গুলশানে ডাবল মার্ডারের নেপথ্যে দোকান মালিকের বিরূপ আচরণ!
প্রকাশিত:
২ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:৩২
আপডেট:
৯ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:৫২
রাজধানীর গুলশানে ডাবল মার্ডারের ঘটনায় জড়িত একজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ সম্পর্কে জানা গেছে। মূলত তার সঙ্গে দোকান মালিক খারাপ আচরণ করেন। এছাড়াও নানা কারণে সৃষ্ট ক্ষোভ থেকে দোকান মালিক রফিক ও এক কর্মচারীকে গলাকেটে হত্যা করেন।
বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের প্রধান লে. ক. মুনিম ফেরদৌস।
মঙ্গলবার রাতে রুমন নামে একজনকে চট্টগ্রামের হালিশহর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় আরও দুজন জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য দিয়েছেন রুমন।
র্যাব কর্মকর্তা জানান, হত্যার শিকার রফিকুল ইসলাম সিকদারের বাড়ি বরিশালে। তিনি রাজধানীর গুলশান-২ এর ১০৮ নম্বর রোডের ২১ নং প্লটের একটি বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে চাকরি করার পাশাপাশি প্লটের ভেতরে ছোট একটি দোকানে চা-বিস্কুট বিক্রি করতেন। এছাড়া হত্যার শিকার আরেকজন সাব্বির রফিকের চায়ের দোকানের কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের গৌরীপুরে। তারা দুজনে প্লটের পেছনের অংশে একটি রুমে রাত যাপন করতেন। রফিকের চায়ের দোকানে এক মাস ধরে সাব্বির চাকরি করছিলেন। তিনি চাকরি ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি জানালে রফিক দোকানের জন্য নতুন কর্মচারী খোঁজ করতে থাকেন।
সাত দিন আগে তার পূর্ব পরিচিত একজনের মাধ্যমে গ্রেফতার রুমন ওই দোকানে থাকা-খাওয়াসহ প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা বেতনে কাজ শুরু করেন। বেতন অল্প হওয়ায় এবং দোকানের কাজকর্ম নিয়ে রফিকের সাথে রুমনের বেশ কয়েকবার বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে রফিককে উচিত শিক্ষা দিয়ে দোকানের মূল্যবান মালামাল এবং অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন রুমন। সেই পরিকল্পনা থেকেই দুজনকে হত্যা করা হয়।
যেভাবে হত্যা করা হয়
গ্রেফতার রুমন জানিয়েছেন, রফিক, সাব্বির এবং তিনি দোকানের কার্যক্রম শেষে রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পড়েন। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, রুমন ও তার সহযোগীরা রাত ২টায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রথমে রফিকের মাথায়, গলায় ও শরীরের আঘাত করেন। সাব্বির দেখে ফেললে তাকেও মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়। তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ বিছানার চাদর দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। এরপর রুমন বাসা তল্লাশি করে নগদ টাকা লুট করেন এবং কফি মেশিনসহ দোকানের মূল্যবান মালামাল বেশ কয়েকটি বস্তায় ঢুকিয়ে রাখেন।
পরে সকাল ৭টায় একটি ভাড়া করা পিকআপে দোকানের মালামাল নিয়ে রুমন ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এয়ারপোর্ট এলাকায় এসে বাসযোগে মালামালসহ তার নিজ বাড়িতে চলে যান। এরপর লুণ্ঠিত মালামাল তার আত্মীয়- স্বজনের বাড়িতে লুকিয়ে রাখেন।
গ্রেফতার রুমনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে র্যাব।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: