বলছে ওআইসি
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের ভিত্তিহীন অভিযোগে উত্তেজনা বাড়ছে
প্রকাশিত:
৬ মে ২০২৫ ১২:১৫
আপডেট:
৬ মে ২০২৫ ১৬:২২

জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে এবং এই উত্তেজনা সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কাও বাড়ছে।
এমন অবস্থায় উত্তেজনাকর এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। সংস্থাটি বলেছে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের ভিত্তিহীন অভিযোগ দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপত্তাজনিত উত্তেজনা আরও বাড়াচ্ছে।
সোমবার (৫ মে) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি গ্লোবাল।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের “ভিত্তিহীন অভিযোগ” দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপত্তাজনিত উত্তেজনা আরও বাড়াচ্ছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে ওআইসি বলেছে, এই ধরনের অভিযোগ ইতোমধ্যেই অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করে তুলছে।
৫৭টি মুসলিম দেশ নিয়ে গঠিত সংস্থা ওআইসি এক বিবৃতিতে বলেছে, “সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের নীতিগত অবস্থান স্পষ্ট এবং আমরা যে কোনও রূপের সন্ত্রাসবাদকে নিন্দা জানাই, তা যেই করুক এবং যেখানেই করুক।”
সংস্থাটি আরও জোর দিয়ে জানিয়েছে, “কোনও দেশ, জাতি, ধর্ম, সংস্কৃতি বা জাতীয়তাকে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত করার যেকোনও প্রচেষ্টা আমরা প্রত্যাখ্যান করি।”
ওআইসির এই বিবৃতিতে কাশ্মির ইস্যুও বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, “দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত এই সমস্যা দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও নিরাপত্তার মূল অন্তরায়। জম্মু ও কাশ্মিরের মানুষ এখনও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুযায়ী তাদের নিজেদের অধিকার থেকে বঞ্চিত।”
ওআইসি আরও বলেছে, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের মধ্যস্থতার প্রস্তাবকে স্বাগত জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এবং প্রভাবশালী দেশগুলোর কাছে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে, যাতে পরিস্থিতি শান্ত করা যায় এবং উত্তেজনা কমানো যায়।
প্রসঙ্গত, ওআইসি এর আগেও কাশ্মিরের পরিস্থিতি নিয়ে একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং ভারতের বিভিন্ন নীতির সমালোচনা করেছে। তবে ভারত বরাবরই ওআইসির এই ধরনের বিবৃতিকে “অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপ” হিসেবে খারিজ করে এসেছে।
সম্প্রতি জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মিরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা। অধিকৃত কাশ্মিরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের এই হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।
এছাড়া ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।
এই পরিস্থিতির মধ্যে পাকিস্তান গত শনিবার “আবদালি” ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে। ভারতের কর্মকর্তারা এটিকে “খোলামেলা উসকানি” বলে মন্তব্য করেছেন। ৪৫০ কিমি রেঞ্জের এই ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তান “সিন্ধু মহড়ার” অংশ হিসেবে পরীক্ষা করেছে বলে জানিয়েছে।
এছাড়া ভারতের সঙ্গে চলমান তীব্র উত্তেজনার মাঝে সোমবার ফের আরেকটি ক্ষেপণাস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে পাকিস্তান। আর এর মধ্যেই ওআইসির পক্ষ থেকে ভারতের সমালোচনা করে এই বিবৃতি দেওয়া হলো।
সম্পর্কিত বিষয়:
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: