বুধবার, ৫ই নভেম্বর ২০২৫, ২০শে কার্তিক ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


ড্যাপের পরিবর্তন বাসযোগ্য ঢাকা গড়ার প্রচেষ্টার কফিনে শেষ পেরেক


প্রকাশিত:
৪ নভেম্বর ২০২৫ ২২:০৫

আপডেট:
৫ নভেম্বর ২০২৫ ০১:২৪

ছবি : সংগৃহীত

স্বার্থগোষ্ঠীর চাপে ড্যাপের পরিবর্তন বাসযোগ্য ঢাকা গড়ার প্রচেষ্টার কফিনে শেষ পেরেক উল্লেখ করে বিশেষজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছেনকার স্বার্থে আবারও পরিবর্তন ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ)?’

মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে পরিবেশকর্মী, আইনজীবী, শিক্ষক, পরিকল্পনাবিদ, স্থপতি, প্রকৌশলী, অর্থনীতিবিদ, নাগরিক, সমাজকর্মী ও গবেষকরা।

তারা বলেছেন, স্বার্থগোষ্ঠীর চাপে শহরের পরিকল্পনা পরিবর্তন করলে পরিকল্পনা মূল্যহীন হয়ে পড়ে। শহরের বাসযোগ্যতা ও পরিবেশকে উপেক্ষা করে ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার (ড্যাপ) বারংবার পরিবর্তন ঢাকাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছে।

বক্তারা বলেন, পাঁচ বছর পর ড্যাপ আপডেট করার ব্যবস্থা থাকলেও সেটা অনুসরণ না করে ব্যবসায়ী ও স্বার্থ সংশ্লিষ্ট মহলের চাপে ২০২২ সালে ড্যাপ অনুমোদনের তিন বছরের মধ্যে দুইবার ড্যাপ সংশোধন করা হলো। ঢাকা শহরের জন্য বিষয়টি আত্মঘাতী এবং নগর পরিকল্পনার কার্যকর অনুশীলনের অন্তরায়। মূলত আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাব ও ইনস্টিটিউট অফ আর্কিটেক্টস বাংলাদেশ আইএবির দাবির কাছে সরকার রাজধানীর বেশিরভাগ এলাকায় ভবন নির্মাণে ফ্লোর এরিয়া রেশিও (এফএআর), জনঘনত্ব ও আবাসন ইউনিট বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সার্বিক বিচারে যা অপরিণামদর্শী এবং ঢাকা মহানগরীর বাসযোগ্যতাসহ নির্মিত পরিবেশ ও প্রতিবেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।

তারা বলেন, পরিকল্পনাবিদসহ বিভিন্ন সামাজিক, পরিবেশবাদী, পেশাজীবী ও নাগরিক সংগঠনের মতামত ও দাবিকে উপেক্ষা করেই সরকার এই সংশোধনের পথে হাঁটছে। এতে জনবহুল ঢাকা শহরে উঁচু ভবনের সংখ্যা বাড়বে এবং ইতোমধ্যে স্থবির হয়ে যাওয়া শহরে পরিবহন, পরিষেবাসহ সব ধরনের নাগরিক সেবার ওপর অসহনীয় চাপ পড়বে। এই চাপ বহন করার ক্ষমতা এই শহরের নেই। এই ধরনের উদ্যোগ ঢাকা মহানগরীর বাসযোগ্যতাকে একেবারে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেবে।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে নভেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে বাসযোগ্য শহরের পরিকল্পনা প্রণয়নে নাগরিকদের প্রত্যাশা নীতি নির্ধারকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে নাগরিক, পেশাজীবীঅংশীজনদের নিয়েজাতীয় কনভেনশনআয়োজন করার ঘোষণা দেওয়া হয়ব্যবসায়িক স্বার্থগোষ্ঠীর অনৈতিক চাহিদা পূরণ করতে ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালার ত্রুটিপূর্ণ পরিবর্তন প্রক্রিয়া অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি করা হয়

আয়োজকদের পক্ষ থেকে ১৭ দফা দাবি ঘোষণ করেন লেখক ও সংবিধান সংস্কার কমিটির সদস্য ফিরোজ আহমেদ। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য আরও কয়েকটি দাবি হলো

ড্যাপ ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালার যে কোনো সংশোধন নাগরিক, পেশাজীবী, কমিউনিটি ও সামাজিক সংগঠনসমূহকে যথাযথ সম্পৃক্ত করবার মাধ্যমে এবং তাদের মতামতের সাপেক্ষে সার্বিক জনকল্যাণ ও শহরের বাসযোগ্যতাকে মাথায় রেখে করতে হবে।

ঢাকা শহরের বাসযোগ্যতা বাড়াতে সামাজিক, পরিবেশবাদী, পেশাজীবী, নাগরিক সংগঠন কর্তৃক ড্যাপ ও ইমারত সংক্রান্ত ইতোপূর্বে পাঠানো ফার, জনঘনত্ব, নির্মিত পরিবেশসংক্রান্ত বিভিন্ন প্রস্তাবনা যথাযথ বিবেচনায় নিতে হবে।

বিগত সময়ে গোষ্ঠীস্বার্থে বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার পরিকল্পনায় যেসব পরিবর্তন করা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক সঠিক তদন্ত করে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার উদ্যোগ নিতে হবে।

কৃষিজমি, জলাভূমি ও বন্যা প্রবাহ এলাকায় যে কোনো ধরনের উন্নয়ন নিষিদ্ধ করতে হবে। কৃষিজমি, জলাভূমি ও বন্যা প্রবাহ এলাকায় বিদ্যমান সব ধরনের অবৈধ উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বন্ধে রাজউক, মন্ত্রণালয়সহ সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে অবৈধ দখলদার ও অবৈধ কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান, বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজিব, আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া পরিকল্পনাবিদ সৈয়দ শাহরিয়ার আমিন, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারি প্রমুখ।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top