লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক
প্রকাশিত:
৩০ এপ্রিল ২০২৫ ১১:০৬
আপডেট:
৩০ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:৪২

আরবি ১২ মাসের মধ্যে বিশেষ সম্মানিত মাস চারটি। এগুলোর তিনটি হলো ধারাবাহিকভাবে—জিলকদ, জিলহজ ও মহররম। আর অন্যটি হলো রজব। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৪৬৬২)
সম্মানিত মাসগুলোর মধ্যে জিলকদ, জিলহজ ও এর আগের মাস শাওয়ালকে হজের মাস বলা হয়। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে—
اَلۡحَجُّ اَشۡہُرٌ مَّعۡلُوۡمٰتٌ ۚ فَمَنۡ فَرَضَ فِیۡہِنَّ الۡحَجَّ فَلَا رَفَثَ وَلَا فُسُوۡقَ ۙ وَلَا جِدَالَ فِی الۡحَجِّ ؕ وَمَا تَفۡعَلُوۡا مِنۡ خَیۡرٍ یَّعۡلَمۡہُ اللّٰہُ ؕؔ وَتَزَوَّدُوۡا فَاِنَّ خَیۡرَ الزَّادِ التَّقۡوٰی ۫ وَاتَّقُوۡنِ یٰۤاُولِی الۡاَلۡبَابِ
হজের নির্দিষ্ট কয়েকটি মাস আছে। যে ব্যক্তি সেসব মাসে (ইহরাম বেঁধে) নিজের উপর হজ অবধারিত করে নেয়, সে হজের সময়ে কোন অশ্লীল কথা বলবে না, কোন গুনাহ করবে না এবং ঝগড়াও নয়। তোমরা যা-কিছু সৎকর্ম করবে আল্লাহ তা জানেন। আর (হজের সফরে) পথ খরচা সাথে নিয়ে নিয়ো। বস্তুত তাকওয়াই উৎকৃষ্ট অবলম্বন। আর হে বুদ্ধিমানেরা! তোমরা আমাকে ভয় করে চলো। (সূরা বাকারা, আয়াত : ১৯৭)
যারা হজ করতে ইচ্ছুক তাদের এই মাসগুলোতে হজ সংক্রান্ত বিষয়েই ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। শাওয়াল মাসে হজের জন্য পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন। জিলকদ মাস থেকে হজের জন্য মক্কার উদ্দেশ্যে সফর শুরু হয়। জিলহজেও অনেকে হজের সফর করেন। হজের প্রধান ও মূল আমল শুরু হয় ৮ জিলহজ থেকে। শেষ হয় ১২ জিলহজ।
হজ শুরু হয় ইহরাম বাঁধার মাধ্যমে। এরপর থেকে জামরাতুল ‘আকাবায় কঙ্কর নিক্ষেপের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত সার্বক্ষণিক তালবিয়া পাঠ করেন হাজিরা। তালবিয়া পাঠের মধ্য দিয়েই হজ ও ওমরায় প্রবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়। তাই একে হজ-ওমরার শ্লোগান হিসেবে অভিহিত করা হয়।
বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুল (সা.)-এর তালবিয়া হলো-
لَبَّيْكَ اَللَّهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لا شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ، لا شَرِيْكَ لَكَ
উচ্চারণ : লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা, ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।
অর্থ : আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি, হে আল্লাহ! আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি। আমি আাপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি, আপনার কোন শরীক নেই, আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি। নিশ্চয়ই সমস্ত প্রশংসা, নে‘মত এবং সাম্রাজ্য আপনারই। আপনার কোনো শরিক নেই। (বুখারি, হাদিস : ১৫৪৯; মুসলিম, হাদিস : ২৮১১)
জায়েদ ইবনে খালিদ জুহানী রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘জিবরাইল আ. আমার কাছে আসলেন অতঃপর বললেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছেন, যেন আপনি আপনার সাথীদেরকে নির্দেশ প্রদান করেন যে, তারা যেন তালবিয়া দ্বারা স্বর উঁচু করে। কারণ এটি হজের শ্লোগানভুক্ত।’ (তাবরানী : ৫১৭২)
হজরত আনাস ইবনু মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় চার রাকাত জোহরের নামাজ আদায় করলেন এবং আসরের নামাজ যুল-হুলাইফায় দু’রাকাত আদায় করেন। আমি শুনতে পেলাম তাঁরা সকলে উচ্চস্বরে হজ ও ওমরার তালবিয়া পাঠ করছেন। (বুখারি, হাদিস : ১৪৫৫)
হজরত আয়িশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কীভাবে তালবিয়া পাঠ করতেন তা আমি ভালভাবে অবগত (তাঁর তালবিয়া ছিল)
لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ
আমি হাজির হে আল্লাহ! আমি হাজির, আমি হাজির, আপনার কোন অংশীদার নেই, আমি হাজির, সকল প্রশংসা ও সকল নিয়ামত আপনারই। (বুখারি, হাদিস : ১৪৫৭)
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: