প্লট দুর্নীতি
হাসিনার এক মামলায় সাক্ষ্য শেষ, আত্মপক্ষ সমর্থনে দিন ধার্য
প্রকাশিত:
১০ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:২০
আপডেট:
১০ নভেম্বর ২০২৫ ২০:২৬
ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে করা পৃথক তিন মামলার দুটিতে তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করেছে আসামিপক্ষ। আংশিক জেরা শেষে পরবর্তী জেরার জন্য আগামী ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত। এর মধ্যে শেখ হাসিনাসহ ১২ আসামির বিরুদ্ধে এক মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ায় ওইদিন মামলাটিতে আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ধার্য করা হয়েছে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালত এ দিন ধার্য করেন। এ দিন শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে করা মামলায় আসামি রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের পক্ষে তার আইনজীবী তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়াকে জেরা শেষ করেন। এ মামলায় চার্জশিটভুক্ত ২৯ সাক্ষীর সবাই আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এ ছাড়া শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে করা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুল হাসান এবং দুদকের উপপরিচালক সালাউদ্দিনকে জেরা করে আসামিপক্ষ। আংশিক জেরা শেষে পরবর্তী জেরার জন্য ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়। মামলায় ২৭ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এদিকে, শেখ হাসিনা ও পুতুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে করা আরেক মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়াকে জেরার জন্যও আগামী ১৭ নভেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে। মামলাটিতে চার্জশিটভুক্ত ২৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করেছেন আদালত। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর খান মো. মইনুল হাসান লিপন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠার সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত ১৪ জানুয়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আট জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক সালাহউদ্দিন। তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।
শেখ হাসিনা ছাড়াও মামলায় অপর আসামিরা হলেন— জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, রাজউকের সাবেক সদস্য শফি উল হক, খুরশীদ আলম, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), উপপরিচালক নায়েব আলী শরীফ, জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব শহিদ উল্লাহ খন্দকার এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।
প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ৬ মামলা করে দুদক। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়। এসব মামলায় একটিতে শেখ রেহানা, টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ আসামি ১৭ জন। আরেকটিতে আজমিনা, টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জন এবং অপর মামলায় রাদওয়ান, টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। অপরদিকে বাকি ৩ মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলম আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকাকালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করেন। অযোগ্য হলেও তারা পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরে ১০ কাঠা করে প্লট বরাদ্দ নেন।
সম্পর্কিত বিষয়:



আপনার মূল্যবান মতামত দিন: