শুক্রবার, ৩রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১


ধর্ষণ মামলা

নুরের পক্ষে নব্বইয়ের ডাকসু নেতাদের বিবৃতি


প্রকাশিত:
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৫:৪৯

আপডেট:
৩ মে ২০২৪ ১১:০৪

ফাইল ছবি

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী যে মামলাগুলো করেছেন সেখানে নুরকেও আসামি করার নিন্দা জানিয়েছেন ১৯৯০ সালের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতারা।

শনিবার ডাকসুর তৎকালীন জিএস ও বিএনপির বর্তমান যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, নব্বইয়ের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের নেতৃবৃন্দ; আমান উল্লাহ আমান, হাবিবুর রহমান হাবীব, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দিন আলম, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সাইফ উদ্দিন আহমেদ মনি, খোন্দকার লুৎফর রহমান ও আসাদুর রহমান খান আসাদ এক যুক্ত বিবৃতিতে ডাকসু’র সদ্য বিদায়ী ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলা দায়ের, তাকে দফায় দফায় গ্রেপ্তার ও হয়রানির’ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, “বিরোধী দল ও মতকে দমন করার ঘৃণ্য চক্রান্তের অংশ হিসেবে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নারী নির্যাতনের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে সরকারি বাহিনী তাকে গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদের নামে শারীরিক ও মানসিকভাবে নিপীড়নের ঘৃন্য পথ বেছে নিয়েছে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ভোটারবিহীন অবৈধ সরকার ডাকসুর মতো ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান ও সংগ্রামী ছাত্র নেতৃত্বের চরিত্রহননের জঘন্য খেলায় লিপ্ত হয়েছে।”

নুরুল হক নুরকে হয়রানি না করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, “ডাকসুর বিদায়ী ভিপি নুর সাম্প্রতিক সময়ে ক্ষমতাসীনদের দেশবিরোধী নানা কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন বলেই সরকার নাখোশ হয়ে তাকে হেনস্তা করার নীতি গ্রহণ করেছে, যা গণবিচ্ছিন্ন সরকারের রাজনৈতিক দেওলিয়াত্বকেই নগ্নভাবে উন্মোচিত করেছে। নেতৃবৃন্দ এ ধরনের অপতৎপরতা থেকে বিরত থাকার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এবং ছাত্রসমাজ ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।”

১৯৯০-৯১ সালে ডাকসুর নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেল থেকে আমান উল্লাহ আমান ভিপি এবং খায়রুল কবির খোকন জিএস নির্বাচিত হন, যারা দুজনই এখন বিএনপির নেতা।

গত ২১ ও ২৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর লালবাগ ও কোতোয়ালি থানায় ধর্ষণ, অপহরণ ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে চরিত্রহননের অভিযোগে নুরুল হক নুর ও তার ছয় সহযোগীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটি মামলা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের এক ছাত্রী।

প্রথম মামলায় প্রধান আসামি করা হয় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হাসান আল মামুনকে, যিনি এতদিন ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন। দ্বিতীয় মামলায় প্রধান আসামি করা হয় সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হাসান সোহাগকে।

এছাড়া নুরুল হক নুরসহ সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি নাজমুল হুদা ও কর্মী আবদুল্লাহ হিল বাকিকে আসামি করা হয়।

ওই ছাত্রীর ভাষ্য, একই বিভাগে পড়া এবং ছাত্র অধিকার পরিষদের কাজে থাকার কারণে হাসান আল মামুনের সঙ্গে তার ‘প্রেমের সম্পর্ক’ গড়ে ওঠে। এর সুযোগ নিয়ে মামুন চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি তার লালবাগের বাসায় নিয়ে তাকে ‘ধর্ষণ’ করেন। এ অভিযোগেই তিনি লালবাগ থানার মামলাটি দায়ের করেন।

আর কোতোয়ালি থানার মামলার এজাহারে বলা হয়, ধর্ষণের ঘটনার পর ওই শিক্ষর্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে নাজমুল হাসান সোহাগ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করান। সুস্থ হওয়ার পর মামুনকে বিয়ের জন্য চাপ দেন ওই তরুণী। তখন সোহাগ তাকে ‘সহযোগিতার আশ্বাস’ দেন এবং মামুনের সঙ্গে দেখা করানোর কথা বলে সদরঘাট হয়ে ‘লঞ্চে করে চাঁদপুরে’ নিয়ে যান।

কিন্তু চাঁদপুরে মামুনকে না পেয়ে ওই ছাত্রীর সন্দেহ হয়। সেখান থেকে ফেরার পথে লঞ্চে সোহাগ তাকে ‘ধর্ষণ করেন’ বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।

এজাহারে বলা হয়, এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ওই তরুণী নুরের সঙ্গে দেখা করেন। নুর তাকে প্রথমে ‘মীমাংসা’ করে দেওয়ার আশ্বাস দিলেও পরে ‘বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করে অপপ্রচার চালিয়ে সম্মানহানি করার’ হুমকি দেন।

এরইমধ্যে মামলার বাকি তিন আসামি নানাভাবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ওই তরুণীর বিরুদ্ধে ‘কুৎসা’ রটাতে শুরু করেন বলে অভিযোগ করা হয় মামলায়।

ওই ছাত্রী মামলা করার পর তা ‘ষড়যন্ত্র’ দাবি করে বিক্ষোভ করে নুর-রাশেদদের নেতৃত্বাধীন ছাত্র অধিকার পরিষদ। পাশাপাশি হাসান আল মামুনকে পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়।

পরে সাইবার বুলিং চলতে থাকায় বুধবার শাহবাগ থানায় আরও একটি মামলা দায়ের করেন ওই ছাত্রী।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top