অভিবাসীদের ওপর খড়্গহস্ত ফিনল্যান্ড, আতঙ্কে অনেকে
 প্রকাশিত: 
                                                ৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:০৭
 আপডেট:
 ৪ নভেম্বর ২০২৫ ২০:৩৯
                                                
                                        
অনিয়মিত অভিবাসন ঠেকাতে নানা ধরনের কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে নর্ডিক দেশ ফিনল্যান্ড। এর ফলে বাড়ছে প্রত্যাবাসনের সংখ্যা। সরকারের এমন কঠোরতায় আতঙ্কে অনেক অনিয়মিত অভিবাসী।
নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হলে জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাদের কেউ কেউ।
রাজধানী হেলসিঙ্কির ‘হাউস অব দ্য হোপ’ নামের ডে সেন্টারটিতে নথিবিহীন অভিবাসীরা আইনি সহায়তা, চিকিৎসা এবং প্রায় প্রতিদিনই দুপুরের খাবার পেয়ে থাকেন।
একটি খ্রিস্টান বেসরকরি সংস্থা এবং স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে পরিচালিত এই সেন্টারটি মূলত যে সব আশ্রয়প্রার্থীর আবেদন নাকচ করে দেওয়া হয়েছে এবং যারা নথি ছাড়াই ফিনল্যান্ডে বসবাস করছেন তাদেরকে সহায়তা দিয়ে থাকে।
“আমার পরিস্থিতি খুবই খুবই খারাপ,” মরক্কোর ৫০ বছর বয়সী এক নারী অভিবাসী এভাবেই বার্তাসংস্থা এএফপিকে নিজের পরিস্থিতির কথা বলছিলেন। ২০২৪ সালের প্রথম দিকে ফিনল্যান্ডে আসেন ওই নারী। সমাজকর্মী হিসেবে প্রশিক্ষণ নিয়ে চাকরির সন্ধান করছিলেন।
কিন্তু ৯০ দিনের মধ্যে কোনো চাকরি পানিনি তিনি। ফিনল্যান্ডের আইন অনুযায়ী, রেসিডেন্স পারমিট ছাড়া তৃতীয় দেশের নাগরিকেরা দেশটিতে ৯০দিন অবস্থান করতে পারেন।
এদিকে ফিনল্যান্ডের আইন অনুযায়ী, নথিবিহীন অভিবাসীরা ফিনল্যান্ডে থাকা অবস্থায় চাকরির জন্য আবেদন করতে পারেন না। আবেদন করতে হলে তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত যেতে হয়। এই নারী অভিবাসী বলেন, “আমি মরক্কো ফিরে যেতে পারি না। কারণ আমার সাবেক স্বামী যদি জানতে পারেন যে আমি ফিরে এসেছি, তাহলে সে বেপরোয়া হয়ে উঠবে।”
তবে তাকে নভেম্বরে ফিনল্যান্ড ত্যাগ করার কথা বলেছে কর্তৃপক্ষ, এমনটাই জানিয়েছেন ওই নারী।
অনিয়মিত অভিবাসীদের মধ্যে এমন আতঙ্কের বিষয়টি নজরে পড়েছে ‘ডে অব দ্য হোপের’ প্রজেক্ট ম্যানেজার আনে হামাদের। তিনি জানান, ফিনল্যান্ডে ২০২৩ সালে ডানপন্থি সরকার ক্ষমতায় আসার পর অভিবাসন বিষয়ক আইন কঠোর করেছে। এর ফলে এই অভিবাসীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।
তিনি বলেন, অনেকেই ইতোমধ্যে দুরবস্থায় রয়েছেন এবং নিজ দেশে ফেরত যাবার বিষয়ে তারা উদ্বিগ্ন।
ফিনিশ পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে মোট দুই হাজার ৭০ জন আশ্রয়প্রার্থীকে নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ২০২৫ সালে ফেরত পাঠানোর এই সংখ্যা তার আগের বছরের অর্থাৎ ২০২৪ সালের একই সময়ের তুলনায় ৩০ ভাগ বেশি।
পুলিশের চিফ সুপারিনটেন্ডেন্ট ইয়ানে লেপসু বলেন, বিদেশিদের থাকার (ফিনল্যান্ডে) অধিকারের বিষয়টি নিবিড়ভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যদি এমন পাওয়া যায়, কোনো বিদেশি ব্যক্তির থাকার অধিকার নেই, তাহলে তাকে ফিনল্যান্ড থেকে এবং শেঙ্গেনভুক্ত অঞ্চল থেকে ফেরত পাঠানোর জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, ফিনল্যান্ডে অনিভুক্ত অভিবাসীর সংখ্যা ঠিক কত সে বিষয়ে সুস্পষ্ট তথ্য না থাকলেও ধারণা করা হচ্ছে এই সংখ্যা সাড়ে তিন থেকে পাঁচ হাজার। ইনফোমাইগ্রেন্টস
সম্পর্কিত বিষয়:



                                                            
                                                            
                                                            
                                                            
                                                            
                                                            
                                                            
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: