রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২১শে বৈশাখ ১৪৩১


করোনা মোকাবেলায় এডিবির কাছে বড় ধরণের সহায়তা চাইলেন অর্থমন্ত্রী


প্রকাশিত:
২১ এপ্রিল ২০২০ ০৫:২৮

আপডেট:
৫ মে ২০২৪ ০৪:০৩

ফাইল ছবি

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের আমদানি-রপ্তানির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। বেশির ভাগ দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিরা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এর ফলে স্থবিরতা নেমে এসেছে প্রবাসী আয়ের (রেমিট্যান্স) প্রবাহেও। এরফলে সৃষ্ট সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবেলায় এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছে বড় ধরনের আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ।

সোমবার (২০ এপ্রিল) এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট মাসাতাসুগু আসাকাওয়ার সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি এবং সহযোগিতা নিয়ে ফোনে আলাপচারিতার শুরুতে তিনি এসব দাবির কথা জানান।

বাংলাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে এডিবির বৃহত্তর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে অনুরোধ জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সমাজের ওপর করোনার বিরূপ প্রভাব মোকাবিলার জন্য এডিবি থেকে বর্ধিত প্রকল্প সহায়তা এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরের ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অতিরিক্ত এবং ২০২০-২০২১ অর্থবছরের জন্য আরও এক বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেট সাপোর্ট, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ফ্রন্টলাইন কর্মীদের (চিকিৎসাকর্মী, সিভিল প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, অত্যাবশ্যকীয় সেবাপ্রদানকারী) জন্য ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, কোভিড-১৯ এর কারণে চাকরি হারানো দেশি ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য এবং অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও কুটির শিল্প খাতের ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, আর্থিক সহায়তা এবং অছাড়কৃত ওসিআর লোনের কমিটমেন্ট চার্জ হ্রাসের অনুরোধ করেন।

এডিবি প্রেসিডেন্টের কাছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, পুরো বিশ্ব সম্প্রদায় এখন একটি ক্রান্তিকাল পার করছে। নোভেল করোনা ভাইরাসের কারনে আজ মানব সম্প্রদায়ের জীবন ও অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন হয়েছে, গোটা বিশ্ব আজ প্রকট অর্থনৈতিক মন্দার সম্মুখীন হতে যাচ্ছে। বিশ্বের অর্থনৈতিক মন্দার ধাক্কা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্যও দুঃচিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নোভেল করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) স্বাস্থ্য ও অর্থনীতি খাতে ২০ বিলিয়ন বা দুই হাজার কোটি মার্কিন ডলার আর্থিক সহায়তার প্যাকেজ ঘোষণার জন্য এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতাসুগু আসাকাওয়ার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী। এডিবির প্রেসিডেন্টের গতিশীল নেতৃত্বে উন্নয়নশীল দেশগুলো করোনা ভাইরাসের বিরূপ প্রভাব মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

পাশাপাশি তিনি স্বাস্থ্য খাতের জরুরি সেবা ও বাজেট সাপোর্টের জন্য এডিবি তৎক্ষণাত ভিত্তিতে বাংলদেশের জন্য যে ৬০২.৩৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আর্থিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছে সে জন্যও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

ডিবি প্রেসিডেন্ট বলেন, এই মহামারি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অর্থনৈতিক, সামাজিক, এবং উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বড় ধরনের আঘাত হানতে পারে। যার ফলে এই অঞ্চলের দরিদ্রতা আরও বাড়তে পারে এবং অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে। এডিবি ঘোষিত সহযোগিতা প্যাকেজ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এবং বেসরকারি খাতকে এই মহামারি মোকাবিলা করার জন্য দ্রুত সরবরাহ করা হচ্ছে।

তিনি অর্থমন্ত্রীর সাথে বাংলাদেশে এডিবির চলমান প্রকল্প ও পাইপলাইনের প্রকল্পগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। সেগুলো দ্রুত সফলভাবে সম্পন্ন করার পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করেন।

উল্লেখ্য, বর্তমানে বাংলাদেশে এডিবির প্রায় ৮ দশমিক ৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তায় ৬৩টি প্রকল্প চলমান রয়েছে। পাশাপাশি পাইপলাইনে রয়েছে প্রায় ৯ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তার ৮১টি প্রকল্প।

অর্থমন্ত্রী ও এডিবি প্রেসিডেন্টের মধ্যে করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা হয়। অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে বলেন, কোথাও লকডাউন, কোথাও গণছুটি আবার কোথাও কারফিউ জারি করে মানুষকে ঘরবন্দি করা হয়েছে। বাংলাদেশে গত ২৬ মার্চ থেকে আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। জরুরি সেবা কার্যক্রম ছাড়া সবকিছু বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এখন দেশের সিংহভাগ শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ছোট-খাটো কারখানা বন্ধ। গণপরিবহন ও বিমান চলাচল স্থগিত।

অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেন, ইতঃপূর্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধন অনুষ্ঠান, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান ও পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top