিউমার রোগের চিকিৎসা করা যায়।

তবে আমাদের দেশে এই রোগের চিকিৎসাটা আরও সহজ করতে দরকার সম্মিলিত প্রচেষ্টা। চিকিৎসার জন্য ফান্ড গড়ে তোলা, পারস্পরিক সহযোগিতার মনোভাব, আক্রান্তদের মানসিকভাবে শক্তি জোগানো, সুস্থদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে এ রোগের প্রতিরোধ সম্ভব।

এসব নিয়মকানুন আমরা সম্পন্ন করতে পারলে উপজেলা পর্যায়েও এ রোগের চিকিৎসা করা সহজ হবে।

সূত্র: ডক্টর টিভি


সম্পর্কিত বিষয়:

ব্রেন টিউমার

আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top