মঙ্গলবার, ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩১শে ভাদ্র ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


পাকিস্তানের হামলায় ভারতের সীমান্ত এলাকায় ১০ হাজারেরও বেশি বাড়ি ধ্বংস


প্রকাশিত:
১৯ মে ২০২৫ ১০:২১

আপডেট:
১৯ মে ২০২৫ ১১:১৯

ছবি সংগৃহীত

টানা বেশ কয়েকদিনের হামলা, পাল্টা হামলা ও উত্তেজনার পর সম্প্রতি যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছেছে ভারত ও পাকিস্তান। এরপর উভয় দেশের সামরিক কর্মকর্তারা নিয়মিত একে-অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং যুদ্ধবিরতির মেয়াদও বাড়াচ্ছেন।

বিদ্যমান পরিস্থিতিতে ভারত ও পাকিস্তানের মাঝে উত্তেজনার পারদ কমে এলেও সাম্প্রতিক সংঘর্ষে সীমান্ত এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির ছাপ খুব স্পষ্ট। মূলত পাকিস্তানের হামলায় ভারতের সীমান্ত এলাকায় ১০ হাজারেরও বেশি বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে।

এছাড়া হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে শত শত গ্রাম। ঘরছাড়া হয়েছেন অসংখ্য পরিবার। সোমবার (১৯ মে) কালকাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, অপারেশন সিন্দুর ও তার পাল্টা পাকিস্তানি হামলায় কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর শত শত গ্রাম বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। গত কয়েক দিন ধরে স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা এই সব এলাকা ঘুরে যা দেখেছেন, সেই ছবি মর্মান্তিক।

জানা গেছে, পাকিস্তানি হামলায় ১০ হাজারেরও বেশি বাড়ি গুঁড়িয়ে গেছে। ঘরছাড়া অসংখ্য পরিবার। সীমান্তবর্তী পুঞ্চ, কুপওয়ারা, বারামুলা ও রাজৌরির গ্রামগুলো সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সব থেকে শোচনীয় অবস্থা জম্মুর পুঞ্চ জেলার। পাকিস্তানি হামলায় নিহত ২২ জনের মধ্যে ১৪ জনই পুঞ্চের।

ন্যাশনাল কনফারেন্সের সংসদ সদস্য আজাজ জান জানান, এই জেলার ৯০টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৬০টিতে হাজার হাজার বাড়ি ও ভবন গুঁড়িয়ে গেছে। তিনি বলেন, “এত বড় মাপের হামলা এর আগে এই এলাকায় হয়নি। পুরো এলাকায় একটিও বাড়ি দাঁড়িয়ে নেই। পাহাড়ি এলাকায় টিনের চালের বাড়ি কি এই হামলা রুখতে পারে! শেল ফেটে যে একটা বাড়ির ক্ষতি হয়েছে তা নয়, শ্র্যাপনেলে চারপাশের বাড়িরও বিপুল ক্ষতি হয়েছে।”

ভারতীয় এই সাংসদ জানান, তিনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ৪০ শতাংশ নিজে ঘুরে দেখেছেন। এলাকাটি ভূকম্পনপ্রবণ বলে মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বাড়ির কাঠামোগুলো এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত, যে-কোনও মুহূর্তে একটি মৃদু কম্পনেই ভেঙে পড়তে পারে।”

এই পরিস্থিতিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ও এই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের কাছে তার আবেদন, বাড়ি-ঘর পুনর্নিমাণের জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক। অনেকে ঘরে ফিরতে পারেননি এবং অদূর ভবিষ্যতে একটা ভূমিকম্প হলেই ভয়ঙ্কর বিপদে পড়বেন এলাকাবাসী।

তার দাবি, পাকিস্তানি হামলায় নিহত মানুষকে সরকারি ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ পুঞ্চে এসে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। রাজ্যের পাশাপাশি কেন্দ্রের কাছ থেকেও ক্ষতিপূরণের আশা করছি।”

এদিকে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর গোলাবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত সীমান্ত এলাকার উরি ও কারনা অঞ্চলও। কারনায় একশোটিরও বেশি এবং উরিতে ৪৫৮টি বাড়ি গুঁড়িয়ে গেছে।

ন্যাশনাল কনফারেন্সের সাংসদ জাভিদ আহমেদের কথায়, “সম্পূর্ণ গুঁড়িয়ে যাওয়া বাড়ির জন্য ১০ লাখ এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির জন্য ৫ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণের আবেদন জানিয়েছি।”

স্থানীয় তাংদার গ্রামের বাসিন্দা জাহিদ রাশিদের কথায়, গোলাবর্ষণ শুরু হওয়ায় আমরা বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছিলাম। শেলিং থামার পরে বাইরে এসে দেখি সব বাড়িঘর গুঁড়িয়ে গিয়েছে। তার মতো অসংখ্য মানুষ এখন আত্মীয় বা প্রতিবেশীদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে আছেন।

এদিকে পাকিস্তানের হামলায় এই বিপুল ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মাসির আসলাম ওয়ানি। তিনি জানান, দুর্গতদের আর্থিক সাহায্যের চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার। তার কথায়, “পুর্নবাসন প্রকল্প থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।”


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top