ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে ১০০০ হাঁড়ি পাতিল, কিন্তু কেন?
প্রকাশিত:
২৬ জুলাই ২০২৫ ১৯:৫৩
আপডেট:
২৭ জুলাই ২০২৫ ০৫:৪২

গাজায় প্রতিদিন না খেয়ে মারা যাচ্ছেন মানুষ। অনাহারের কারণে অপুষ্টিতে ভুগছেন বহু শিশু। হাঁড়ি-পাতিল নিয়ে ত্রাণ বিতরণকেন্দ্রের সামনে গাজাবাসীর দাঁড়িয়ে থাকার অনেক ছবি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায়।
এবার সেই দৃশ্যের প্রতীকী অবতারণা ঘটানো হলো লন্ডনের ডাউনিং স্ট্রিটে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কার্যালয়ের সামনে। শুক্রবার সেখানে হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। তারা সেখানে ১০০০ হাঁড়ি-পাতিল রেখে গাজায় ইসরাইলের ‘ইচ্ছাকৃত দুর্ভিক্ষ নীতির’ বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
‘প্যালেস্টাইন সলিডারিটি ক্যাম্পেইন’সহ (পিএসসি) বিভিন্ন সংগঠনের আয়োজনে হওয়া এই বিক্ষোভে বলা হয়, গাজায় খাবারের খোঁজে বের হয়ে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে নিহত ১,০০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনিকে স্মরণ করেই এই হাঁড়িগুলো রাখা হয়েছে।
বিক্ষোভকারীরা হাঁড়ি-পাতিল বাজিয়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ‘ইচ্ছাকৃত দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দেওয়ার’ অভিযোগ আনেন। তারা ফিলিস্তিনি পতাকা ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের ভূমিকারও সমালোচনা করেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে আরও ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সংখ্যা বেড়ে এখন ১২২ জনে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ৮৩ জনই শিশু।
একজন বিক্ষোভকারী ক্লাইভ বলেন, গাজায় যে নির্দয় দুর্ভিক্ষ চলছে, তার যেন কোনো শেষ নেই। কেউ প্রতিবাদ করলেই তাকে ‘এন্টিসেমিটিক’ বলে ট্যাগ দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) পর্যন্ত যুদ্ধাপরাধের কথা বলেছে। তারপরও কেউ পদক্ষেপ নিচ্ছে না। ইসরাইল নির্বিচারে হত্যা চালিয়ে যাচ্ছে—শুধু হামাস নয়, শিশু, নারী, সাধারণ মানুষও রেহাই পাচ্ছে না।
আরেকজন বিক্ষোভকারী পল বলেন, প্রতিদিন গাজায় বোমা পড়ছে, শিশু মরছে, মানুষ না খেয়ে আছে। এটা দিনের পর দিন চলছে।
তিনি আরও বলেন, ইসরাইলি নেতারা প্রকাশ্যে বলছেন, ফিলিস্তিনিদের নির্মূল করতে হবে। বন্দিদের ওপর নির্যাতন করাও ঠিক—তাদের মধ্যে কোনো লজ্জা নেই।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া হামলায় ইসরাইল এখন পর্যন্ত গাজায় ৫৯,৭০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। ধ্বংস হয়ে গেছে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা, তৈরি হয়েছে চরম খাদ্যসংকট।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত। পাশাপাশি গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরাইলের বিরুদ্ধে মামলাও চলছে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে)।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: