মঙ্গলবার, ২৩শে সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৭ই আশ্বিন ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


জানালেন আবিদুল ইসলাম খান

ছাত্রদলের চোখে ডাকসু নির্বাচনের ১১ অনিয়ম


প্রকাশিত:
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:০৪

আপডেট:
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৩:৪৮

ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ফলাফল ও অন্যান্য প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রদল মনোনীত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এই অভিযোগগুলো তুলে ধরেন।

আবিদুল দাবি করেন, নির্বাচন চলাকালীন ও ফল ঘোষণার পর যেসব অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে, তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন যথাযথ পদক্ষেপ না নিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, আমরা যখন অভিযোগ দিয়েছি, প্রশাসন তখন কালক্ষেপণের পথ বেছে নিয়েছে। আমাদের বক্তব্য উপেক্ষা করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আবিদুল মোট ১১টি বড় অনিয়মের কথা তুলে ধরেন। ১. ভোটার না আসার আগেই স্বাক্ষর ও ভোট প্রদান: ভোটারদের অনুপস্থিতিতেই তালিকায় স্বাক্ষর দিয়ে নির্দিষ্ট প্যানেলের পক্ষে ব্যালট পেপার সরবরাহ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ভোটার তালিকা ও সিসিটিভি ফুটেজ চেয়ে আবেদন করা হলেও প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি।

২. ব্যালট পেপারে ক্রমিক নম্বরের অনুপস্থিতি: ব্যালটে ক্রমিক নম্বর না থাকায় কারচুপির সুযোগ তৈরি হয়। ব্যালট ছাপা, বিতরণ ও ফেরতের হিসাবও প্রকাশ করা হয়নি।

৩. ব্যালট ছাপার জায়গা গোপন: কোন প্রেসে ব্যালট ছাপা হয়েছে, তা জানানো হয়নি। পরে নীলক্ষেতের একটি ছাপাখানায় অরক্ষিত অবস্থায় ব্যালট পাওয়া যায়।

৪. ভোট গণনার সফটওয়্যার যাচাই গোপনে: গণনার সফটওয়্যার ও মেশিন যাচাইয়ের কাজ প্রার্থী ও ভোটারদের অজ্ঞাতে গোপনে করা হয়েছে। এতে গণনার স্বচ্ছতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়।

৫. পোলিং এজেন্ট বাছাই প্রক্রিয়ায় অনিয়ম: ভোটের আগের রাতে এজেন্ট তালিকা প্রকাশ করে অনেক প্রার্থীর প্রস্তাবিত এজেন্ট বাদ দেওয়া হয়। পুরো প্রক্রিয়া ছিল গোপন।

৬. আইডি কার্ড সরবরাহে বিলম্ব: নির্ধারিত সময়ে এজেন্টদের আইডি না দেওয়ায় তারা অনেকেই কেন্দ্রে ঢুকতে পারেননি।

৭. ভোটকেন্দ্র সংখ্যা হঠাৎ বৃদ্ধি: ৮টি কেন্দ্রের কথা বলা হলেও ভোটের দিনে দেখা যায় ১৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। ফলে প্যানেলগুলো প্রস্তুত ছিল না।

৮. পোলিং অফিসার নিয়োগে অনিয়ম: চিফ রিটার্নিং অফিসার না করে বিশ্ববিদ্যালয় নিজে নিয়োগ দেয়। অনেক পোলিং অফিসার আচরণবিধি জানতেন না।

৯. নিরাপত্তাকর্মীদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ: বিএনসিসি, স্কাউট ও গার্লস গাইড সদস্যদের সহায়তায় বহিরাগতদের কেন্দ্রে প্রবেশের অভিযোগ রয়েছে। কয়েকজনকে ধরে প্রক্টর অফিসে দেওয়া হয়।

১০. ভোট গণনায় এজেন্টদের নিষ্ক্রিয় রাখা: গণনার সময় অনেক কেন্দ্রে এজেন্টদের দূরে রাখা হয়। ফলে অনেকেই রেজাল্ট শিটে স্বাক্ষর না করেই বেরিয়ে আসেন।

১১. স্বচ্ছতা সংকট ও মার্কার সংকট: অস্বচ্ছ ব্যালট বাক্সে ভোট গ্রহণ ও দুপুরের পর মার্কার না থাকায় ভোটারদের বলপেন ব্যবহার করতে হয়। বলপেনের ভোট ওএমআর মেশিনে পড়েনি বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া আঙুলের কালি দ্রুত মুছে যাওয়ায় একাধিকবার ভোট দেওয়ার সুযোগ ছিল বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে আবিদুল বলেন, এই নির্বাচন ইতিহাসে একটি প্রশ্নবিদ্ধ অধ্যায় হিসেবে জায়গা করে নিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গণতন্ত্র চর্চার জায়গা। তাই প্রশাসনের উচিত হবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পথে ফিরে যাওয়া। একই সঙ্গে তিনি ডাকসু নির্বাচনে তদন্ত করে অনিয়ম প্রকাশের দাবিও জানান।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top