শনিবার, ১৬ই আগস্ট ২০২৫, ৩১শে শ্রাবণ ১৪৩২

Shomoy News

Sopno


বিবিসিকে তীব্র তোপ অমিত শাহর

সব কুৎসা পেছনে ফেলে উঠে আসেন মোদি


প্রকাশিত:
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:৩৯

আপডেট:
১৬ আগস্ট ২০২৫ ০৩:২৬

ছবি সংগৃহিত

কর সংক্রান্ত ‘অস্পষ্টতার’ জেরে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের (বিবিসি) দিল্লি ও মুম্বাই শাখা কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে ভারতের আয়কর দপ্তর। সে অভিযানের কয়েক ঘণ্টা আগের এক সাক্ষাৎকারে বিবিসির প্রতি প্রতি তীব্র ক্ষোভ জানিয়েছিলেন ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এএনআইকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন অমিত শাহ। মঙ্গলবার সকালে সেটি প্রকাশিত হয়েছে।

সাক্ষাৎকারে অমিত শাহ বলেন, ‘ওরা (বিবিসি) মোদিজির (নরেন্দ্র মোদি) বিরুদ্ধে ২০০২ সাল থেকেই ষড়যন্ত্র করে চলেছে; কিন্তু প্রত্যেকবার মোদিজি আগের চেয়ে আরও শক্তিশালী হয়েছেন, জনপ্রিয় হয়েছেন।’

‘সত্যকে কোনোভাবেই চাপা দেওয়া যায় না। যতই ষড়যন্ত্র হোক, সত্য যেভাবে সূর্যের আলোর মতই প্রকাশ্যে আসে, তেমনি মোদিজিও বার বার সব কুৎসা ফেলে উঠে আসেন।’

মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বিবিসির দিল্লি ও সাড়ে ১১টার দিকে মুম্বাই কার্যালয়ে ‘তল্লাশি অভিযান’ পরিচালনা করে ভারতের আয়কর দপ্তরের কর্মকর্তাদের দু’টি দল। এ সময় কার্যালয় দু’টির ব্যাংক হিসাবপত্র সংক্রান্ত বিভিন্ন নথি, ল্যাপটপ এবং মোবাইল ফোন জব্দ করে নেন আয়কর কর্মকর্তারা।

বিবিসি সূত্রে জানা গেছে, তল্লাশি চালানোর পর উভয় কার্যালয় সিলগালা করে দেওয়া হয়। বিবিসি দিল্লি ও মুম্বাই শাখার সংবাদকর্মীদেরকে আয়কর বিভাগের কর্মকর্তারা বলেন, বিবিসির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক কর ও তথ্য স্থানান্তর মূল্যে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে; এ কারণেই বিবিসি কার্যালয়ে এসেছে আয়কর দপ্তর। অভিযানের সময় সাংবাদিকরা যেন নিজেদের মধ্যে ফোনে যোগাযোগ না করেন, সেই নির্দেশও দেন তারা।

আয়কর দপ্তরের তল্লাশির পর বিবিসি দিল্লি ও মুম্বাই শাখার সাংবাদিকদের উদ্দেশে লিখিত বার্তা দিয়েছে বিবিসি লন্ডনের মূল কার্যালয়। সেই বার্তায় সংবাদকর্মীদের সরকারের সঙ্গে ঝামেলায় না জড়াতে এবং ভীত না হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বিবিসি বলেছে, ‘আমরা বিবিসি ইন্ডিয়ার দিল্লি ও মুম্বাইসহ অন্যান্য শাখার কার্যালয়ের কর্মীদের অনুরোধ করছি— আপনার আতঙ্কিত হবেন না এবং সরকারের সঙ্গে কোনো প্রকার ঝামেলায় জড়াবেন না। পুরো পরিস্থিতি আমরা সামাল দিচ্ছি।’

ভারতের আয়কর দপ্তর অবশ্য জানিয়েছে, এটি ছিল একটি রুটিন ‘নিরীক্ষা’ অভিযান নয়।

কর্মকর্তাদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে বলেন, ‘কিছু ব্যাপারে অস্পষ্টতা ছিল। সেসব দূর করতে নিরীক্ষার জন্য আমরা এখানে এসেছি। (বিবিসির) ব্যাংক হিসাব সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য আমরা খতিয়ে দেখব। এটা কোনো তল্লাশি নয়।’

২০০২ সালের বহুল আলোচিত গুজরাট দাঙ্গায় ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকা নিয়ে গত ১৭ জানুয়ারি ‘ইন্ডিয়া : দ্য মোদি কোয়েশ্চেন’ নামে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করে বিবিসি। তার এক সপ্তাহ পর, ২৪ জানুয়ারি প্রকাশ করা হয় সেই তথ্যচিত্রের দ্বিতীয় পর্ব।

ওই তথ্যচিত্র প্রকাশের পর ভারতে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়। চলমান এই বিতর্কের মাঝেই বিবিসির ভারতীয় দুই কার্যালয়ে অভিযান চালানো হলো।

গত ১৭ জানুয়ারি ‘ইন্ডিয়া : দ্য মোদি কোয়েশ্চেন’ নামের একটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছে বিবিসি২ টেলিভিশন চ্যানেল। তার এক সপ্তাহ পর, ২৪ জানুয়ারি প্রকাশ করা হয় সেই তথ্যচিত্রের দ্বিতীয় পর্ব।

তথ্যচিত্রটিতে প্রধানত দেখানো হয়েছে, কীভাবে ২০০২ সালে গুজরাটের দাঙ্গাকে ব্যবহার করে ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলেন। এমন অনেক কথাই অবশ্য ছবিটিতে বলা হয়েছে, যা নতুন নয়; কিন্তু যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত এক জায়গায় এনে বিবিসি একটি তত্ত্ব দাঁড় করিয়েছে। আর তত্ত্বটি হলো, গুজরাট দাঙ্গা মোদিকে প্রধানমন্ত্রী হতে সাহায্য করেছে।

এই প্রক্রিয়ায় কীভাবে তার দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ এবং হিন্দুত্ববাদী নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি ভারতের বিচারব্যবস্থা তাঁকে সাহায্য করেছে, তা ও দেখানো হয়েছে দুই খণ্ডের সেই তথ্যচিত্রে।

তথ্যচিত্রটি প্রকাশের পর থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের রাজনীতি। দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে সেটি প্রদর্শন করার সময় পুলিশি ধরপাকড় ও গ্রেপ্তারের ঘটনাও ঘটেছে।


সম্পর্কিত বিষয়:


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:




রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected]; [email protected]
সম্পাদক : লিটন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top